ভারত বিরোধিতার মাধ্যমে বিএনপির দেউলিয়াত্ব ধরা পড়েছে: নানক

নিজস্ব প্রতিবেদক

মার্চ ২৩, ২০২৪, ০৭:৩৫ পিএম

ভারত বিরোধিতার মাধ্যমে বিএনপির দেউলিয়াত্ব ধরা পড়েছে: নানক

জাহাঙ্গীর কবির নানক। ছবি: দ্য রিপোর্ট ডট লাইভ

মুক্তিযুদ্ধে আমাদের সঙ্গী ভারত বিরোধিতার মাধ্যমে বিএনপি তার দেউলিয়াত্ব প্রকাশ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক।

শনিবার (২৩ মার্চ) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে ছাত্রলীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বলেন, ‘জনবিচ্ছিন্ন হয়ে বিএনপি এখন সস্তা ইস্যু তৈরি করতে ভারতীয় পণ্য ও ভারতের বিরোধিতা করছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা একটি কঠিন লড়াইয়ে আছি, আমাদের এখন খুব সহজ সময় যাচ্ছে না। আবার এই বিএনপি মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। তারা যখন  জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে বেকায়দায় পড়েছেন তখনই সস্তা ইস্যু তৈরি করে ভারত বিরোধিতা করে ভারতীয় পণ্য বর্জনের কথা বলেছেন। এই ভারতীয় পণ্য বর্জন, ভারত বিরোধিতা হলো ওদের রাজনৈতিক হালে পানি পাওয়ার জন্য অপচেষ্টা মাত্র। কিন্তু তারা জানে না, জিয়া-এরশাদ-খালেদা জিয়া ভারত ইস্যুকে ঘিরে যে ‘ভারত জুজুর রাজনীতি’ করেছিল সেই বাংলাদেশ আজকে আর নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে খুনিদের অবাধ বিচরণ প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। যাদের আমরা মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত করেছিলাম, সেই ঘাতকদের অবাধ চারণভূমিতে পরিণত করেছিল জিয়াউর রহমান ও জেনারেল এরশাদরা। আজকের দিনে বঙ্গবন্ধুর কন্যার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে।’

বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী বলেন, ‘মুজিব শব্দের অর্থ উত্তরদাতা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সবসময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে উত্তর দিয়েছেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি এক ধরনের মানসিকতা নিয়ে গড়ে হয়েছেন যে আমাকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে হবে, মানুষকে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে এবং মানুষকে নিয়ে কাজ করে যেতে হবে। ১৯৪০ সালে সর্বভারতীয় মুসলিম ছাত্র ফেডারেশনে যোগ দেন, ৪৬ সালে তিনি কলকাতা ইসলামিয়া কলেজের (মাওলানা আজাদ কলেজ) ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৪৯ সালে তৎকালীন আওয়ামী মুসলিম লীগের পূর্ব পাকিস্তান শাখার যুগ্ম সম্পাদক পদে নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে জাতীয় রাজনীতির মূল ধারায় যুক্ত হন, ১৯৫৩ সালে দলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।’

আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘১৯৫৮ সালে আইয়ুব খান যখন সামরিক শাসন জারি করে পাকিস্তানিদের শাসন করতে চাইল তখনও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হুঙ্কার দিয়ে উঠলেন আমি সামরিক শাসন চাইনা। ৬৬ এর ছয় দফা এই ধর্মান্ধ বাঙালি জাতিকে বাঁকে বাঁকে এগিয়ে নিয়ে গিয়ে ১৯৬৬ সালে ছয় দফা পেশ করেছিলেন। এই ছয় দফার স্বায়ত্তশাসনের যে দাবি এই ছয়টি দফা যে বাঙালির স্বাধীনতার দাবি ছিল সেটি পাকিস্তানি পাঞ্জাবি শাসকগোষ্ঠী বুঝতে পেরেছিল। যার কারণে তাঁকে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেই সময় ছাত্রলীগ ছয়দফার পক্ষে সারা দেশে এক জাগরণের সৃষ্টি করা হয় এবং ৬ দফা, ১১ দফা ভিত্তিক আন্দোলনের সূচনা হয়। যখন সেই আন্দোলন যখন জাতীয় জাগরণের সৃষ্টি হয় তখন স্লোগান দেওয়া হয় ছয় দফা না, এক দফা- বাংলাদেশের স্বাধীনতা। চল ক্যান্টনমেন্ট চল, শেখ মুজিবকে আনতে চল। জেলের তালা ভাঙবো শেখ মুজিবকে আনব। সেইদিনের ব্যাপক আন্দোলনের চাপের মুখে পড়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে জেলে থেকে মুক্তি দিতে বাধ্য দিতে বাধ্য হয়েছিলেন।’

অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের সভাপতিত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে মাজহারুল কবির শয়ন, সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তানভীর হাসান সৈকতসহ আরও অনেকে বক্তব্য রাখেন।  এছাড়া আলোচনায় আরও অংশ নেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সবেক উপাচার্য ও ঢাবির মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান।

Link copied!