এক ম্যাচ হাতে রেখে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতল বাংলাদেশ। চতুর্থ ম্যাচে তারা ৬ উইকেটে হারাল নিউজিল্যান্ডকে। ৯৪ রানের টার্গেট ছিল। ১৯.১ ওভারে জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ (৯৬/৪)।
সিরিজ জয়ে বাংলাদেশের হ্যাটট্রিক। পরপর টানা তিন সিরিজে দাপুটে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ে, অস্ট্রেলিয়ার পর এবার নিউজিল্যান্ডকেও হারিয়ে সিরিজ জয়ের হ্যাটট্রিক করলো টাইগাররা। কিউইদের সঙ্গে পাঁচ ম্যাচের সিরিজ এক ম্যাচ হাতে রেখেই নিশ্চিত করেছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।
আজ বুধবার মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে টসে জিতে টাইগারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে চার বল বাকি থাকতেই ৯৩ রানে গুটিয়ে যায় সফরকারীরা। ছোট লক্ষ্য তাড়ায় পাঁচ বল বাকি থাকতেই ৬ উইকেট হাতে রেখে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। অজিদের মতো কিউইদের বিপক্ষেও টি-টোয়েন্টিতে প্রথম সিরিজ জয়ের স্বাদ পেল বাংলাদেশ।
ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে এসে আজও ওপেনিং ব্যর্থতা ভোগে বাংলাদেশ। মাত্র আট রানের মাথায় ওপেনার লিটন দাসকে ফেরান কোল ম্যাকননিক। ১১ বলে মাত্র ৬ রান করে মিড-উইকেটে থাকা অ্যালেনের তালুবিন্দ হন তিনি। তিনে এসে সুবিধা করতে পারেননি সাকিব আল হাসান। একপাশে রান তোলেন নাঈম শেখ। অন্য পাশে মাত্র ৮ রান করে অ্যাজাজ প্যাটেলের শিকার হন তিনি। একই ওভারের শেষ বলে মুশফিককে শূন্য রানে ফেরান এই স্পিনার।
মাত্র ৩২ রান তুলতেই তিন ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে বিপাকে পড়ে স্বাগতিকরা। ম্যাচের এমন মূুহূর্তে মাঠে আসেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। একপাশ আগলে রাখা ওপেনার নাঈম শেখকে সঙ্গী করে দারুণ প্রতিরোধ গড়ে তুলেন তিনি। খাদের কিনারা থেকে দলকে ভালো অবস্থানে টেনে তোলেন এই যুগল। ৬৭ রানের মাথায় জোড়া রান নিতে গিয়ে রানআউট হন নাঈম। ৩৫ বল মোকাবেলায় ২৯ রান তোলেন এই ওপেনার।
পাঁচে এসে মাহমুদউল্লাহকে দারুণ সঙ্গ দেন আফিফ হোসেন ধ্রুব। এই যুগলের ২৯ রানে অপরাজিত জুটিতে ৬ উইকেটের জয় পায় বাংলাদেশ। টানা তিন সিরিজ জয়ের স্বাদ মেলে স্বাগতিকদের। ব্যাট হাতে অপরাজিত ৪৩ রানের ইনিংস উপহার দেন অধিনায়ক রিয়াদ।
এর আগে ব্যাট করতে এসে শুরুটা ভালো হয়নি নিউজিল্যান্ডের দুই ওপেনার রাচীন রবীন্দ্র ও ফিন অ্যালেনের। প্রথম ওভারেই শূন্যরানে সাজঘরে ফেরেন রাচীন। নিজের পরের ওভারে এসে আরেক ওপেনার অ্যালনকে (১২) সাজঘরে ফেরান এই স্পিানার। প্রথম পাওয়ার প্লে’তে দুর্দান্ত বোলিং করে বাংলাদেশ। ৬ ওভারে দুই উইকেট শিকারের পাশাপাশি ডট বল দেয় ২৩টি। বিপরীতে মাত্র ২২ রান তোলে কিউইরা। যদিও পাওয়ার প্লের মধ্যে একটি রিভিউ নষ্ট করে বাংলাদেশ। তার খানিক পর আরও একটি রিভিউ নষ্ট হয়। ধীর গতি ব্যাটিয়ে ১০ ওভার ২ বলে দলীয় অর্ধশতক পূর্ণ করেছিল কিউইরা।
শুরুতে দুই উইকেট হারানোর পর টম ল্যাথামের সঙ্গে ৩৫ রানের জুটি গড়েন উইল ইয়াং। ১১তম ওভারের তৃতীয় বলে ল্যাথামকে (২১) সাজঘরে ফেরান মেহেদী। সামনের দিকে এসে খেলতে চেয়েছিলেন ল্যাথাম। ব্যাটে বলে হয়নি, সরাসরি সোহানের স্ট্যাম্পিং হন তিনি। পরের ওভারে এসে জোড়া আঘাত হানেন নাসুম। শুরুতে হেনরি নিকোলস এবং পরের বলে কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমকে ফেরান তিনি।
হ্যাটট্রিকের সুযোগ ছিল এই স্পিনারের সামনে তবে নতুন ব্যাটসম্যান টম ব্লান্ডেল লাপিয়ে উঠা বলটি ব্যাট না বাড়িয়েই ছেড়ে দেন। পুরো ওভারে কোনো রান না দিয়ে দারুণ দুটি উইকেট তুলে নেন নাসুম। চার ওভারে দুই মেডেনে মাত্র ১০ রান দিয়ে চার উইকেট নেন এই স্পিনার।
১৬তম ওভারে বল করতে এসে দ্বিতীয় বলেই ব্লান্ডেলকে সাজঘরে ফেরান মুস্তাফিজ। মিডঅনে থাকা নাঈম শেখের দারুণ ক্যাচে ১০ বলে মাত্র চার রান করেন ফেরেন এই ব্যাটসম্যান। একই ওভারের শেষ বলে কোল ম্যাকনজিকে নিজের বলে নিজেই দারুণ এক ক্যাচ নিয়ে ফেরান এই পেসার। ১৪তম ওভারে ইনজুরি নিয়ে মাঠ ছাড়া সাইফউদ্দিন ফেরেন ১৯তম ওভারে। ফিরেই অ্যাজাজ প্যাটেলকে বোল্ড করেন এই পেসার। শেষ ওভারে এসে জোড়া আঘাতে কিউইদের ৯৩ রানে থামিয়ে দেন মুস্তাফিজ।