সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৩, ০৮:৫৩ পিএম
সৈয়দ সালাউদ্দিন জাকী ছিলেন বাংলাদেশি চলচ্চিত্র পরিচালক, সংলাপ রচয়িতা, চিত্রনাট্যকার, প্রযোজক এবং কাহিনীকার। ১৯৪৬ সালের ২৬ আগস্ট টাঙ্গাইলের করোটিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন।
তিনি ভারতের পুনে ফিল্ম এন্ড টেলিভিশন ইন্সটিটিউটের বৃত্তি নিয়ে সেখান থেকে সাফল্যের সাথে চলচ্চিত্র পরিচালনায় ডিপ্লোমা ডিগ্রি লাভের পর দেশে ফিরে চলচ্চিত্র নির্মাণে ব্রত হন।
বঙ্গবন্ধু সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে ১৯৭৪ সালে বন্ধু এবং সহপাঠী বাদল রহমানের সাথে প্রথমবারের মত যৌথভাবে নির্মাণ করেন প্রামাণ্য চলচ্চিত্র ‘প্রত্যাশার সূর্য’।
১৯৭৬ সালে নির্মাণ করেন প্রথম ডকুড্রামা ‘অঙ্কুর’। ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশ শিশু একাডেমীর অর্থায়নে নির্মাণ করেন শিশুতোষ স্বল্পদৈর্ঘ চলচ্চিত্র ‘গল্প দাদুর গল্পকথা’।
তিনি ১৯৮০ সালের চলচ্চিত্র ‘ঘুড্ডি’ এর কাহিনী লিখে বাংলাদেশ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। এবং ২০২১ সালে একুশে পদক লাভ করেন।
ঘুড্ডি’ সিনেমার জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। এই সিনেমার মধ্য দিয়ে সুবর্ণা মোস্তফার বড় পর্দায় অভিষেক ঘটে। এই সিনেমায় কাওসার আহমেদ চৌধুরীর লেখা ও হ্যাপি আখন্দের গাওয়া ‘আবার এল যে সন্ধ্যা’ গানটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়।
নব্বই দশকের শেষ দিকে বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক হিসেবেও কর্মরত ছিলেন তিনি। আশির দশকে ‘ঘুড্ডি’ ছবিটি যে উদ্যম নিয়ে নির্মাণ করেছিলেন, সবসময় সেভাবেই সব সিনেমার শুটিং করতেন জাকী। কাজের জায়গায় কোনো বাধাই তাঁকে কাবু করতে পারত না।
তিনি বলেছিলেন ‘বয়স শুধু একটা অজুহাত। এই অজুহাত দেখিয়ে বসে থাকার মানুষ আমি নই। যত দিন বেঁচে থাকব, সিনেমা করে যাব।’ তাই করে গেছেন সালাউদ্দীন জাকী। মৃত্যুর কিছুদিন আগেই তিনি শেষ করেছেন অপরাজেয় একা ও ক্রান্তিকাল ছবি দুটির কাজ।
বাংলাদেশ ফিল্ম ইনস্টিটিউট ও আর্কাইভ পরিচালিত অ্যাপ্রিসিয়েশন কোর্সের প্রশিক্ষক ছিলেন সৈয়দ সালাহউদ্দিন জাকী। গবেষক-লেখক অনুপম হায়াৎ রচিত ‘বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাস’ গ্রন্থটি প্রকাশের অন্যতম উদ্যোক্তা ছিলেন তিনি।
৯৬তম অস্কারের সেরা আন্তর্জাতিক পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমা (বিদেশি ভাষার প্রতিযোগিতা) শাখায় জমা দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের সিনেমা মনোনয়নের জন্য বাংলাদেশ ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজের উদ্যোগে সৈয়দ সালাউদ্দিন জাকীকে চেয়ারম্যান করে ৭ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়।
কিন্তু গুণী এই মানুষের প্রয়াণে সেই কার্যক্রম স্তিমিত হয়ে গেল। দেশবরেণ্য এ পরিচালক ২০২৩ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর পাড়ি জমালেন না ফেরার দেশে।