চাঁদের সংকোচন বাড়ছে; সাথে ভূকম্পন-ভূমিধসও

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ফেব্রুয়ারি ২, ২০২৪, ০১:০৪ পিএম

চাঁদের সংকোচন বাড়ছে; সাথে ভূকম্পন-ভূমিধসও

ছবি: সংগৃহীত

পৃথিবীকে ঘিরে ঘুরে চলেছে চাঁদ। আর বিজ্ঞানীদের আগ্রহও একে ঘিরে বাড়ছে চক্রবৃদ্ধি হারে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসার এক গবেষণায় জানা গেছে, সময়ের সাথে সাথে শীতল ও সংকুচিত হয়ে আসছে চাঁদের কোর। এ কারণে চন্দ্রপৃষ্ঠে আরও বেশি ভাঁজ সৃষ্টি হচ্ছে। বেড়ে গিয়েছে ভূকম্পন ও ভূমিধস। ভবিষ্যতে চাঁদের বুকে নভোচারীরা কোথায় অবতরণ করবেন, সেটা নতুন করে ভাবতে হবে।

এছাড়াও চাঁদের দক্ষিণ মেরুর একটি অঞ্চলে বরফ থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছিল। বিশ্বের কয়েকটি দেশের মহাকাশ সংস্থা তাদের চন্দ্রাভিযান চালানোর পরিকল্পনা করছিলেন। কিন্তু নতুন গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, ওই অঞ্চলকে যতটা বাসযোগ্য মনে করা হচ্ছিল, পরিস্থিতি ততটা অনুকূলে নয়।

বিশেষ করে দক্ষিণ মেরুতে ভারতের চন্দ্রযান-৩ মিশনের সফল অবতরণের পর থেকে ওই অঞ্চল ঘিরে বিজ্ঞানীদের আগ্রহ বাড়ছিল। ওই অঞ্চলে নভোযান পাঠাতে গিয়ে ব্যর্থ হয় রাশিয়া। এরপর নাসা তাদের আর্টেমিস-৩ মিশন ওই অঞ্চলে পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত নেয়। এ মিশনের মধ্য দিয়ে ২০২৬ সালে চন্দ্রপৃষ্ঠে নভোচারী পাঠানোর পরিকল্পনাও রয়েছে নাসার। চীনের পক্ষ থেকে সেখানে ভবিষ্যতে মানববসতি গড়ার পরিকল্পনার কথাও বলা হয়। নাসার নতুন গবেষণার ফল এই প্রচেষ্টা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। 

চাঁদের কোর বা কেন্দ্রভাগ ধীরে ধীরে সংকুচিত হওয়ার প্রক্রিয়াটি হচ্ছে অনেকটাই আঙুরের কিশমিশে পরিণত হওয়ার মতো। কোর সংকুচিত হয়ে ঘন ঘন চন্দ্রকম্প হচ্ছে। এ প্রক্রিয়া কৃত্রিম উপগ্রহপৃষ্ঠের সাধারণ প্রক্রিয়ার মতোই। কৃত্রিম উপগ্রহের দক্ষিণ মেরু সাধারণত কম্পনপ্রবণ এলাকা। এতে ভবিষ্যতে মানববসতি ও যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হলে তা হবে ঝুঁকিপূর্ণ।

ন্যাশনাল এয়ার অ্যান্ড স্পেস মিউজিয়াম সেন্টার ফর আর্থ অ্যান্ড প্ল্যানেটারি স্টাডিজের একজন সিনিয়র বিজ্ঞানী ইমেরিটাস ও গবেষণা প্রবন্ধের প্রধান লেখক টমাস আর ওয়াটার্স বলেন, তিনি এ গবেষণার মাধ্যমে কাউকে সতর্ক বা চাঁদের দক্ষিণ মেরুর ওই অংশের অনুসন্ধানকে নিরুৎসাহিত করছেন না। তবে তিনি বার্তা দিচ্ছেন, চন্দ্রপৃষ্ঠ একেবারে অনুকূল জায়গা নয়। সেখানে কিছুই ঘটছে না—এমন ভাবার কোনো কারণ নেই।

গবেষকেদের মতে, কয়েক লাখ বছর ধরে চন্দ্রপৃষ্ঠ ১৫০ ফুট সংকুচিত হয়েছে। এ পরিবর্তন ভূতাত্ত্বিক দিক বিবেচনায় গুরুত্বপূর্ণ। তবে তা পৃথিবীতে ঢেউয়ের প্রভাব বা জোয়ারের চক্রের পরিবর্তন আনার ক্ষেত্রে খুবই সামান্য। কিন্তু চন্দ্রপৃষ্ঠের বিবেচনায় তা অনেক বড় কিছু।

Link copied!