ওড়িশার বালেশ্বরের কাছে দুর্ঘটনায় পড়ে চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেস ট্রেনটির একাধিক কামরা লাইনচ্যুত হয়ে গিয়েছে। এতে ৭০ জনেরও বেশি প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানা গেছে। আহত হয়েছেন বহু যাত্রী। প্রায় ২০০ জনকে বালেশ্বরের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে রেল সূত্রে জানা যাচ্ছে।
শুক্রবার (২ জুন) এই দুর্ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, বিকেল ৩টা ১৫ মিনিটে শালিমার স্টেশন থেকে ছেড়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বালেশ্বরের কাছে বাহানগা বাজারে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ২৩ কামরার করমণ্ডল এক্সপ্রেস ট্রেনটি।
এই দুর্ঘটনায় তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, করমণ্ডল দুর্ঘটনায় বাংলার অনেকে জখম হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফ থেকে উদ্ধার কাজ চালাতে সেখানে একটি দল পাঠানো হচ্ছে।
দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ কর্মকর্তা আদিত্য চৌধুরী বলেন, ‘বালেশ্বরের কাছে করমণ্ডল এক্সপ্রেসে কিছু একটা হয়েছে। আমরা কোনোভাবে এখনো কিছু জানতে পারিনি। জানার চেষ্টা করছি। জানামাত্রই জানানো হবে।’’
সিগনালে ত্রুটি না কি চালকের ভুল— তা জানার চেষ্টাও চলছে বলে জানান আদিত্য চৌধুরী।
স্থানীয় সূত্রের খবর, করমণ্ডল এক্সপ্রেস ধাক্কা মারে একটি মালগাড়িতে। এত জোরে ধাক্কা লাগে যে ট্রেনের ইঞ্জিন মালগাড়ির ওপর উঠে যায়। এর ফলে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের প্রথম তিনটি কামরা বাদে সবকয়টি কামরা লাইন থেকে ছিটকে পড়ে।
এদিকে আশঙ্কা করা হচ্ছে অনেক বাংলাদেশি এই দুর্ঘটনার শিকার হতে পারেন। কেন না এই ট্রেনটিতে পশ্চিমবঙ্গের পাশাপশি বহু বাংলাদেশি নাগরিক দেশটির দক্ষিণে ভেলোরে চিকিৎসা নিতে নিয়মিত যাতায়াত করেন।
করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার পর যাত্রীদের বর্তমান অবস্থাসহ বিভিন্ন তথ্য জানতে হেল্পলাইন সার্ভিস চালু করেছে দেশটির রেল কর্তৃপক্ষ। হেল্পলাইনের নম্বর গুলো হলো- হাওড়া স্টেশনের জন্য হেল্পলাইন নম্বর ০৩৩-২৬৩৮২২১৭। খড়গপুর স্টেশন ৮৯৭২০৭৩৯২৫, ৯৩৩২৩৯২৩৩৯। বালেশ্বর স্টেশন ৮২৪৯৫৯১৫৫৯ এবং ৭৯৭৮৪১৮৩২২। শালিমার স্টেশনের জন্য হেল্পলাইন নম্বর ৯৯০৩৩৭০৭৪৬।
এই দুর্ঘটনার পর ৫টি ট্রেনের যাত্রা বাতিল করেছে দেশটির দক্ষিণ পূর্ব রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। যাত্রা বাতিল হওয়া ট্রেনগুলো হলো- পুরী এক্সপ্রেস, যশবন্তপুর এক্সপ্রেস, সাঁতরাগাছি পুরী স্পেশাল, শালিমার সম্বলপুর, চেন্নাই মেইল।