অক্টোবর ২৯, ২০২৪, ১০:৪৭ এএম
উন্নত চিকিৎসার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে লং ডিস্ট্যান্স স্পেশালাইজড এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স খোঁজার কাজ শুরু হয়েছে বিএনপির পক্ষ থেকে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার বিদেশে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে খালেদা জিয়ার কার্যালয় থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ওই চিঠিতে খালেদা জিয়ার সঙ্গে চিকিৎসক, নার্সসহ আত্মীয়-স্বজন যারা যাবেন তাদের নামও জানানো হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন। তিনি জানান, খালেদা জিয়াকে লং ডিস্ট্যান্স স্পেশালাইজড এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে করে প্রথমে লন্ডন যাওয়া হবে। এরপর সেখানে থেকে তাকে তৃতীয় একটি দেশে মাল্টি ডিসিপ্ল্যানারি মেডিক্যাল সেন্টারে নেওয়া হবে।
খালেদা জিয়া বিদেশে নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে জানিয়ে জাহিদ হোসেন বলেন, ‘ম্যাডামের শারীরিক সুস্থতা ওপর নির্ভর করে আমরা যাতে অতি দ্রুত তাকে বিদেশে মাল্টি ডিসিপ্ল্যানারি হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারি সেই আমরা প্রক্রিয়া শুরু করেছি।’
তিনি আরো বলেন, ‘‘তার অংশ হিসেবে আমরা ‘লং ডিস্ট্যান্স স্পেশালাইজড এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে’র ভাড়া করার জন্য কাজ শুরু করেছি, যোগাযোগ চলছে। প্রথমে ম্যাডামকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে স্টেওভারের পরে মাল্টি ডিসেপ্ল্যানারি মেডিক্যাল সেন্টার যে দেশে আছে, সেখানে নিয়ে যাওয়া হবে। আমরা আশা করছি, সব কাজ সম্পন্ন করে দ্রুতই ম্যাডামকে বিদেশে নিয়ে যেতে পারব।”
এখন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা কেমন জানতে চাইলে অধ্যাপক জাহিদ বলেন, আলহামদুলিল্লাহ। ম্যাডাম গুলশানের বাসায় আগের মতোই মেডিক্যাল বোর্ডের সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানে আছেন। বলতে পারেন উনার অবস্থা স্থিতিশীল। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিএনপি চেয়ারপারসনের লিভার ট্রান্সপারেন্ট করতে হবে। এটি যুক্তরাষ্ট্রে মাত্র দু-একটি সেন্টার রয়েছে।
সেখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছে।
৭৯ বছর বয়সী সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, ফুসফুস, আর্থ্রাইটিস, কিডনি, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন। ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে বিভিন্ন সময়ে আইসিইউতে রেখে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে মেডিক্যাল বোর্ডের মাধ্যমে তাকে দীর্ঘ সময়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছে।
ছাত্র-জনতার বিপ্লবের পরে সর্বশেষ ২১ আগস্ট এভারকেয়ার হাসপাতালে এক মাস চিকিৎসাধীন থেকে বাসায় ফেরেন।
চিকিৎসকরা জানান, খালেদা জিয়াকে এমন এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে বিদেশে নেওয়া হবে, সেখানে সব ধরনের চিকিৎসা সহায়তার ব্যবস্থা থাকতে হবে। বর্তমান শর্ট ডিস্ট্যান্সে চার ঘণ্টার যাওয়ার এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স রয়েছে যা সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ডে রোগী নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু লন্ডন যেতে ১৪ ঘণ্টার লং ডিস্ট্যান্স এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স পৃথিবী কয়েকটি দেশে রয়েছে সেসব দেশের সঙ্গে চিকিৎসকরা আলোচনাও করেছেন।
এভারকেয়ার হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি বিশেষজ্ঞ মেডিক্যাল বোর্ড খালেদা জিয়া চিকিৎসাসেবায় নিয়োজিত রয়েছেন। এই টিমে দেশের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ছাড়াও লন্ডন থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী কার্ডিওলস্টি ডা. জোবাইদা রহমান এবং যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়ার কয়েকজন চিকিৎসকও রয়েছেন।