একদিকে মিয়ানমারের রাজনৈতিক সংকট অন্যদিকে করোনা মহামারির প্রভাবে আগামী ২০২২ সালের মধ্যেই দারিদ্র্যের ঝুঁকিতে আছে দেশটির প্রায় অর্ধেক মানুষ।
শুক্রবার (৩০ এপ্রিল) জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) এই সতর্কবার্তা দিয়েছে। এক প্রতিবেদনে সংস্থাটি বলেছে, দ্বৈত সংকট মিয়ানমারের লাখ লাখ মানুষকে দারিদ্র্যের মুখে ঠেলে দিতে পারে।
জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব এবং ইউএনডিপি’র এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসগরীয় অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক কানি উইগনারাজা বলেন, ‘মিয়ানমারে গণতান্ত্রিক উত্তরণের এক দশকে উন্নয়নে যতটুকু অগ্রগতি হয়েছে তা মাত্র কয়েকমাসেই ধসে পড়ছে। উন্নতিতে এই ধস দেশটিকে আবার ২০০৫ সালের অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পারে। ওই সময়ও দেশটি সামরিক শাসনাধীনে ছিল এবং এর জনসংখ্যার অর্ধকই ছিল গরিব।’
ইউএনডিপি’র প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গতবছরের শেষ নাগাদ করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে মিয়ানমারে গড়ে ৮৩ শতাংশ বাড়িতে পারিবারিক আয় প্রায় অর্ধেক কমে গেছে। এছাড়াও মহামারীর আর্থ-সামাজিক প্রভাবের কারণে দারিদ্রসীমার নিচে বাস করা মানুষের সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ১১ শতাংশ।
এরকম অবস্থায় মিয়ানমারে ১ ফেব্রুয়ারির সামরিক অভ্যুত্থানের পর অস্থিতিশীল পরিস্থিতি, হুমকির মুখে পড়া মানবাধিকার এবং উন্নয়নের প্রেক্ষাপটে দারিদ্র্যের হার আগামী বছর নাগাদ আরও ১২ শতাংশ বেড়ে যেতে পারে।
ইউএনডিপি প্রতিবেদন বলছে, দেশটির এই সংকটে সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী হওয়ার মুখে আছে নারী ও শিশুরা। “মিয়ানমারের শিশুদের অর্ধেকই এক বছরের মধ্যে দারিদ্যের কবলে পড়তে পারে” বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির আঞ্চলিক পরিচালক কানি উইগনারাজা।
তাছাড়া, দেশের অভ্যন্তরে বাস্তুচ্যুত হওয়া মানুষেরাও দারিদ্র্যের প্রবল ঝুঁকিতে আছে। আর শহর অঞ্চলে দারিদ্র্য বেড়ে যেতে পারে তিনগুন, বলা হয়েছে প্রতিবেদনে।
মিয়ানমারে অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে সরিয়ে দিয়ে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সেনাবাহিনী ক্ষমতায় আসার পর থেকেই চলছে লাগাতার প্রতিবাদ-বিক্ষোভ। এইসব বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে মারা গেছে ৭৫০ জনের বেশি মানুষ।
সূত্র: রয়টার্স ।