‘মোদী’ পদবি নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করায় মানহানির মামলা হয়েছিল ভারতের কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর নামে। সেই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে দুই বছরের কারাদণ্ড পাওয়ার পরদিন লোকসভায় গেলেন রাহুল।
শুক্রবার (২৪ মার্চ) সকালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য লোকসভায় গিয়েছিলেন।
কেরালার ওয়েনাড লোকসভা আসনের সদস্য রাহুল। তাঁকে গতকাল দোষী সাব্যস্ত করে দুই বছরের কারাদণ্ড দেন গুজরাটের সুরাটের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিজেএম) এইচ এইচ ভার্মা।
বিক্ষোভের মধ্যে লোকসভার অধিবেশন শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত মুলতবি করার পর রাহুল চলে যান।
দুই বছরের সাজা পাওয়ার পর রাহুলের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ভারতের সুপ্রিম কোর্টের রায় ও জনপ্রতিনিধিত্ব আইন অনুযায়ী রাহুলের লোকসভার সদস্যপদ খারিজ হবে কি না, তা নিয়ে দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে জোর আলোচনা।
দুই বছরের সাজার ওই রায় উচ্চ আদালতে স্থগিত বা বাতিল না হলে আগামী নির্বাচনেও অংশ নিতে পারবেন না কেরালার ওয়েনাদ থেকে নির্বাচিত এই এমপি।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে কর্ণাটকের কোলারে এক জনসভায় পলাতক ব্যবসায়ী নীরব মোদী ও ললিত মোদীর সাথে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পদবির মিল নিয়ে কটাক্ষ করেছিলেন ভারতীয় কংগ্রেসের এই জ্যেষ্ঠ নেতা; বলেছিলেন, “সব চোরের পদবি মোদী হয় কী করে?”
ওই মন্তব্যের জেরে বিজেপি বিধায়ক ও গুজরাটের সাবেক মন্ত্রী পুর্নেশ মোদী কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি রাহুলের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করে দেন। আর সেই মামলায় বৃহস্পতিবার রাহুল গান্ধীকে দোষী সাব্যস্ত করে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে গুজরাটের সুরাটের একটি আদালত।
সাজা হলেও রাহুল জামিন পেয়েছেন, তাকে আপিল করার সুযোগ দিতে ৩০ দিনের জন্য দণ্ড স্থগিত রাখা হয়েছে।
ক্ষমতাসীন বিজেপির দাবি, নিম্ন আদালত যেহেতু রাহুলকে দোষী সাব্যস্ত করে সাজা ঘোষণা করেছে, সেহেতু লোকসভায় তার সদস্য পদ সঙ্গে সঙ্গে খারিজ হয়ে যাবে।
অন্যদিকে কংগ্রেস সমর্থক আইনজীবীদের ভাষ্য, আদালত সাজা ঘোষণার পাশাপাশি আপিলের সুযোগ দিতে দণ্ড স্থগিতও রেখেছে। ফলে সাজা এখনই কার্যকর হচ্ছে না। ফলে উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত লোকসভায় রাহুলের পদ বাতিল হওয়ার কোনো কারণ নেই।
এদিকে সাজা ঘোষণার পর এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রাহুলের জামিন মঞ্জুর করেন একই আদালত। এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করার জন্য তাঁকে ৩০ দিনের সময় দেওয়া হয়েছে। এই সময় পর্যন্ত রায় স্থগিত থাকবে, আর রাহুলের জামিনে থাকবেন।
২০১৩ সালে এক মামলার রায়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট বলেছিলেন, কোনো মামলায় কোনো সংসদ সদস্য, বিধায়ক বা বিধান পরিষদের সদস্যের দুই বছর বা তার বেশি সাজা হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সদস্যপদ সঙ্গে সঙ্গে খারিজ হয়ে যাবে।
অন্যদিকে, জনপ্রতিনিধিত্ব আইন ১৯৫১-এর ৮ (৩) ধারা অনুসারে, যদি কোনো সংসদ সদস্য কোনো অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হন, আর কমপক্ষে দুই বছরের সাজাপ্রাপ্ত হন, তাহলে তাঁর পদ খারিজ হবে।