ওমিক্রন থেকে সুরক্ষায় বুস্টার ডোজ ৮০ শতাংশ কার্যকর: গবেষণা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ডিসেম্বর ১৮, ২০২১, ০৩:৩৩ পিএম

ওমিক্রন থেকে সুরক্ষায় বুস্টার ডোজ ৮০ শতাংশ কার্যকর: গবেষণা

দক্ষিণ আফ্রিকায় করোনাভাইরাসের প্রথম ধরন ওমিক্রন শনাক্ত হওয়ার পর এই ভাইরাসটি বিশ্বের অর্ধশতাধিক দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। করোনাভাইরাসের নতুন এই ধরন মোকাবিলায় কার্যকর পদ্ধতি গ্রহণে বেশ কয়েকটি দেশের বিজ্ঞানীরা গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের একদল গবেষক দাবি করেছেন, ওমিক্রনে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত প্রথম রোগীর ক্ষেত্রে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকার তৃতীয় ধাপ বা বুষ্টার ডোজ ৮৫ শতাংশের মতো সুরক্ষা দিতে পারে। ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে এমনটি জানানো হয়েছে।

যুক্তরাজ্যের ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের একদল গবেষক ওমিক্রন নিয়ে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এ কথা জানিয়েছেন বলে ওই প্রতিবেদনে জানানো হয়। বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) পর্যন্ত  যুক্তরাজ্যে আট লাখ ৬১ হাজার ৩০৬ জনকে বুস্টার ডোজ অথবা তৃতীয় ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে।

তবে গবেষকেরা এও বলছেন—দ্রুত ছড়িয়ে পড়া নতুন ধরন সম্পর্কে আরও বাস্তবতানির্ভর তথ্য পাওয়া পর্যন্ত এর কার্যকারিতা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। এর পাশপাশি হালকা ও তীব্র পর্যায়ের ওমিক্রন আক্রান্তের বেলায় কী কী ঘটে, তা খতিয়ে দেখছেন বিশেষজ্ঞেরা। 

গবেষকদের দাবি, এ সুরক্ষার মাত্রা আগের ভ্যারিয়্যান্টগুলোর চেয়ে কিছুটা কম। কিন্তু বুস্টার ডোজ প্রয়োগের মাধ্যমে বহু মানুষকে হাসপাতালে যাওয়া থেকে বিরত রাখা যাবে।

করোনার বিরুদ্ধে কীভাবে কাজ করতে হয়, তাতে সহায়তা করে টিকা। কিন্তু বর্তমানে যে টিকা দেওয়া হচ্ছে, সেগুলোর ওমিক্রন ভ্যারিয়্যান্টের সাপেক্ষে নকশা করা হয়নি।

বিবিসির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বুষ্টার ডোজ ওমিক্রন ভাইরাসের সঙ্গে যুক্ত হয়ে তাকে শরীরের কোষে ছড়িয়ে পড়তে বাধা দেয় অ্যান্টিবডি। গবেষণায় দেখা গেছে, দুই ডোজ টিকাপ্রাপ্ত লোকজনের শরীরে ভাইরাসের বিরুদ্ধে এই অ্যান্টিবডির কার্যক্ষমতা ২০ থেকে ৪০ গুণ কম হয়।

ইম্পেরিয়ালের প্রাথমিক গবেষণায় দেখা গেছে, ওমিক্রনের বিরুদ্ধে টিকার কার্যকারিতা কম হয়ে যাবে। এমনকি, বুস্টার ডোজ দেওয়া থাকলেও ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়ে মারাত্মক অসুস্থদের ক্ষেত্রে সুরক্ষা ৮০ থেকে ৮৫ দশমিক ৯ শতাংশ হতে পারে।

অন্যদিকে, ডেলটা ভ্যারিয়্যান্টে আক্রান্ত হয়ে একই অবস্থা হলে তাদের বেলায় বুস্টার ডোজ দেওয়া থাকলে ৯৭ শতাংশ সুরক্ষা মেলে।

অধ্যাপক আজরা ঘানি নামে ইম্পেরিয়ালের গবেষকদের একজন বলেন, “আগের ধরনে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থতার তুলনায় এবারের ওমিক্রনে আক্রান্ত হলে ঠিক কী অবস্থা হয়। এ সম্পর্কে নিশ্চিত জানতে বিজ্ঞানীদের আরও কয়েক সপ্তাহ লেগে যেতে পারে।”

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের গত ২৪ নভেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথমবারের মতো ওমিক্রনে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। ওমিক্রন শনাক্ত হওয়ার পর বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। নতুন এই ভ্যারিয়েন্ট শনাক্তের পর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ দক্ষিণ আফ্রিকা অঞ্চলের দেশগুলোর ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।তারপরও বিভিনন্ন দেশে এখনও ছড়িয়ে পড়ছে ওমিক্রন।

Link copied!