জুন ২৭, ২০২৪, ০২:৫৭ পিএম
খালেদা জিয়া ও গণতন্ত্রকে আলাদা করে দেখা যাবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের উদ্যোগে দলের চেয়ারপাসরন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে এমন প্রশ্ন রাখেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আমাকে অনেকে বলেন, আপনারা শুধুমাত্র খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্যই আন্দোলন করেন? আমি বলি, নো। আমরা গত দুই বছর আন্দোলন করেছি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে, মানুষকে অন্যায়ভাবে হত্যার প্রতিবাদে আন্দোলন করেছি, দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি, ব্যাংক লুটের বিরুদ্ধে ও টাকা পাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি। আমরা এখন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুুক্তির জন্য যে আন্দোলন করছি, এটা সামগ্রিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলন। কারণ, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও গণতন্ত্রকে আলাদা করে দেখা যাবে না। এই আন্দোলন শুধুমাত্র বিএনপির আন্দোলন হওয়া উচিত নয়; এই আন্দোলন সমগ্র দেশের মানুষের।”
মানববন্ধনে খালেদা জিয়াকে বন্দী রাখার বিষয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি আরও বলেন, “খালেদা জিয়াকে কেন বন্দী করে রেখেছেন? কোনও সমস্যা যদি না থাকে তাহলে মুক্তি দেন। সেদিকে তো আপনারা যাচ্ছেন না। আমরা এও বলেছি, আমরা ক্ষমতায় যেতে চাই না। আমরা শুধু চাই, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন। সেই নির্বাচনের ব্যবস্থা করেন। সেই নির্বাচনে যারা আসবে তাদেরকে আমরা ফুলের তোড়া দিয়ে বরণ করে নেবো। আপনারা শুধু আপনাদের রাখার জন্য সব নির্বাচন ব্যবস্থাকে দখল করে নেবেন, সাধারণ মানুষের কথা একবারও চিন্তা করবেন না, সেটা আমরা হতে দেবো না।”
এ সময় পৃথিবীর কোন দেশ আছে তার সীমান্তে বন্ধুরা গুলি করে আমাদের নাগরিকদের হত্যা করে- এমন প্রশ্ন রেখে মির্জা ফখরুল বলেন, “প্রতিদিন সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যা করা হয়। গতকালও হত্যা হয়েছে। এই বিষয়ে আপনারা (সরকার) একটা কথাও বলেননি। আমাদের সরাসরি প্রশ্ন আপনাদের কাছে, পৃথিবীতে কোন দেশ আছে, বন্ধু দেশ, একেবারে এতো বন্ধু যে সম্পর্ক নাকি স্বামী-স্ত্রীর মতো। তাহলে কোন দেশ আছে তার সীমান্তে বন্ধুরা গুলি করে আমাদের নাগরিকদের হত্যা করে?”
নয়াপল্টনে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আলমগীর। ছবি: দ্য রিপোর্ট ডট লাইভ
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে দুই দেশের মধ্যে চুক্তির সমালোচনা করে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়েছে। আপনারা দেখেছেন যেসব চুক্তি ও সমঝোতা করা হচ্ছে, এর কোনওটাই বাংলাদেশের পক্ষে নয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিয়োগ করা হয়েছে, তিনি আবার আমাদের ছবক দেন যে, আমরা নাকি চুক্তি আর সমঝোতার মাঝে পার্থক্য বুঝি না। আমাদেরকে তিনি পরামর্শ করার জন্য পরামর্শ দেন। আমি উনার কথা উত্তর দিতে চাই না। আমি শুধুমাত্র একটা কথাই বলতে চাই, দেশের সঙ্গে বেঈমানি করবেন না। মানুষকে বোকা বানিয়ে তাদেরকে ভুল বুঝিয়ে এমন চুক্তি ও সমাঝোতা সই করবেন না, যেগুলোর আমার জনগণের স্বার্থের বিরুদ্ধে।”
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “কি এনেছেন এবার ভারত থেকে? পানির কথা কোথাও নেই, যেটা আছে সেটা ভয়াবহ। সেটা হচ্ছে তিস্তা চুক্তির জন্য ভারতে ভালো প্রস্তাব দিয়েছে, চীনও দিয়েছে। শেখ হাসিনা বলেছেন, দুটোর মধ্যে দেখবো কোনটা ভালো হয়। আবার এও বলেছেন, ভারত যে প্রস্তাব দিয়েছে, ভারতকে যদি কাজটা দেই, তাহলে পানির সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। আমরা তো সব বোকা মানুষগুলো এই দেশে বাস করি? পক্ষান্তরে আপনি যেটা করেছেন তিস্তার পানি বণ্টন সমস্যা, সেটা বাতিল করে দিলেন। অভিন্ন নদীগুলোর পানি বণ্টন সমস্যা, সমস্যা রইল না। এবার বাংলাদেশকে পুরোপুরি ভারতের কাছে জিম্মি করে দিচ্ছেন।”