হলিউড মাতাচ্ছেন কুমিল্লার ছেলে জিসান

মোজাহিদা মোশাররাত

মার্চ ১১, ২০২৩, ১০:১৪ পিএম

হলিউড মাতাচ্ছেন কুমিল্লার ছেলে জিসান

২০২১ সালে মুক্তি পাওয়া অস্কারজয়ী পরিচালক স্টিভেন স্পিলবার্গের মিউজিক্যাল রোমান্টিক ড্রামা মুভি ‘ওয়েস্ট সাইড স্টোরি’র টেলিভিশন ট্রেলার তৈরি করেছেন, বাংলাদেশের তরুণ গ্রাফিক্স ডিজাইনার কামরুল হাসান জিসান। 

এখানেই শেষ নয়, হলিউডেরমোশন গ্রাফিক ডিজাইনার হিসেবে জিসানের হাতে তৈরি হয়েছে ডক্টর স্ট্রেইঞ্জ, ব্যটম্যান, এলভিস', 'মাফিয়া মাম্মা', 'দ্যা রিংস অব পাওয়ার', 'ইন্ডিয়ানা জোন্স অ্যান্ড দ্য ডায়াল অফ ডেসটিনি' এবং 'এভাটার- দ্যা ওয়ে অফ ওয়াটারসহ আরো অনেক বেশ কিছু সিনেমার ট্রেইলার।কুমিল্লার লাকসামের এই তরুণ ভবিষ্যতে হতে চান হলিউডের আর্ট ডিজাইনার।

কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছাড়াই  স্বপ্ন আর কঠোর পরিশ্রমে জায়গা করে নিয়েছে লস এঞ্জেলসে। তনে এখানেই থেমে যেতে নারাজ রাজধানীর আহসান উল্লাহ ইউনিভার্সিটিতে ড্রপ আউট হওয়া এই তরুণ।

জিসান জানান, তিনি নিজেও একসময় ডুবে থাকতাম হলিউডের সিনেমায়। তবে সিনেমার চেয়ে তার বেশি টানত ট্রেলার ও টিজার। কখনও কল্পনাও করেননি হলিউডে এসে এমন কাজ করবেন তিনি। 

২০০২ সালে হলিউডের এক মুভিতে গ্রাফিক্সের কাজ দেখে মুগ্ধ হয়ে এই কাজ শেখার ইচ্ছা জাগে জিসানের। ২০০৭ সালে ফটোশপের এক মাসের কোর্স করেন লাকসামে।  পরে ঢাকায় এসে ইউটিউব দেখে ফটোশপের অ্যাডভান্স কাজ শিখতে শুরু করেন। ২০১৩ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত কাজ করেনে  ফ্রিল্যান্সার হিসেবে।

তবে লাকসাম থেকে লস এঞ্জেলসের এই যাত্রা সহজ ছিল না। হলিউডে যাত্রার বিষয়ে তিনি জানান, ২০১৬ সালে নিউইয়র্কে পাড়ি দিই। সেখানে  এক পত্রিকায় গ্রাফিক্স ডিজাইনারের কাজও করেন তিনি। পেশাগত কাজে তেমন জ্ঞান না থাকায় কঠিন সময় পার করতে হয় তাকে। কাজ করতে হয় রেস্টুরেন্টেও।

মাত্র ২০০ মার্কিন ডলার সম্বল করে নিউইয়র্ক থেকে লস এঞ্জেলসে স্বপ্ন সত্যি করতে আসা এই তরুণ জানান, তিনি মনে করেন না, হলিউডে কাজ করতে সিনেমায় প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার প্রয়োজন আছে।

কামরুল হাসান জিসাস জানান, ২০১৭ সালে নিউইয়র্ক ছেড়ে চলে আসেন লস অ্যাঞ্জেলসে। করোনা মহামারির সময় চাকরি ছেড়ে ভিডিও টিউটোরিয়াল থেকে মোশন গ্রাফিক ডিজাইন শিখতে শুরু করেন।পাশাপাশি চলচ্চিত্রের গ্রাফিক্সে প্রয়োজনীয় নতুন সফটওয়্যার, যেমন- আফটার ইফেক্টস, সিনেমা ফোরডি, হুডিনি ও নিউকের কাজ শেখেন। এসবের পেছনে দৈনিক ১৫ থেকে ১৮ ঘণ্টা ব্যয় করলেও হাল ছাড়েননি তিনি।

২০২১ সালের নভেম্বর মাসে ভাগ্য ফেরে তার। ওয়াইল্ড কার্ড ক্রিয়েটিভে চাকরির জন্য নির্বাচন হন তিনি।তারপর থেকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তার। একের পর এক ব্লকবাষ্টার কনটেন্টের ট্রেলার র্নিমাণের কাজে যুক্ত হন তিনি।

জিসান ভবিষ্যতে স্বপ্ন দেখেন একজন আর্ট ডিজাইনার বা শিল্প পরিচালক হিসেবে স্বপ্নের গোল্ডেন গ্লোব জেতার। তিনি এই স্বপ্ন কেবল দেখছেন না, এটি বাস্তবায়নের পথেও হাঁটছেন। এর জন্য প্রস্তুতি নেওয়ারে পাশাপাশি পরিশ্রমও করছেন ৩২ বছর বয়সী এই যুবক।

 

 

Link copied!