টিকা দুর্নীতি নিয়ে চাপে পড়েছে বোলসোনারো

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

জুন ৩০, ২০২১, ০৪:৫২ পিএম

টিকা দুর্নীতি  নিয়ে চাপে পড়েছে বোলসোনারো

করোনা মহামারিকে হালকা ভাবে নেওয়ার জন্য সমালোচিত হওয়ার পর এবার  টিকা দুর্নীতি সামনে আসায় চাপ বেড়েছে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জেইর বোলসোনারোর ওপর। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, টিকা কেনা নিয়ে কোটি কোটি টাকা দুর্নীতির ব্যাপারে জানতেন বোলসোনারো।

বুধবার (৩০ জুন) এবং শনিবার (৩ জুন) বোলসোনারো-বিরোধী বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন বিরোধীরা। প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ আনা হবে কি না, তা নিয়ে ভোটাভুটি চালাবে সেনেট কমিশন।

বোলসোনারো যদিও জানান, দুর্নীতি হয়ে থাকলে তার সরকার যোগ্য ব্যবস্থা নেবে।

মহামারি মোকাবিলায় ব্রাজিল সরকারের পদক্ষেপগুলির কার্যকারিতা খতিয়ে দেখতে সেনেটের একটি কমিটিও গড়া হয়েছে। সেই কমিটির সামনে ব্রাজিলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের চিকিৎসা সরঞ্জাম আমদানি দফতরের প্রধান লুই রিকার্ডো মিরান্ডার জানান, ৮ মার্চ সিঙ্গাপুরের এক সংস্থার পক্ষে ভারতীয় সংস্থা ‘ভারত বায়োটেক’-এর তৈরি করোনা টিকা ‘কোভ্যাক্সিনে’র দাম হিসেবে বিরাট অঙ্কের টাকা মেটানোর জন্য একটি বিল এসে পৌঁছায় তার টেবিলে। করোনা বিধি লঙ্ঘনের জন্য নিয়মিত শিরোনামে আসা বোলসোনারো যে আদৌ কোভ্যাক্সিন কিনতে উদ্যোগী হবেন, এটাই তিনি ভাবতে পারছিলেন না। কারণ, কোভ্যাক্সিনের থেকে কম দামের টিকার প্রস্তাবও ফিরিয়ে দিয়েছে তার সরকার।

রিকার্ডোর সবচেয়ে বড় খটকা লাগে এই দেখে যে, ব্রাজিলের সঙ্গে ৩০ কোটি ডলারের কোভ্যাক্সিন চুক্তির কথা লেখা থাকলেও, কোন সংস্থার পক্ষ থেকে তা পাঠানো হয়েছে, তার উল্লেখই ছিল না ওই চালানটিতে! তা ছাড়া, যে কোভ্যাক্সিনের দাম চেয়ে এই চিঠি পাঠানো হয়েছে, তা আদৌ ব্রাজিলে এসে পৌঁছোয়নি! এমনকি প্রতিষেধকটির কাছে দেশের সংশ্লিষ্ট নিয়ামক সংস্থার ছাড়পত্রও নেই বলে জানান তিনি।

রিকার্ডোর দাবি, তা সত্ত্বেও ওই বিলটি পাস করিয়ে দেওয়ার জন্য চাপ বাড়িয়ে তার কাছে যখন তখন ফোন আসতে শুরু করে। আর ফোনগুলি আসছিল তার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে। তবে এর পরে একাধিক গরমিল ধরা পড়ায় শেষমেশ বাতিল বলে ঘোষণা করা হয় সংশ্লিষ্ট চুক্তিটি। শুরু হয় তদন্ত।

বিষয়টি নিয়ে রিকার্ডো তার ভাই তথা কংগ্রেসের সদস্য লুই মিরান্ডার সঙ্গে কথা বলেন। মিরান্ডা ভাইদের দাবি, ২০ মার্চ চুক্তিটির অসঙ্গতি নিয়ে বোলসোনারোর দ্বারস্থ হন তাঁরা। প্রেসিডেন্ট উল্টে তাঁদের কয়েক জন প্রভাবশালী কংগ্রেস সদস্যের কথা উল্লেখ করে তা ‘চুপচাপ’ পাস করে দেওয়ার হুমকি দেন। এই প্রভাবশালী সদস্যটি হলেন, নিম্নকক্ষে বোলসোনারোর সহযোগী রিকার্ডো ব্যারস। তাঁকেই এই পরিকল্পনার ‘মাথা’ বলে মনে করা হচ্ছে। বোলসোনারো এবং ব্যারস অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা দায় চাপিয়েছেন মিরান্ডা ভাইদের উপরেই। দু’জনের দাবি, এ সব তাঁদের ভাবমূর্তিতে আঘাত করার চেষ্টা।

সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস।

Link copied!