নভেম্বর ২৫, ২০২৪, ০৬:৪৯ পিএম
`বাম এবং ডান মানসিকতার কতিপয় নেতৃত্ব বা ব্যক্তি গণঅভ্যুত্থানে এবং পরবর্তীতে সরকারে নিজেদের শরিকানা নিশ্চিত না করতে পেরে উন্মত্ত হয়ে গেছেন। তাদের উন্মত্ততা, বিপ্লবী জোশ এবং উসকানিমূলক কর্মকান্ড দেশটাকে অস্থির করে রেখেছে।`
সম্প্রতি নানা দাবিতে ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ-সমাবেশ এবং কলেজ শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনাকে ইঙ্গিত করে সোমবার, ২৫ নভেম্বর ফেসবুকের একটি পোস্টে এসব কথা বলেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।
‘গণ-অভ্যুত্থান ও ছাত্র-তরুণবিরোধী শক্তি’ শিরোনামে দেয়া ওই ফেসবুক পোস্টে মাহফুজ আলম বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের পরের দশ-পনেরো বছরের ইতিহাস মুক্তিযোদ্ধাদের একে অপরকে হত্যার ইতিহাস। যারা চায়নি বাংলাদেশ শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়াক, তারা মুক্তিযোদ্ধাদের একে অপরকে দিয়ে হত্যা করিয়েছে। তাদের নিজেদের ভুল ছিল না তা নয়, কিন্তু আমাদের মুক্তিযোদ্ধাগণের একের পর এক হত্যা বাংলাদেশকে কীভাবে পিছিয়ে দিল, তা ইতিহাস একদিন বলবে।’
এবারের আন্দোলন সাহসী ছাত্র–তরুণদের নেতৃত্বে জনগণের আন্দোলন ছিল উল্লেখ করে মাহফুজ আলম লিখেছেন, ‘কিন্তু একটি দল এবং দেশি–বিদেশি সুযোগ সন্ধানী এস্টাবলিশমেন্ট গত তিন মাসে ছাত্রদের ভিলিফাই করেছে, বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন দিয়ে ছাত্রদের মধ্যে বিভেদ ঘটিয়েছে, অন্য একটি তরুণ দলকে লেলিয়ে দিয়েছে ছাত্রদের বিরুদ্ধে, তদুপরি ছাত্রদের সাথে সম্মানজনকভাবে ডিল তো করেইনি, বরং ছাত্রদের তারা শত্রু গণ্য করেছে।’
এসবের পরিণতি কি ভালো হচ্ছে নাকি হবে, সে প্রশ্ন তুলে মাহফুজ বলেছেন, ‘মনে রাখতে হবে, বিদেশি শক্তির কোনো সাধ্য নাই এ দেশের মানুষকে পদানত করার। কিন্তু গোলামির মানসিকতার কিছু গাদ্দার আর হঠকারীর এ শক্তি আছে। তারা গত তিন মাসে তা দেখাল। ছাত্রদের আজ সংঘাতের মুখে ঠেলে দিয়ে হত্যার মাধ্যমে ছাত্রদের বৈধতার সংকট হলে যারা যারা লাভবান হবে, তারা সবাই এ উসকানি ও প্রশাসনিক ব্যর্থতার সাথে জড়িত। ধীরে ধীরে আমরা সবই বলব। অথবা আপনারা চোখ খুললেই দেখতে পাবেন।’
পড়ুন: শত চেষ্টার পরেও সংঘর্ষ আটকানো গেলো না: উপদেষ্টা আসিফ
অনেক মিত্রই আজ হঠকারীর ভূমিকায় উল্লেখ করে মাহফুজ আলম বলেন, ‘আমরা আমাদের ব্যর্থতা স্বীকার করি। আমরা শিখেছি এবং ব্যর্থতা কাটানোর চেষ্টাও করছি। আমরা আরও চেষ্টা করব সবাইকে নিয়ে এগোনোর। কিন্তু হঠকারিতা এবং ছাত্রদের অন্যায্যতার চেষ্টা এ জাতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।’
তিনি বলেছেন, ‘হঠকারিতা, উসকানি, ছাত্র-তরুণদের মধ্যে বিভেদ ও বিরোধ তৈরি, অভ্যুত্থানের শক্তিকে প্রতিক্রিয়াশীল করে তোলার অপচেষ্টা—সবই ব্যর্থ করে দেওয়া হবে, ইনশা আল্লাহ।’
৫ আগস্টের সকালের মতো ঐক্যবদ্ধ হওয়ার দিকে অগ্রসর হওয়ার কথা তুলে ধরে মাহফুজ আলম বলেন, ‘এবারের সাংগঠনিকভাবে গড়ে ওঠা ঐক্য দীর্ঘস্থায়ী মুক্তির সুযোগ তৈরি করবে, ইনশাআল্লাহ।’