তুরস্কে ভূমিকম্প: ৯ দিন পর ভবনের ধ্বংসস্তূপ থেকে তিনজনকে জীবিত উদ্ধার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৩, ০৯:৩১ পিএম

তুরস্কে ভূমিকম্প: ৯ দিন পর ভবনের ধ্বংসস্তূপ থেকে তিনজনকে জীবিত উদ্ধার

শক্তিশালী ভূমিকম্পে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে তুরস্ক ও সিরিয়ার বেশ কয়েকটি প্রদেশ। দেশ দুটিতে মৃত্যুসংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। পুরোদেমে চলছে উদ্ধার তৎপরতা। এরই মধ্যে তুরস্কে একের পর এক অলৌকিক ঘটনা ঘটে চলেছে।  

ভূমিকম্পের প্রায় ১৯৮ ঘণ্টা পর তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলের একটি ভবনের ধ্বংসস্তূপ থেকে মোহাম্মদ ক্যাফার নামে ১৮ বছর বয়সী তরুণসহ তিনজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে এ ঘটনা ঘটে। তুর্কি গণমাধ্যম  সিএনএন তুর্কের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।

ভিডিওতে দেখা যায়, তুরস্কের আদিমান প্রদেশে ভবনের ধ্বংসস্তূপ থেকে ক্যাফারকে জীবিত উদ্ধারের পর মুখে অক্সিজেন মাস্ক লাগিয়ে স্ট্রেচারে করে অ্যাম্বুলেন্সে তুলছেন উদ্ধারকর্মীরা। এ সময় ক্যাফারকে হাতের আঙুল নাড়াতে দেখা যায়।

এই ঘটনার কিছুক্ষণ আগে, আদিমান প্রদেশের পার্শ্ববর্তী কাহরামানমারাস প্রদেশের একটি আবাসিক ভবনের ধ্বংসাবশেষ থেকে দুই ভাইকে জীবিত বের করে আনেন উদ্ধারকর্মীরা।

তুরস্কের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আনাদোলুর প্রতিবেদনে বলা হয়, জীবিত ওই দুই হলেন ১৭ বছর বয়সী মুহাম্মদ এনেস ইয়েনিনার এবং তার ভাই ২১ বছর বয়সী বাকী ইয়েনিনার। উদ্ধারের পর দুজনকেই অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

বিবিসি’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তুরস্ক ও সিরিয়ায় মৃত্যুসংখ্যা দ্বিগুণ হতে পারে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ। সংস্থাটি বলেছে যে, ভূমিকম্পের পরে সিরিয়ায় ৫৩ লাখ মানুষ গৃহহীন হতে পারে। এখন তুরস্ক ও সিরিয়ায় প্রায় ৯ লাখ লোকের জরুরি খাদ্যের (গরম খাবারের) প্রয়োজন রয়েছে।

জাতিসংঘের সাথে সুর মিলিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা ডব্লিউএইচও’ও একই কথা বলছে। সংস্থাটির কর্মকর্তারা ধারণা করছেন,  নিহত মানুষের সংখ্যা আরও বাড়বে। তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনাবিষয়ক কর্তৃপক্ষ এএফইডি জানিয়েছে, ছয় হাজারের বেশি ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গাজিয়ানতেপ শহর। ভূমিকম্পের পরে ১৭০০ আফটারশক রেকর্ড করা হয়েছে।

এদিকে, সিরিয়ার সরকার তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকা ভূমিকম্প-বিধ্বস্ত এলাকায় মানবিক সহায়তা বিতরণের অনুমোদন দিয়েছে। এর আগে তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান বলেন, ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা দেশের ধ্বংসাত্মক ১৯৯৯ সালের ভূমিকম্পের সংখ্যাকে ছাড়িয়ে গেছে।

প্রসঙ্গত, গত ৬ ফেব্রুয়ারি ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে এই ৭.৮ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হানে। বেশিরভাগ মানুষ তখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। বহুতল ভবন ধসে পড়ে ঘুমন্ত মানুষের ওপর। মোমের মতো ধসে পড়ে একাধিক ভবন। ভয়াবহ এই ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ার বিস্তৃত এলাকা মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। মিসর, লেবানন ও সাইপ্রাস থেকেও কম্পন অনুভূত হয়েছে।

Link copied!