শুটিং সেটে অভিনেত্রী রুকাইয়া জাহান চমক-এর বিরুদ্ধে অসদাচরণ অভিযোগ এনে টেলিভিশন নাট্যপরিচালকদের সংগঠন ডিরেক্টরস গিল্ডে অভিযোগ করেছেন নির্মাতা আদিব হাসান। শুটিংয়ে সময় মতো না আসা এবং এসে একটি সিন করে সবার সঙ্গে খারাপ আচারণ করে শুটিং ফেলে চলে যাওয়ায় ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে দাবি নির্মাতার। আদিব হাসান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে, সে বিষয়ে ডিরেক্টর গিল্ডের কাছে অভিযোগ দিয়েছি।
কথার একপর্যায়ে যোগ করে তিনি বলেন, ‘‘এতে আমি অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। সেটে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। আমাকে হাসপাতালেও ভর্তি হতে হয়েছিল। এখন কিছুটা সুস্থবোধ করছি। এখন বাসাতে বিশ্রামে আছি। আগামীকাল এর বিচার হবে। আমি ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। সে (চমক) সবার সাথে খারাপ ব্যবহার করে আমার শুটিং ফাঁসিয়ে দিয়েছে। আমার মতো নির্মাতার এ লস পোষানো সম্ভব না। ক্ষতির চিন্তায় অসুস্থ হয়ে পড়েছি।’’
জানা গেছে, ‘শ্বশুর বাড়িতে প্রথম দিন’ নামের একটি নাটকের শুটিং চলছিল রাজধানীর উত্তরার একটি শুটিং বাড়িতে। শুক্রবার (৪ আগস্ট) ছিল শুটিংয়ের দ্বিতীয় দিন। নাটকের নায়িকা চমক’র কলটাইম ছিল সকাল ১০টায়। তার আসতে দেরি হওয়ায় চমককে কয়েকবার ফোন করেন সহকারী পরিচালক ও অভিনেতা আরশ খান।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শুটিং সেটে এসেই এ নিয়ে চিৎকার শুরু করেন চমক। মেকআপ রুমেও মেজাজ দেখান তিনি। এরপর শুটিং শুরু হয়। প্রথম দৃশ্য শেষ হওয়ার পর প্রোডাকশন ম্যানেজার তাকে বলেন, আপা, শটটা খুব সুন্দর হয়েছে। আর তাতেই আবার তেলে-বেগুনে জ্বলে ওঠেন চমক।
নাটকের পরিচালক আদিব হাসান চমককে বলেন, আপনি যেভাবে রিঅ্যাক্ট করছেন, এ রকম কোনো ঘটনাই এখানে ঘটেনি। আপনি কেন তাদের ধমকাচ্ছেন? এতে চমক আরও রেগে গিয়ে শুটিং করবেন না বলে জানিয়ে দেন। নির্মাতা তাকে বোঝানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। এ সময় নির্মাতার সঙ্গে ছিলেন সিনিয়র অভিনয়শিল্পী মাসুম বাশার। তিনিও চমককে বোঝানোর চেষ্টা করেন।
এক পর্যায়ে নির্মাতা বলেন, শুটিং না করে চলে গেলে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। জানা গেছে, তর্ক-বিতর্কের একপর্যায়ে নির্মাতা আদিব অসুস্থ বোধ করলে তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়। এক পর্যায়ে পুলিশে খবর দেন অভিনেত্রী চমক। অভিনেতা মাসুম বাশারের সঙ্গে কথা বলে চলে যায় পুলিশ। এরপর পুলিশ ডাকা নিয়ে মাসুম বাশারের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয় চমকের। দ্বিতীয় দফায় পুলিশ এলে চমক কাঁদতে কাঁদতে অভিযোগ করেন, মাসুম বাশারসহ সেটের অনেকে তাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছেন।
পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করলে সেখানে উপস্থিত হন অভিনয়শিল্পী সংঘের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নাজনীন হাসান চুমকি। তিনি সবার সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন। এরপর শুটিং সেট থেকে চমককে নিয়ে চলে যান চুমকি। এ ঘটনায় বন্ধ হয়ে যায় শুটিং।
এদিকে এ বিষয়ে অভিনেত্রী চমক গণমাধ্যমে বলেন, মূলত চক্রান্ত করেই তার বিরুদ্ধে কয়েকজন মিলে এই অভিযোগ এনেছেন। সেদিন আমি শুটিংয়ে দেরি করে আসিনি। ১১টায় শুটিং সেটে পৌঁছেছি। মেকআপ রুমে ১ ঘণ্টার মতো অপেক্ষা করেছি, এরপর আমার আরেক সহকর্মী আরশ খান আসেন। তাহলে আমি পরে এসেছি এটা কীভাবে বলেন। অভিনেতা আরশ খান ও নির্মাতা মিলে চক্রান্ত করে এটি ছড়াচ্ছে। কারণ, আরশ আমার খুব ভালো বন্ধু ছিল। একটা সময় বন্ধুর চেয়ে বেশি কিছু হতে চায় সে। যে কারণে আমাদের মাঝে দূরত্ব বাড়ে। সেই রাগ আর ক্ষোভ থেকেই তিনি এটা ছড়াচ্ছেন।