শেষবারের মতো প্রিয় সান্তোসের মাঠে ২৪ ঘণ্টা কাটিয়ে ফুটবলের মহানায়ক পেলে সমাহিত হলেন সান্তোসের মেমোরিয়াল নেক্রোপোল ইকুমেনিকা সমাধিক্ষেত্রে। সান্তোসের এই সমাধিক্ষেত্রের দশম তলায় পারিবারিক আয়োজনে সমাহিত করা হয় পেলেকে।
পেলে ইতিহাসের একমাত্র খেলোয়াড় যিনি এই সমাধিক্ষেত্রে সমাহিত হয়েছেন। তিন বিশ্বকাপ জয়ী পেলে খেলোয়াড় জীবনে দশ নম্বর জার্সি পরেছেন বলে এই সংখ্যাটি তাঁর খুব প্রিয় এবং সে কারণে দশ নম্বর তলা বেছে নেওয়া হয়েছে তাঁর চিরঘুমের স্থান হিসেবে।
বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) ৮২ বছর বয়সে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান পেলে। ভক্তদের ভালোবাসা নিয়ে প্রিয় ঘর সান্তোস ঘুরে মঙ্গলবার তাঁকে বিদায় জানানো হলো চিরকালের মতো। যদিও সবার মনের গহীনে ঠিকই কাল থেকে কালান্তরে থেকে যাবেন ‘ও রেই।’ শেষ শ্রদ্ধার অনুষ্ঠানে ভক্তরাও প্রিয় পেলের স্মরণে এই কথাই বলেছেন।
সোমবার সকাল ১০টা থেকে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন ভক্তরা। পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় পুরো সান্তোসের মানুষ যেন জড়ো হয়েছিলেন সেখানে। পরে শহরের বিভিন্ন রাস্তায় তিন ঘণ্টার বেশি সময়ের যাত্রা শেষে পেলেকে নিয়ে যাওয়া হয় সমাধিক্ষেত্রে। রাস্তার দুই ধারে অগণিত মানুষ শেষবারের মতো বিদায় জানান পেলেকে।
শেষবারের মতো ছেলেকে দেখতে সান্তোসের মাঠে এসেছিলেন ফুটবল কিংবদন্তির শতবর্ষী মা। পরে বাড়ির সামনে দিয়ে শেষ যাত্রায়ও বাসার ছাদ থেকে দেখেন তিনি।
খেলোয়াড়ি জীবনের পুরোটা সান্তোসে কাটিয়েছেন পেলে। ব্রাজিল সরকার ‘রাষ্ট্রীয় সম্পদ’ ঘোষণা করায় পেলের দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বাইরে খেলা হয়নি। যদিও ক্যারিয়ারের পড়ন্ত বিকেলে যুক্তরাষ্ট্রের কসমস ক্লাবে খেলেছিলেন কিছুদিন।
আসলে পেলে এবং সান্তোস এমনই অবিচ্ছিন্ন সুতোয় গাঁথা যে, এই গ্রেট সবসময় চাইতেন তাই জীবনের শেষ যাত্রাও যেন সান্তোস থেকে হয়। বিবিসির সাথে আলাপচারিতায় ক্লাবটির বোর্ডের সদস্য রেনাতো হাগোপিয়ান জানান, ‘পেলে সবসময় চাইতেন তাঁর শেষকৃত্য যেন সান্তোসে হয়, যেখানে তিনি জন্মেছিলেন, একজন ক্রীড়াবিদ এবং ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবে বেড়ে উঠেছিলেন। পেলেকে ধন্যবাদ, দ্য কিং, সান্তোসের নাম (সমার্থক)-এই ক্লাব, এই শহর-সবসময় তার মনের গহীনে ছিল।’