কানাডার মাটিতে ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশে খালিস্তান নামে স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনে আন্দোলনকারী শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জারের হত্যাকাণ্ডের কারনে ভারত সরকার কানাডার নাগরিকদের জন্য ই-ভিসা সেবা দেওয়া বন্ধ করে দেয়। এই সেবা ভারত প্রায় দুই মাস পর ফের চালু করছে ।
বিষয়টির সাথে পরিচিত ভারত সরকারের এক কর্মকর্তা বুধবার ( ২২ নভেম্বর ) দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে এ তথ্য জানিয়েছে।
কানাডীয়দের জন্য ই-ভিসা সেবা ফের চালুর ব্যাপারে জানালেও ঠিক কবে নাগাদ এই সেবা চালু হতে পারে সেই বিষয়ে কোনো তথ্য দেয়নি। এনডিটিভির প্রতিবেদনেও এই বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি।
কানাডার অভিযোগ, খালিস্তান আন্দোলনের নেতা হরদীপ সিং নিজ্জার হত্যাকাণ্ডে ভারত সরকারের হাত রয়েছে এবং ভারতের গোয়েন্দা এজেন্টরাই হরদীপকে হত্যা করেছে। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক তলানিতে নেমে আসে।
গত ২১ সেপ্টেম্বর ভারত সরকার কানাডীয়দের জন্য ই-ভিসা সেবা বাতিল করে। অবশেষে এই সেবা চালুর মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যকার জমাট সম্পর্কের বরফ আবারও গলতে শুরু করল।
এর আগে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি কানাডা সরকার জানায়, গত জুনে কানাডার একটি শিখ মন্দিরের সামনে খালিস্তান আন্দোলনের নেতা হরদীপ সিং নিজ্জার (৪৫) হত্যার পেছনে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন জড়িত এবং এ বিষয়ে তাদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ রয়েছে। ভারত এই দাবি অস্বীকার করেছে।
অভিযোগের সূত্র ধরে দুই দেশের সম্পর্ক এতটাই নিচে নামে যে, ভারত থেকে কানাডার বিপুল পরিমাণ দূতাবাসকর্মীকে ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হয়। অক্টোবরের শুরুর দিকে কানাডার ৪১ জন কূটনীতিককে ফিরিয়ে নিতে বলে ভারত।
ভারত জানায়, আগামী ১০ অক্টোবরের মধ্যে কূটনীতিকদের অবশ্যই ফিরিয়ে নিতে হবে। ফিরিয়ে না নিলে তাঁদের কূটনৈতিক অনাক্রম্যতা (ডিপ্লোম্যাটিক ইমিউনিটি) বাতিল করা হবে বলেও হুমকি দেয় দিল্লি।
কানাডার মোট জনসংখ্যার ৫ শতাংশ অর্থাৎ, প্রায় ২০ লাখ কানাডীয় নানাভাবে ভারতের সাথে যুক্ত। পাশাপাশি, কানাডায় অধ্যয়নরত আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে বড় উৎসই হলো ভারত। এই শিক্ষার্থীদের প্রায় ৪০ শতাংশই ভারতীয়।
এ বিষয়ে ট্রুডো বলেছিলেন যে, ভারত থেকে কয়েকজন কূটনীতিক প্রত্যাহার কানাডায় অধ্যয়নরত ভারতীয়দের জন্য অসুবিধার সৃষ্টি করবে। এ ছাড়া, ভ্রমণ এবং বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও তারা জটিলতার সম্মুখীন হতে পারে।