ইউএনওর কক্ষে জামায়াতের ৪ নেতাকে পেটানোর অভিযোগ বিএনপির বিরুদ্ধে

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

মার্চ ৪, ২০২৫, ০৫:০১ পিএম

ইউএনওর কক্ষে জামায়াতের ৪ নেতাকে পেটানোর অভিযোগ বিএনপির বিরুদ্ধে

ছবি: সংগৃহীত

পাবনার সুজানগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) উপস্থিতিতে উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমিরসহ দলের চার নেতাকে বিএনপি নেতা-কর্মীরা পিটিয়ে আহত করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল সোমবার বিকেলে ইউএনও মীর রাশেদুজ্জামানের কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

আহত ব্যক্তিরা হলেন উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ফারুকী আজম, সেক্রেটারি টুটুল বিশ্বাস, শ্রমিককল্যাণ ফেডারেশনের সাবেক সভাপতি ওয়ালিউল্লাহ বিশ্বাস ও সাবেক কাউন্সিলর মোস্তাক আহমেদ। খবর প্রথম আলো।  

কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, গতকাল বেলা সাড়ে তিনটার দিকে জামায়াতের ওই চার নেতা ইউএনও মীর রাশেদুজ্জামানের সঙ্গে দেখা করতে তার কার্যালয়ে যান। তবে ইউএনও ব্যস্ত থাকায় তারা অপেক্ষায় ছিলেন। এ সময় উপজেলা বিএনপির সাবেক যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক মজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দলটির কয়েকজন নেতা-কর্মী ওই কার্যালয়ে প্রবেশ করেন। সেখানে জামায়াত নেতাদের দেখে উত্তেজিত ও ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, ‘এরা কেন এখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকে?’ বিষয়টি নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। এরপর মজিবুর রহমান কক্ষ থেকে বেরিয়ে তাদের অন্য নেতা-কর্মীদের ডাকেন। তিনি সেখানে আবার ফিরে গিয়ে ইউএনওর সামনেই জামায়াতের ওই নেতাদের মারধর করেন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে ইউএনও কার্যালয়ের কর্মীরা তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন।

ঘটনার প্রসঙ্গে উপজেলা জামায়াতের আমির কে এম হেসাব উদ্দিন জানান, সুজানগরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করায় বিএনপির ক্যাডাররা ইউএনওকে মারধর ও তুলে আনার জন্য গিয়েছিল। এ সময় বাধা দিলে জামায়াতের চার নেতাকে বিএনপির ক্যাডাররা বেধড়ক মারধর করেছে।

উপজেলা জামায়াতের আমিরের দাবি, গত ৫ আগস্টের পর বিএনপির নেতারা সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজির গডফাদার হয়েছেন। চাঁদাবাজি, অবৈধ বালু উত্তোলন, মাদক কারবারি, চুরি-ডাকাতি, অপহরণ, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপকর্ম করছেন। কিন্তু তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।

তবে এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত মজিবুর রহমান খানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তার ব্যবহৃত মুঠোফোনটিও বন্ধ পাওয়া যায়।

উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আজম বিশ্বাস বলেন, ‘যারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করেন, তারা আমাদের দলের হতে পারে না। আমরা তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নিতে বলেছি। সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতেও আলোচনা চলছে।’

সুজানগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় আহত ব্যক্তিরা মামলা করেননি। তারা এলেই মামলা ও যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিজ কার্যালয়ে এ ধরনের ঘটনাকে অত্যন্ত দুঃখজনক বলে উল্লেখ করেছেন ইউএনও মীর রাশেদুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘যেহেতু আমার কক্ষে মারধর ও সরকারি কাজে বাধাদানের ঘটনা ঘটেছে, কাজেই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Link copied!