ইরানের হুঁশিয়ারি

‘জুয়াড়ি’ ট্রাম্প যুদ্ধ শুরু করেছে, শেষ করব আমরা

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

জুন ২৩, ২০২৫, ০৫:০৮ পিএম

‘জুয়াড়ি’ ট্রাম্প যুদ্ধ শুরু করেছে, শেষ করব আমরা

ছবি: সংগৃহীত

ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে আমেরিকাকে জড়ানোর কারণে দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ‘জুয়াড়ি’ বলে অভিহিত করেছে ইরান।

সোমবার, ২৩ জুন ইরানের পক্ষ থেকে এই মন্তব্য আসে। এ ছাড়া ইরানের পরমাণু কর্মসূচিতে মার্কিন হামলা দেশটির সেনাদের ওপর পাল্টা হামলার আশঙ্কা তৈরি করেছে বলে জানিয়েছে তেহরান।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ কেন্দ্রে মার্কিন হামলার পর থেকেই পাল্টা হামলার হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছে তেহরান। তবে এখন পর্যন্ত কোনো হামলার তথ্য পাওয়া যায়নি। এই হামলার জবাবে ইসরায়েলেই পাল্টা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইরান। এবার তারা মধ্যপ্রাচ্যের কোনো মার্কিন ঘাঁটি কিংবা উপসাগরীয় এলাকায় ট্যাঙ্কারে হামলা চালাতে পারে।

পাল্টা হামলার ব্যাপারে ইরানের খাতাম আল-আনবিয়া কেন্দ্রীয় সামরিক বাহিনীর সদর দপ্তরের মুখপাত্র এব্রাহিম জুলফাকারি বলছেন, ‘জুয়াড়ি ডোনাল্ড ট্রাম্প, আপনি যুদ্ধ শুরু করেছেন। কিন্তু এই যুদ্ধ আমরা শেষ করব।’

এদিকে আজ সোমবার ইসরায়েলে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান।

ট্রাম্প প্রশাসন বারবার বলে আসছে, তারা চাইছে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি ধ্বংস করে দিতে, বড় পরিসরে যুদ্ধ করতে নয়। তবে গতকাল রোববার সামাজিক মাধ্যমে এক পোস্টে তিনি সরাসরি ইরানের সরকার পরিবর্তনের কথা বলেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রাম্প লেখেন, ‘শাসন পরিবর্তন শব্দটি এখন আর রাজনৈতিকভাবে সঠিক নয়, কিন্তু যদি বর্তমান ইরানি শাসন ইরানকে মহান করতে না পারে, তাহলে শাসন পরিবর্তন কেন হবে না??? এমআইজিএ!!!’

তার বক্তব্যে উঠে এসেছে ‘এমআইজিএ’ অর্থাৎ মেক ইরান গ্রেট এগেইন। এটি ট্রাম্পের রাজনৈতিক মন্ত্র এমএজিএ-র অর্থাৎ মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইনের প্রতিরূপ। ১৯৭৯ সালের পর থেকেই এই শাসকদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে মার্কিন প্রশাসন। ট্রাম্প সেই দিকেই ইঙ্গিত করলেন।

এর একদিন আগে মার্কিন বাহিনী ৩০,০০০ পাউন্ড ওজনের বাংকার-বাস্টার বোমা ফেলে ইরানের ফোর্দো পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর ব্যাপক আঘাত হানে। এ হামলার জবাবে তেহরান ঘোষণা করে, তারা যেকোনো মূল্যে আত্মরক্ষা করবে। এরপর ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চলতে থাকে। ইরানে একটি বিস্ফোরণে ছয় সামরিক কর্মকর্তা নিহত হয়, আর তেল আবিবে ইরানি হামলায় বহু মানুষ আহত হয় এবং ভবন ধ্বংস হয়।

এদিকে মার্কিন প্রশাসন তাদের কূটনীতিকদের পরিবারকে লেবানন ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে এবং মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য অংশে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে।

ট্রাম্প টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে হামলাকে সেনাবাহিনীর বিশাল সাফল্য হিসেবে উল্লেখ করেন এবং দাবি করেন, ইরানের পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রগুলো সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করা হয়েছে। তবে মার্কিন প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তা কিছুটা সংযত ভাষায় প্রতিক্রিয়া জানায়।

জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষক সংস্থা আইএইএ জানায়, হামলার পর কোনো তেজস্ক্রিয়তা ছড়ায়নি।

এদিকে ইরানের পার্লামেন্ট হরমুজ প্রণালী বন্ধের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। এই প্রণালী দিয়েই বিশ্বব্যাপী প্রায় এক-চতুর্থাংশ তেল সরবরাহ হয়। এটি বন্ধ হলে বিশ্ববাজারে তেলের মূল্যবৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক অস্থিরতা দেখা দিতে পারে।

Link copied!