ব্যাপক বোমাবর্ষণের কারণে গাজা উপত্যকা এখন ‘শিশুদের কবরস্থান’এ পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। এমন পরিস্থিতির কারণে তিনি ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান তিনি।
সোমবার এএফপির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।
নিউইউর্কে জাতিসংঘ সদরদপ্তরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এমন বিপর্যস্ত পরিস্থিতির কারণে প্রতি ঘণ্টায় মানবিক যুদ্ধবিরতির প্রয়োজনীয়তা আরও জরুরি হয়ে পড়েছে।’
তিনি বলেন, ‘গাজার দুঃস্বপ্ন একটি মানবিক সংকটের চেয়েও বেশি। এটি একটি মানবতার সংকট। সংঘাতে জড়িত পক্ষগুলোর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মহলকে এই অমানবিক ভোগান্তি বন্ধ করতে এবং গাজায় দ্রুত মানবিক সহায়তা বাড়াতে হবে।’
গাজায় আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন হচ্ছে দাবি করে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে এখনি মানবিক যুদ্ধবিরতি পালন করা জরুরি। এক্ষেত্রে সকল পক্ষের আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
গুতেরেস বলেন, বিদ্যুৎ ও অক্সিজেন সরবরাহ ছাড়া ইনকিউবেটরে থাকা শিশু এবং লাইফ সাপোর্টে থাকা রোগীরা মারা যাচ্ছে। গাজায় এখন এমন ঘটনাই ঘটছে।
গণমাধ্যম কর্মীদের হত্যার জন্য গুতেরেস দুঃখ প্রকাশ করেছেন। সাংবাদিকদের সুরক্ষার দেওয়ার বিষয়ে গঠিত নিউইয়র্ক ভিত্তিক ‘কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্ট’র (সিপিজে) মতে, ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে লড়াইয়ে কমপক্ষে ৩৬ জন সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মী নিহত হয়েছে।
গাজায় হামাসের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, হামাসের হামলার প্রতিশোধ নিতে গাজায় ইসরায়েলের হামলায় ১০,২০০ ফিলিস্তিনি নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন। এদের প্রায় অর্ধেক নারী ও শিশু। সেখানে ইসরাইয়েলি বাহিনীর হামলায় হাজার হাজার ভবন ধসে পড়েছে এবং ১৫ লাখের বেশি লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের দেওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলে একটি সঙ্গীতানুষ্ঠান এবং বিভিন্ন ঘরবাড়িতে চালানো হামাসের ভয়াবহ হামলায় কমপক্ষে ১৪শ’ নিহত হয়েছে। হামাসের হামলায় নিহতদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক। হামাসের হামলার প্রথম দিনে তাদের নির্বিচারে গুলি করে ও পুড়িয়ে মারার এবং ২৩০ জনেরও বেশি লোককে জিম্মি করার পর ইসরায়েল গাজা অবরোধ করে এবং সেখানে ব্যাপক বোমা হামলা চালায়।