কোলেস্টেরল আমাদের দেহের একটি প্রয়োজনীয় উপাদান। এটি স্নায়ুতন্ত্র, হরমোন উৎপাদন, চর্বি ও নতুন কোষ গঠনে অংশগ্রহণ করে থাকে। তবে সমস্যা তখনই তীব্র হয় যখন প্রয়োজনের তুলনায় এটা রক্তে অতিরিক্ত হয়ে যায়।
কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে খাবারদাবার ও ওজন নিয়ন্ত্রণের পরামর্শ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা। এক্ষেত্রে সকালের নাস্তা খুবই জরুরি। বলা হয়, সকালের নাস্তা দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবার। কোন খাবারে সকাল শুরু করবেন তা জেনে নেওয়া যাক:
ওজন কমানোর আশায় খাবারের মধ্যে অনেকেরই পছন্দের তালিকায় শীর্ষে থাকে ওট্স। কারণ এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ফাইবার ও নানা ধরনের খনিজ উপাদান। সবচেয়ে বড় কথা হল, ওট্সে একেবারেই ক্যালোরি থাকে না। কর্মব্যস্ত জীবনে অনেকেই প্রাতরাশ না করে কাজে বেরিয়ে পড়েন। এই অভ্যাস কিন্তু মোটেই ভাল নয়। এর কারণে শরীরে হাজার রোগ বাসা বাঁধতে পারে। শুধু তা-ই নয়, ওজনও বেড়ে যেতে পারে অনেকটা। এ ক্ষেত্রেও ওট্সের মাধ্যমেই হতে পারে মুশকিল আসান। কেবল ওজন ঝরাতেই নয়, হৃদ্যন্ত্র ভাল রাখতেও ওট্স উপকারী। ভারতে দিন দিন হার্টের রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। ঘরে ঘরে উচ্চ রক্তচাপ ও কোলেস্টেলরের রোগীও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। এ ক্ষেত্রে পুষ্টিবিদরা ডায়েটে পানিতে ভেজানো ওট্স খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন।
পুষ্টিবিদরা রোজের ডায়েটে জলে ভেজানো ওট্স রাখার পরামর্শ দেন। রাতে শোয়ার আগে ওট্স ভিজিয়ে রাখুন। সকালে খালি পেটে পানীয়টি খেয়ে ফেলুন। এতেই দূরে থাকবে একাধিক রোগবালাই।
এই পানীয় খেলে কী কী উপকার পাবেন?
১) অনেকেই ওট্স হজম করতে পারেন না। সারা রাত ভিজিয়ে রেখে দিলে ওট্সের মধ্যে উপস্থিত স্টার্চ জাতীয় পদার্থ ভেঙে যায় এবং প্রাকৃতিক ফাইটিক অ্যাসিডের মাত্রা কমে। ফলে শরীরে ওট্সের পুষ্টিগুণ বেশি পরিমাণে শোষিত হয়। রান্না করা ওট্সের তুলনায় ভিজিয়ে রেখে ওট্স খেলে তা হজম করতে সুবিধা হয়।
২) ওট্স ফাইবারে ভরপুর। কোলেস্টেরল রোগীদের জন্য ডায়েটে ফাইবার রাখা জরুরি। রোজের ডায়েটে ওট্স রাখলে রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে ও ভাল কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পায়।
৩) শর্করাযুক্ত সব খাবারেই ‘রেজিস্ট্যান্ট স্টার্চ’ পাওয়া যায়। কিন্তু রান্না করা খাবারের পরিবর্তে ঠান্ডা স্টার্চযুক্ত খাবারে এটি ভরপুর মাত্রায় থাকে। ‘রেজিস্ট্যান্ট স্টার্চ’ হল একটি প্রাকৃতিক কার্বোহাইড্রেট, যা হজমশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে, ওজনও কমায়। তাই রাতে ওট্স ভিজিয়ে রেখে পরের দিন সকালে খেলে ওজন ঝরার প্রক্রিয়া তরান্বিত হবে।
৪) ওটসে থাকা ফাইবার ডায়াবিটিস রোগীদের জন্যও ভাল। তাই রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি থাকলে ডায়েটে ওট্স রাখতে পারেন রোগীরা।
৫) সকালে খালি পেটে ওট্স ভেজানো জল খেলে শরীরের দূষিত পদার্থ দূর হয়। ওট্সে থাকা অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট শরীর চাঙ্গা রাখতে সাহায্য করে।
সূত্র: আনন্দবাজার