মার্চ ২৫, ২০২৩, ০৫:৪৮ পিএম
‘মোদী’ পদবি নিয়ে ‘আপত্তিকর’ মন্তব্য করায় ক্ষমা চাইবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন ভারতের কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। তিনি এ-ও দাবি করেছেন, দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তার জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে শঙ্কিত। তাঁর চোখে ভয়ের রেখা দেখা যাচ্ছে। শনিবার (২৫ মার্চ) মানহানির মামলায় কারাদণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার পর দিল্লিতে দলের প্রধান কার্যালয়ে প্রথম সংবাদ সম্মেলনে এসব মন্তব্য করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে রাহুল গান্ধী বলেন, আমার সংসদ সদস্যপদ বাতিলের মূল কারণ হলো, বিজেপি ও নরেন্দ্র মোদী আমার পরবর্তী ভাষণ নিয়ে শঙ্কিত। আমি মোদীর চোখে ভয় দেখেছি। আর এ কারণেই তারা আমাকে সংসদে কথা বলতে দিতে চায় না।
বিজেপির ক্ষমা চাইতে বলা নিয়ে রাহুল বলেন, আমি ‘সাভারকার’ নই, আমি ‘গান্ধী’। ক্ষমা আমি চাইবো না। এর পাশাপাশি তিনি দেশের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন বিষয়ে বাইরের অর্থাৎ বহির্শক্তিকে হস্তক্ষেপ করার সুযোগ করে দিতে চান— বিজেপির এমন দাবিকেও অস্বীকার করেন।
সংবাদ সম্মেলনে কংগ্রেসের এ শীর্ষ নেতা লন্ডনের ওই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ তোলা হয়েছে, সেসব নিয়ে কথা বলার সুযোগ করে দিতে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, বিজেপি নেতারা বলছেন, আমি ভারতবিরোধী শক্তিকে সাহায্য করছি। আমি স্পিকারকে বলেছিলাম, এ ধরনের অভিযোগের বিষয়ে আমাকে কথা বলার সুযোগ দেওয়া উচিত। কিন্তু তিনি আমাকে এর অনুমতি দেননি।
‘আমাকে কী দুশ্চিন্তাগ্রস্ত মনে হচ্ছে? মোটেই না, বরং আমি উদ্দীপ্ত। এখন আমার কাছে একটি পথই বাকি আছে, তা হলো সত্যের জন্য ও ভারতের গণতান্ত্রিক ভাবধারা রক্ষার লড়াই চালিয়ে যাওয়া। আমাকে সারাজীবনের জন্য অযোগ্য ঘোষণা করা হোক, আমৃত্যু কারাগারে আটকে রাখা হোক, আমি আমার যুদ্ধ চালিয়ে যাবো।
‘মোদী’ পদবি নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের কারণে বৃহস্পতিবার রাহুলকে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে গুজরাটের সুরাট জেলা আদালত। তারই ভিত্তিতে ভারতীয় সংবিধানের ১০২(১)-ই অনুচ্ছেদ ও জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের (১৯৫১) ৮ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী শুক্রবার রাহুলের সংসদ সদস্যপদ খারিজ করেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে কর্নাটকে প্রচারে গিয়ে রাহুল প্রশ্ন তুলেছিলেন, ‘সব চোরেদের পদবি ‘মোদী’ হয় কেন?’ আইপিএল কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত ললিত মোদী, ব্যাঙ্ক-ঋণ মামলায় ‘পলাতক’ নীরব মোদীর সাথে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর তুলনা টেনেছিলেন তিনি।
ওই ঘটনায় রাহুলের বিরুদ্ধে ‘পদবি অবমাননার’ অভিযোগে মানহানির মামলা করেছিলেন গুজরাটের বিজেপি নেতা পূর্ণেশ মোদী। সেই মামলাতেই দোষী সাব্যস্ত হন রাহুল।