বিএনপি জানে মানুষ তাদের ঘৃণা করে, এজন্যই তারা ভোটে আসেনি: শেখ পরশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

জানুয়ারি ৩০, ২০২৪, ০৪:১৫ পিএম

বিএনপি জানে মানুষ তাদের ঘৃণা করে, এজন্যই তারা ভোটে আসেনি: শেখ পরশ

শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ শেখ ফজলে শামস্ পরশ।

বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন, ‘বিএনপি জানে, তাদের জন্য মানুষের শুধু ঘৃণাই রয়েছে; মানুষ তাদের বিশ্বাস করে না। তাই তারা নির্বাচনে যেতে ভয় পেয়েছে, কারণ তারা জানে বিএনপিকে মানুষে কোনদিনও ভোট দেবে না। সেই অপরাধবোধ থেকে মানুষের সামনে ভোট চাইতে যেতে ভয় পেয়ে বিএনপি নির্বাচন বর্জন করেছে।’

রবিবার (৩০ জানুয়ারি) সকালে কালাচাঁদপুর সরকারি স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ, ঢাকা মহানগর উত্তরের উদ্যোগে শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচি অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শেখ ফজলে শামস্ পরশ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা-১১ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ ওয়াকিল উদ্দিন। 

শেখ পরশ বলেন, ‘ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখলে বোঝা যায়, এদেশে যখনই আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ছিল তখনই দেশের উন্নয়ন হয়েছে সবচেয়ে বেশি। সাধারণ মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটেছে। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনের আগে দলীয় ইশতেহার ঘোষণা করেছিলেন। তার মধ্যে সবচেয়ে প্রথমে ছিল, দ্রব্যমূল্য সবার ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখা। সেই ধরাবাহিকতায় মন্ত্রীসভার বৈঠকে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনার ব্যাপারে তিনি গত পরশু সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীদের সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব দিয়েছেন, তাদের তাগাদা দিচ্ছেন এবং তাদের কাজের তদারকি করছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে দ্রব্যমূল্যের সমস্যা সমাধান করে আপনাদের জীবনমান উন্নত করা। সেই লক্ষেই সরকার কাজ করে যাচ্ছে; আপনাদের একটু ধৈর্য ধরতে হবে এবং বঙ্গবন্ধুকন্যার উপর আস্থা রাখতে হবে। অচিরেই আমরা এই সংকট সমাধান করবো।’

তিনি আরও বলেন, ‘আপনাদের নিশ্চয় মনে আছে বিএনপির সময় কী দুরাবস্থা ছিল আমাদের সামগ্রিক জীবনে। মানুষের ভাত এবং কাপড়ের সমস্যাতেই সাধারণ মানুষ জর্জরিত থাকত। গ্যাস, বিদ্যুৎ এবং সারের জন্য মানুষের উপর গুলি চালানো হয়েছিল বিএনপি-জামায়াত সরকারের আমলে। চুরি, ডাকাতি, খুন, রাহাজানি লেগেই ছিল। মানুষের জীবনে কোন নিরাপত্তা ছিল না, ছিল না মানুষের অধিকার। গরিব-দুঃখী মানুষ নিয়ে তাদের কোনদিনই মাথা ব্যাথা ছিল না। ’

তিনি বলেন, ‘অগ্নিসন্ত্রাস করে জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারার দল বিএনপি। তারেক এবং খালেদা জিয়ার নির্দেশেই যে অগ্নিসন্ত্রাস চালানো হয় তা বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের মাধ্যমে এবং তাদের আটক নেতা-কর্মীদের স্বীকারোক্তি থেকে প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। সেই ন্যাক্কারজনক ঘটনাকালে অগ্নিদগ্ধ ও আপনজন হারা স্বজনদের ব্যথা এখনো মানুষের মনে দাউ দাউ করে জ্বলে। ’

তিনি বলেন, ‘যখনই এদেশের মানুষের জীবনে উন্নতি হয়েছে অথবা আরও অধিকতর উন্নতির সুযোগ রয়েছে, তখনই এদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে, সাধারণ মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে বিএনপি-জামায়াত। আজকেরও তাদের এই কালো পতাকা মিছিল তাদের কু-মতলবের আভাস বহন করে এবং একটা অশনি সংকেতের ইঙ্গিত বহন করে। আবারো কোন সন্ত্রাসী কার্যকলাপের পায়তারা করছে কিনা সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সকলকে সতর্ক থাকতে হবে।’

যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, ‘ঠিক যখন আওয়ামী লীগ সরকার দারিদ্র দূর করে এদেশের মানুষের মুখে দুবেলা ভাতের ব্যবস্থা নিশ্চিত করছে, ভূমিহীনদের বিনামূল্যে জমি, ঘর ও আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে, ঠিক তখন বিএনপি-জামায়াত এই সকল অশুভ পায়তারা শুরু করেছে। দারিদ্রের ভাগ ৪০ থেকে ১৮ ভাগে নামিয়ে আনা হয়েছে। যখন প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়ে আলোকিত করেছে বঙ্গবন্ধুকন্যার সরকার। যখন আপনাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করছে, ঠিক তখন ওরা আবার জনবিরোধী কার্যকলাপ করার চেষ্টা করছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমান যুবলীগের অন্যতম লক্ষ্য রাষ্ট্রের মানবিক ধারাকে গতিশীল করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা এবং গণমানুষের সুখে-দুঃখে সাথি থাকা। এ লক্ষ্যে যুবলীগ ইতোমধ্যে বেশ কিছু মানবিক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে চলেছে যার একটি সামান্য প্রয়াস আজকের এই শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠান। যুবলীগের সকল নেতা-কর্মীরা মানুষের পাশে থাকবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।’

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন ঢাকা-১১ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ ওয়াকিল উদ্দিন। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোঃ এনামুল হক খান, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, উপ-দপ্তর সম্পাদক মোঃ দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা, ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের উপ-দপ্তর সম্পাদক মোঃ কামরুজ্জামান কামরুল। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন-যুবলীগের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পাদক মোঃ শামছুল আলম অনিক, উপ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক সফেদ আশফাক আকন্দ তুহিন, উপ- তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পাদক এন আই আহমেদ সৈকত, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাইদুর রহমান জুয়েলসহ কেন্দ্রীয়, মহানগর ও বিভিন্ন ওয়ার্ড যুবলীগের নেতৃবৃন্দ।

Link copied!