জুন ১৪, ২০২৫, ০২:৪৯ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ–লাগোয়া পশ্চিম আসামের ধুবড়ি জেলায় ‘দুষ্কৃতকারীদের’ দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। তিনি বলেছেন, ধুবড়ি জেলায় রাতে দেখামাত্র গুলি করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যারাই পাথর ছুড়বে, তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালানো হবে।
ধুবড়ি জেলায় একটি হনুমান মন্দিরের কাছে গত রোববার প্রাণীর দেহাবশেষ পাওয়া গিয়েছিল। এ নিয়ে সেখানে বেশ উত্তেজনা দেখা দেয়। জনতা ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় শুক্রবার পর্যন্ত পুলিশ ২২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
পরিস্থিতি দেখতে গতকাল শুক্রবার ধুবড়ি জেলায় যান মুখ্যমন্ত্রী বিশ্বশর্মা।
এর আগে আসামের মুখ্যমন্ত্রী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছিলেন, ‘ধুবড়িতে একটি বিশেষ গোষ্ঠী মন্দিরের ক্ষতি করতে চাইছে। সেই লক্ষ্যে তারা সক্রিয় হয়ে উঠেছে।’
শুক্রবার ধুবড়ি সফর শেষে মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, তিনি আসামের রাজধানী গৌহাটিতে পৌঁছে দুষ্কৃতকারীদের দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দেবেন।
মন্দিরে মাংস রাখার ঘটনাকে ‘বিদেশি চক্রের ষড়যন্ত্র’ বলে উল্লেখ করে বিশ্বশর্মা দাবি করেন, ঈদের আগের দিন, ‘নবীন বাংলা’ নামে একটি দল ধুবড়িকে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানিয়ে পোস্টার লাগিয়েছে। একটি সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী ধুবড়িতে অশান্তি সৃষ্টি করতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে।
বিজেপিদলীয় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জেলায় র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স ও আধা–সামরিক বাহিনী মোতায়েনের ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং যেসব অপরাধীর নামে জামিন অযোগ্য পরোয়ানা রয়েছে, তাদের গ্রেপ্তার করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
হিন্দুত্ববাদী আসামের মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন, শুধু বাংলাদেশ নয়, পশ্চিমবঙ্গের চক্রও আসামে সক্রিয় হয়েছে। তিনি বলেন, ‘বকরি ঈদের সময় কিছু লোক গরুর মাংস খায়। এবার পশ্চিমবঙ্গ থেকে হাজার হাজার গবাদিপশু আনা হয়েছে। ধুবড়িতে একটি “গরুর মাফিয়া চক্র” গড়ে উঠেছে। এরা উৎসবের ঠিক আগে হাজার হাজার পশু সংগ্রহ করেছে।’
কথিত এই চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন বিশ্বশর্মা।
এই হিন্দুত্ববাদী মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী বছর ঈদের দিন আমি ধুবড়ি আসব ও পরদিনও থাকব। আমরা সম্প্রদায়ের একটি অংশকে এ ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার অনুমতি দিতে পারি না।’
আসামের বিধানসভা নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে। নির্বাচনের বাকি ৯ থেকে ১০ মাস। আসামে নির্বাচনের আগে বিষয়টিকে একটি ইস্যু হিসেবে দেখছে সব পক্ষই।
কিছু বিরোধী রাজনৈতিক নেতা অভিযোগ করেছেন, বিজেপি নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে প্রায় এক বছর আগে থেকে নির্দিষ্টভাবে ধর্মীয় মেরুকরণের লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছে।