ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মামলা

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

এপ্রিল ২২, ২০২৫, ১২:৩৪ পিএম

ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মামলা

ছবি: সংগৃহীত

ট্রাম্প প্রশাসনের দুই শতাধিক কোটি ডলারের বরাদ্দ কাটছাঁট প্রস্তাবের বিরুদ্ধে মামলা করেছে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়।

বিবিসি লিখেছে, অভিজাত এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ‘ইহুদি বিদ্বেষের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে’ দাবি সংবলিত একটি তালিকা পাঠায় ট্রাম্প প্রশাসন।

গত সপ্তাহে হার্ভার্ড তা প্রত্যাখ্যান করলে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রম্প ২২০ কোটি ডলারের ফেডারেল তহবিল আটকে দেওয়ার ঘোষণা দেন। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়টির কর-ছাড় সুবিধা বাতিলের হুমকি দেওয়া হয়। তার পাল্টায় ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে সোমবার মামলা করেছে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়।

হার্ভার্ডের প্রেসিডেন্ট অ্যালান এম গার্বার সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়কে লেখা এক চিঠিতে বলেছেন, “সরকারের বাড়াবাড়ির পরিণতি হবে মারাত্মক ও দীর্ঘস্থায়ী।”

এ বিষয়ে সোমবার রাতে হোয়াইট হাউসের তরফে এক বিবৃতিতে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।

হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র হ্যারিসন ফিল্ডস বলেন, “হার্ভার্ডের মত প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ফেডারেল সহায়তার অনুদান- সংগ্রামী আমেরিকান পরিবারগুলোর ট্যাক্সের ডলার দিয়ে তাদের (হার্ভাডের) অতিরিক্ত বেতনভোগী আমলাদের সমৃদ্ধ করার দিন শেষের পথে। করদাতাদের তহবিল একটি বিশেষ সুবিধা এবং হার্ভার্ড সেই সুবিধা পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় মৌলিক শর্তগুলো পূরণে ব্যর্থ হয়েছে।”

হার্ভার্ড প্রেসিডেন্ট গার্বার বলেন, তহবিল স্থগিতের ফলে শিশু ক্যান্সার, আলঝেইমার, পারকিনসনস রোগ সম্পর্কিত গবেষণাসহ গুরুত্বপূর্ণ গবেষণাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

মামলায় বলা হয়েছে, “সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে সরকার এমন সব গুরুত্বপূর্ণ তহবিলের ওপর আক্রমণ করেছে, যেগুলো দিয়ে অমূল্য গবেষণা সম্ভব হয়।

“এই মামলায় হার্ভার্ডে একাডেমিক সিদ্ধান্তের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য সরকারের তহবিল আটকানোর বিষয় জড়িত।”

তহবিল আটকানোর পাশাপাশি ট্রাম্প প্রশাসন কয়েকদিন আগে হার্ভার্ডের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষমতাও কমানোর হুমকি দিয়েছিল।

ইহুদি গার্বার মানছেন যে, হার্ভার্ড ক্যাম্পাসে ইহুদি বিদ্বেষের সমস্যা রয়েছে। তার ভাষ্য, এই সমস্যা নিয়ে কাজ করতে তিনি একাধিক টাস্কফোর্স গঠন করেছেন। ইহুদি বিদ্বেষ ও মুসলিম বিদ্বেষের ওপর নজর রাখা দুটি টাস্কফোর্সের প্রতিবেদন প্রকাশ করবে বিশ্ববিদ্যালয়।

নতুন বৈজ্ঞানিক সাফল্যের অর্থায়নে ম্যাসাচুসেটসে অবস্থিত প্রখ্যাত মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এ প্রতিষ্ঠানটির ওপরই কেবল ফেডারেল ডলার আটকানোর খড়্গ পড়েনি।

কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০০ কোটি ডলার, ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫১ কোটি ডলার আটকানোসহ অন্যান্য বেসরকারি আইভি লিগ প্রতিষ্ঠানকে নিশানা করেছে প্রশাসন।

গত বছর ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভের প্রাণকেন্দ্র কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মত অন্যরা ৪০ কোটি ডলারের ফেডারেল তহবিল আটকানোর হুমকির মুখে কিছু দাবি মেনে নিয়েছে।

হার্ভার্ডের কাছে প্রশাসন যেসব দাবি জানিয়েছিল, তার মধ্যে রয়েছে- বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রম দেখভালে সরকার অনুমোদিত বহিরাগত নিরীক্ষককে দায়িত্ব দেওয়া এবং নিয়োগ ও ভর্তির তথ্যের মতো বিষয়। এসব দাবি প্রত্যাখ্যান করে হার্ভার্ড একটি জ্বালাময়ী চিঠি প্রকাশ করে।

হার্ভার্ডের আইনজীবীরা ১৪ এপ্রিল প্রশাসনকে সাফ জানিয়ে দেয়, “বিশ্ববিদ্যালয় তার স্বাধীনতা বিসর্জন দেবে না বা সাংবিধানিক অধিকার ত্যাগ করবে না।

“হার্ভার্ড বা অন্য কোনো প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ফেডারেল সরকারের নিয়ন্ত্রণে যেতে পারে না। তাই হার্ভার্ড নীতিগতভাবে সরকারের শর্ত মেনে নেবে না।”

হার্ভার্ডের প্রাক্তনী সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেছেন, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির অবস্থানকে সমর্থন করেন।

Link copied!