ব্রিটিশ কথাসাহিত্যিক ভার্জিনিয়া ছিলেন নারী মুক্তিতে অবিচল একজন সমাজ বিশ্লেষক। তিনি প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মধ্যবর্তী সময়কালে প্রভাবশালী লন্ডন লিটারেসি সোসাইটির একজন অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব ছিলেন। বিংশ শতাব্দীর আধুনিকতাবাদী সাহিত্যিকদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন তিনি। তার পুরো নাম এ্যাডেলাইন ভার্জিনিয়া উলফ, যিনি বিশ্বব্যাপী ভার্জিনিয়া উলফ নামেই পরিচিতি লাভ করেন।
জন্ম
১৮৮২ সালের ২৫ জানুয়ারি লন্ডনের দক্ষিণ কেনসিংটনে ২২ হাইড পার্কের একটি বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন লেখক উলফ। তার পুরো নাম ছিল এ্যাডেলাইন ভার্জিনিয়া স্টিফেন। বিয়ের পর তিনি উলফ পদবীটি গ্রহণ করেন। তার বাবা লেসলি স্টিফেন ছিলেন একজন স্বনামধন্য ইতিহাসবিদ, লেখক, সমালোচক এবং পর্বত আরোহী। সাহিত্যনুরাগী বাবার লেখালেখি ভার্জিনিয়াকে একজন সাহিত্যিক হতে উৎসাহ যুগিয়েছিল। মা ছিলেন জুলিয়া প্রিন্সেপ ডাকওয়ার্থ স্টিফেন। উলফের মা ও বাবার আগেও বিয়ে হওয়ায় একাধিক সৎ ভাইবোনদের সাথে শৈশব কাটে ভার্জিনিয়ার।
শিক্ষাজীবন
উনবিংশ শতাব্দীর শেষের লন্ডনের শিক্ষাব্যবস্থা ছিল ভিন্ন। ছেলেরা স্কুল, ভার্সিটিতে যেতে পারলেও মেয়েদের শিক্ষাগ্রহণ বাড়িতেই হতো। ভার্জিনিয়ার পরিবার তখন কর্নওয়েলের একটি বাড়িতে স্থানান্তর হন। সেখানে বসার ঘরের পিছনেই বই নিয়ে বসতেন ভার্জিনিয়া ও তার বোন ভেসেনিয়া। ভার্জিনিয়ার লেখা থেকে জানা যায়, কক্ষটি ছিল সুন্দর আর অনেক জানালা ঘেরা। শান্ত নিরিবিলি ওই পরিবেশ পড়াশুনা আর ছবি আঁকার জন্য ছিল একদম জুতসই। ভার্জিনিয়ার মা জুলিয়া তাদের ইতিহাস, ফ্রেঞ্চ এবং লাতিন পড়াতেন। বাবা লেসলি শেখাতেন গণিত। লেসলির ছিল বইয়ের বিশাল সম্ভারে ভরপুর লাইব্রেরি। সেই লাইব্রেরির বইয়ের মাধ্যমে বাবার সাথে এক সমধুর হৃদ্যতা গড়ে উঠে ভার্জিনিয়ার। যদিও সেসময় মেয়েদের স্কুলে গিয়ে বিদ্যাশিক্ষার তেমন প্রচলন ছিল না, কিন্তু লেখালেখির বিষয়টিকে পারিবারিকভাবেই বেশ উৎসাহ দেওয়া হতো। তাই ১০ম জন্মদিনে ভার্জিনিয়াকে একটি কালির দোয়াত, কলমের স্ট্যান্ড এবং বেশ কিছু লেখালেখির সামগ্রী উপহার হিসেবে দেওয়া হয়েছিল। ভার্জিনিয়ার বয়স যখন মাত্র ১৩ বছর, ১৮৯৫ সালে ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত হয়ে তার মা মারা যান।
১৫ থেকে ১৯ বছর বয়স পর্যন্ত বিদ্যালয়ে গিয়ে পড়াশুনার সুযোগ পান ভার্জিনিয়া। ১৮৯৯ থেকে ১৯০১ সাল পর্যন্ত লন্ডনের কিং কলেজের নারী বিভাগে তিনি প্রাচীন গ্রিক, লাতিন, জার্মান ও ইংরেজি বিষয়ে উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণ করেন। এ সময় তার বোন ভেনেসাও ওই বিভাগে যোগ দেন। ১৮৯৭ সালে ভার্জিনিয়ার সারোগেট মা স্টেলা ডাকোয়ার্থ মারা যান। ১৯০২ সালে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তার পিতা লেসলি স্টিফান এবং একটি অপারেশনও করা হয়। কিন্তু তিনি আর সুস্থ হননি। ১৯০৪ সালে মৃত্যুবরণ করেন স্টিফান। বাবার মৃত্যুর পর আবারো মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন ভার্জিনিয়া। মা, স্টেলা এরপর বাবার মৃত্যু- ১৮৯৭ থেকে ১৯০৪ সালকে ভার্জিনিয়া দুঃখের সাত বছর হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
বিবাহিত জীবন
সাহিত্যনুরাগী লিওনার্ড উলফ ছিলেন ভার্জিনিয়ার ভাই থোবির বন্ধু এবং দুজনে একসঙ্গে কেমব্রিজে পড়াশুনা করতেন। এ সময় তারা অন্যান্য বন্ধুদের সঙ্গে একটি রিডিং গ্রুপ তৈরি করেছিলেন যার নাম ছিল মিডনাইট সোসাইটি। ভার্জিনিয়া ও লিওনার্ড দুজন দুজনার সম্পর্কে অবগত থাকলেও ১৯০৪ সালের আগ পর্যন্ত কেউ কখনো কারো সাথে কথা বলেননি। ১৯১২ সালের ১১ জানুয়ারি লিওনার্ড উলফ ভার্জিনিয়াকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। সে বছরই ১০ আগস্ট তারা বিয়ে করেন। এ সময় ভার্জিনিয়ার মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে অবগত ছিলেন লিওনার্ড। আর্থিকভাবে খুব স্বচ্ছল না হলেও ভার্জিনিয়া-লিওনার্ডের ভালোবাসার বন্ধন ছিল অটুট।
সাহিত্যিক জীবন
১৯১৪ সালে এই দম্পতি লন্ডন থেকে দূরে রিচমন্ডে থাকা শুরু করেন। ১৯৬৪ সালে প্রকাশিত লিওনার্ড উলফ এর আত্মজীবনীমূলক উপন্যাস ‘বিগিনিং এগেইন’ বইয়ে এ বাড়িটির উল্লেখ রয়েছে। ১৯১৫ সালে মার্চ মাসে এ দম্পতি হগরাথ হাউজে স্থানান্তরিত হন। ঐ বাড়িটি থেকেই প্রথমবারের মত মুদ্রণের কাজ শুরু করেন এই দম্পতি, যাত্রা শুরু হয় হগরাথ প্রেস এর।
১৯১৫ সালে তার ভাই গেরাল্ড ডাকওয়ার্থের প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয় ভার্জিনিয়ার প্রথম উপন্যাস দ্য ভয়েজ আউট। বইটি প্রকাশের পর একাধিকবার সংশোধন করেছিলেন ভার্জিনিয়া। আমাদের ভাবনার জগত এবং কাজের মধ্যে যে পার্থক্য তা তুলে ধরা হয়েছে এ বইটিতে। এই দুইয়ের পার্থক্যের মধ্য দিয়ে ভালোবাসার রূপটি প্রকাশ করতে চেয়েছেন লেখিকা। বইটি প্রকাশের পরই আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ভার্জিনিয়া।
১৯২০ সালে লেখকদের সংগঠন ব্লুমসবারি নতুন রূপে আত্মপ্রকাশ করে এবং এই দম্পতি সেখানে যোগদান করেন। তার তিনটি আত্মজীবনীমূলক প্রবন্ধ -১৯২১ সালে প্রকাশিত হয় ২২ ‘হাইড পার্ক গেট’, ১৯২২ সালে প্রকাশিত হয় ‘ওল্ড ব্লুমসবারি’, ১৯৩৬ সালে প্রকাশিত হয় ‘এম আই এ স্নব’, ১৯৭৬ সালে তার মৃত্যুর পর প্রকাশিত হয় সম্পাদিত গ্রন্থ ‘মোমেন্টস অব বিইং’।
১৯২৫ সালে প্রকাশিত হয় সামাজিক রাজনৈতিক উপন্যাস ‘মিসেস ডালওয়ে’। যুদ্ধ এবং তার ফলাফল নিয়ে বিশ্লেষণধর্মী রচনা এ উপন্যাসটি। এটি প্রকাশিত হওয়ার পর পরই মানসিকভাবে কলাপসড হন ভার্জিনিয়া।
যুদ্ধের মাঝামাঝি সময়ে একটি পরিবারের মানুষগুলির বিপর্যস্ত জীবনের নানা বাঁক নিয়ে রচিত তার উপন্যাস ‘টু দ্য লাইটহাউজ’। সেই সাথে একজন নারীর উপর সামাজিক চাপ প্রয়োগের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়েছে। ১৯২৭ সালে বইটি প্রকাশিত হয়।
‘ফ্লাস’ তার বায়োগ্রাফি- প্রকাশিত হয় ১৯৩৩ সালে। মূলত রোডলফ বেসিয়ারের একটি নাটক থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ফিকশনধর্মী এ উপন্যাসটি রচনা করেন তিনি যেখানে একটি কুকুরের চোখ দিয়ে পুরো থিমটি তুলে ধরা হয়।
ভার্জিনিয়া উলফ তার আন্টি ফটোগ্রাফার জুলিয়া মার্গারেট ক্যামেরুনের জীবনের নানা দিক নিয়ে একটিমাত্র নাটক রচনা করেছিলেন, নাম ‘ফ্রেশওয়াটার’। ১৯৩৫ সালের ১৮ জানুয়ারি নাটকটি প্রথমবারের মত মঞ্চস্থ করা হয় যার নির্দেশনায় তিনি নিজেই ছিলেন।
১৯৩৬ সালে প্রকাশিত হয় ‘এম আই এ স্নব’। বইটিতে মূলত সমাজের ধনাঢ্য শ্রেণী এবং সেই সাথে সুশীল সমাজের একজন প্রতিনিধি হওয়ার যে সংকট তা তুলে ধরা হয়েছে।
ভার্জিনিয়া উলফ এর শেষ উপন্যাস ‘বিটউইন দ্যা এ্যাক্টস’ ১৯৪১ সালে প্রকাশিত হয় যেখানের জীবনের নানা স্তরের উত্থান পতনের বর্ণনা করেছেন তিনি।
এছাড়াও তিনি জেকবস্ রুম, ওরলানডো, দ্য ওয়েভস্ নামে প্রখ্যাত উপন্যাস রচনা করেছেন।
যদিও ভার্জিনিয়া বাবাকে বেশি ভালোবাসতেন বলে বারবার উল্লেখ করেছেন। তবুও তার শেষ জীবনে মায়ের দ্বারাই বেশি আবিষ্ট ছিলেন। তার বেশ কয়েকটি আত্মজীবনীমূলক প্রবন্ধ যেমন রেমিনিসেন্স (১৯০৮), ২২ হাইড পার্ক (১৯২১), আ স্কেচ অব দ্য পাস্ট (১৯৪০)-এ উঠে এসেছে মায়ের অপরূপ সৌন্দর্য আর তার সাথে মায়ের সুমধুর সম্পর্কের কথা।
ভার্জিনিয়া উলফের অন্যতম বিখ্যাত লেখনী ‘এ রুম অব ওয়ান'স অওন’, ১৯২৯ সালে প্রকাশিত হয়। মূলত ১৯২৮ সালে কেমব্রিজ বিশ্বদ্যালয়ে দেয়া দুটি লেকচারের সংকলন এটি। এখানেই তিনি তার বিখ্যাত উক্তিটি করেছিলেন- “নারী যখন ফিকশন লেখে তখন তার একটি কক্ষ আর কিছু অর্থ খুব প্রয়োজন।” শিল্পে, সাহিত্যে, উপন্যাসে কেন নারীরা পুরুষের চেয়ে পিছিয়ে? এই উত্তর খুঁজতে গিয়ে লেখিকা দেখিয়েছেন নারীর অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে থাকার কথা। সেই সাথে তাদের নিজের একটা ঘরও নেই। সৃজনশীলতার জন্য যা খুব প্রয়োজন বলে তিনি উপলব্ধি করেন।
তিনি বলেন, “যদি নিজস্ব একটা ঘর আর ৫০০ পাউন্ডের নিশ্চয়তা দেয়া হয়, নারীরাও অনেক উন্নতমানের সাহিত্য উপহার দিতে পারবে। জেইন অস্টেন থেকে ব্রন্টি ভগ্নিদ্বয়, জর্জ এলিয়ট ও মেরি কারমাইকেল পর্যন্ত সব লেখিকাই অনেক প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও শেকসপীয়রের স্তরে উন্নীত হতে পারছে না আর্থিকভাবে সমর্থ না থাকায়। আর তাই নারীকে নির্ভর করতে হয় পুরুষের ওপর। আর নারীদের নিচে ফেলে না রাখলে পুরুষরা বড় হবে কি করে- এই মনোভাব বজায় রাখলে নারীদের মুক্তি মিলবে কিভাবে?”- এই প্রশ্ন তখন সমাজের কাছে ছুঁড়ে দেন ভার্জিনিয়া।
মানসিক অসুস্থতা
শৈশবে সৎ ভাইদের দ্বারা যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছিলেন সাহিত্যিক উলফ। তার বিভিন্ন লেখনীতে সেই বিষয়টি তুলে ধরেছেন তিনি। মায়ের মৃত্যুর পর প্রথমবারের মত মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন ভার্জিনিয়া। আর সেই অসুস্থতা থেকে বের হতে পারেননি। মুড সুইং থেকে শুরু করে মানসিকতা উৎকন্ঠা আর বিষাদ চরম পর্যায়ে পৌঁছায় ১৯০৪ সালে তার পিতার মৃত্যুর পর। মানসিক অবসাদের কারণে তার সামাজিক জীবন বিপর্যস্ত হলেও লেখালেখির তেমন কোন সমস্যা ঘটায়নি। বরং অসুস্থতার জন্য নিয়মিত বিরতি দিয়ে লেখালেখি চালিয়ে গেছেন তিনি। ১৯১০, ১৯১২, ১৯১৩ সাল পর্যন্ত তাকে ৩ বার স্বল্প সময়ের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছিল। আধুনিক মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তিনি বাইপোলার ডিসঅর্ডারে ভুগছিলেন। মানসিক আঘাতের পাশাপাশি তার অবস্থাটা কিছুটা জেনেটিকও ছিল। তার বাবা লেসলি স্টিফেনও অবসাদে ভুগতেন। তার সৎ বোন লোরাও একই সমস্যায় ভুগতেন এবং অনেকদিন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এছাড়া অনেকেই তার সৃজনশীলতাকে তার মানসিক অসুস্থতার কারণ বলে মন্তব্য করে বলেন, অনেকসময় সৃজনশীলতা মানসিক অসুস্থতার জন্ম দেয়।
মৃত্যু
দীর্ঘদিন বিষন্নতায় ভোগার ফলে বেঁচে থাকবার তীব্রতা কমে যায় তার। নিজের হাতে তুলে নেন নিজেকে ধ্বংসের দায়িত্ব। নিজের ওভারকোটটির পকেটে নুড়িপাথর ভরে ১৯৪১ সালের ২৮ মার্চ ৫৯ বছর বয়সে বাড়ির পাশে লন্ডনের ওউজ নদীতে ডুব দেন এই মহান সাহিত্যিক। জীবনে আর ফিরে আসেননি, জলের সঙ্গে একাকার হয়ে যান। ১৮ এপ্রিল তার দেহের কিছু অংশ পাওয়া যায়। লিওনেল সেই দেহাবশেষ সাসেক্সের মংক হাউজের একটি এলম গাছের নিচে সমাহিত করেন।
শেষ বিদায়ের আগে প্রিয়তম স্বামীর উদ্দেশে এক মর্মস্পর্শী চিঠি লিখে যান ভার্জিনিয়া। চিঠিটি সম্ভবত পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি পড়া সুইসাইড নোটগুলোর একটি। অত্যন্ত মর্মস্পর্শী এই চিঠিটি এখনও সাহিত্যপ্রেমী তথা ভার্জিনিয়া উলফের প্রেমীদের কাছে ভীষণ জনপ্রিয়। চিঠিতে ভার্জিনিয়া লিখেন-
‘প্রিয়তম, আমি নিশ্চিত, আবার পাগল হয়ে যাচ্ছি। মনে হচ্ছে, দ্বিতীয়বারের মতো আর ভয়াবহ সময় পার করতে পারব না। এবার আর সেরে উঠব না বোধ হয়। সবচেয়ে যুক্তিযুক্ত কাজটিই আমি করতে যাচ্ছি। তুমি আমায় সম্ভাব্য সর্বোচ্চ সুখ দিয়েছ। যেকোনো মানুষের পক্ষে যতটা করা সম্ভব তুমি সব দিক থেকে ততটাই করেছ। আমার এই ভয়াবহ অসুখের পূর্ব পর্যন্ত আমরা যেমন সুখী ছিলাম, তেমন সুখী হয়তো আর দুজন মানুষের পক্ষে হওয়া সম্ভব নয়। আমি এই অসুখের সঙ্গে যুদ্ধ করতে আর পারছি না। আমি জানি, তোমার জীবনটাও আমি শেষ করে দিচ্ছি। জীবনে তোমাকে কখনো অধৈর্য হতে দেখিনি। তোমাকে পেয়েছি অবিশ্বাস্য রকমের সুবোধ স্বামী হিসেবে। আমি জোর দিয়ে বলতে চাই, আমি যা বলছি প্রত্যেকেই জানে। আমার এই ভয়াবহ অসুখের আক্রমণ থেকে কেউ বাঁচাতে পারলে সে শুধু তুমিই পারতে। আমার অধিকার থেকে সব কিছুই চলে গেছে- রয়ে গেছে তোমার ভালোবাসা। আবারো বলছি, দুজন মানুষ একসঙ্গে সুখী হতে পারে, তোমাকে না পেলে জানতাম না’।
কিন্তু এই চিঠিটি প্রকাশিত হওয়ার পর ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম একে নিজের মত করে ব্যখ্যা করতে শুরু করে। ভীরুতা ও ব্যক্তিগত ট্র্যাজেডির ধোঁয়া তুলে অনেকেই এ ঘটনার সহমর্মীদের সমালোচনা করেন। পরবর্তীতে ভার্জিনিয়ার বিখ্যাত বন্ধুরা যেমন টি এস এলিয়ট, এডিথ সিটওয়েল, এলিজাবেথ বোওয়েন প্রমুখ এই সকল ভুল ব্যখ্যা সম্বলিত সংবাদ পরিবেশনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে কলম ধরেন।