ডিসেম্বর ১২, ২০২৪, ১২:৫৮ পিএম
বিশ্বব্যাপী সাংবাদিকদের অধিকার নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংগঠন রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারসের (আরএসএফ) প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৪ সালে সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক অবস্থানের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়। এ তালিকায় সবার উপরে রয়েছে ফিলিস্তিনের নাম। দ্বিতীয় অবস্থানে পাকিস্তান। এরপর যৌথভাবে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ ও মেক্সিকোর নাম।
প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৪ সালে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় প্রাণ হারিয়েছেন ৫৪ জন সাংবাদিক। তাদের মধ্যে পাঁচ জনই বাংলাদেশে নিহত হয়েছেন। পাকিস্তানে নিহত হয়েছেন সাত সাংবাদিক। বাংলাদেশ ও মেক্সিকো উভয় দেশে পাঁচজন করে সাংবাদিক নিহত হন।
২০২৩ সালে একই প্রতিবেদনে (জানুয়ারি-ডিসেম্বর) উল্লেখিত নিহতের সংখ্যা ছিল ৪৫।
বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারসের (আরএসএফ) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়।
৫৫ জন সাংবাদিক এ মুহূর্তে জিম্মি অবস্থায় আছেন। জিম্মিদের মধ্যে ২৫ জনই ইসলামিক স্টেটের (আইএস) হাতে আটক রয়েছেন। পাশাপাশি ২০২৪ সালে ৯৫ জন সাংবাদিক নিখোঁজ হয়েছেন। নতুন করে এই তালিকায় এ বছর চার জন অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
নজিরবিহীন রক্তস্নান
আরএসএফের এই বার্ষিক প্রতিবেদনে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত হালনাগাদ তথ্য যুক্ত করা হয়। এতে মন্তব্য করা হয়েছে, `ফিলিস্তিন এখন সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক দেশ। গত পাঁচ বছরে অন্য যেকোনো দেশের চেয়ে এ বছর ফিলিস্তিনে নিহত সাংবাদিকের সংখ্যা বেশি।`
নিহতদের এক তৃতীয়াংশই ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হাতে নিহত হয়েছেন।
আরএসএফের এই বার্ষিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, এ বছর ১৮ জন সাংবাদিকের প্রাণহানির সঙ্গে ইসরায়েলের সরাসরি সংযোগ রয়েছে। তাদের মধ্যে ১৬ জন গাজায় ও দুই জন লেবাননে নিহত হন।
ইতোমধ্যে এই অলাভজনক প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) `সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের` দায়ে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে চারটি অভিযোগ জমা দিয়েছে।
সংগঠনটি জানায় ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজার সংঘাত শুরুর পর ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হাতে ১৪৫ জনেরও বেশি সাংবাদিক প্রাণ হারিয়েছেন। তাদের মধ্যে ৩৫ জন সংবাদ সংগ্রহের সময় নিহত হন।
প্রতিবেদনে এই হত্যাযজ্ঞকে `নজিরবিহীন রক্তস্নান` হিসেবে অভিহিত করা হয়।
ইসরায়েলের `অস্বীকার`
১০ ডিসেম্বর ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব জার্নালিস্ট (আইএফজে) পৃথক এক প্রতিবেদনে জানায় ২০২৪ সালে বিশ্বজুড়ে ১০৪ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন, যাদের অর্ধেকের বেশি গাজায় প্রাণ হারান।
আইএফজে ও আরএসএফের তথ্য সংগ্রহ প্রক্রিয়া ভিন্ন থাকায় নিহতের সংখ্যায় তারতম্য দেখা দিয়েছে।
ইসরায়েল জ্ঞাতসারে সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালানোর বিষয়টি অস্বীকার করে। তবে তারা স্বীকার করেছে, সামরিক লক্ষ্যবস্তুর ওপর বিমানহামলা চালানোর সময় কয়েকজন সাংবাদিক নিহত হয়ে থাকতে পারে।
১১ ডিসেম্বর ইসরায়েল সরকারের মুখপাত্র ডেভিড মারসার সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্যের সত্যতা অস্বীকার করেন।