নভেম্বর ২৯, ২০২৩, ১১:০৫ এএম
দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথম টেস্টে প্রথম ইনিংসে ৩১০ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। জবাবে ব্যাট করতে নেমে কেন উইলিয়ামসনের সেঞ্চুরিতে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৬৬ রান সংগ্রহ করে দ্বিতীয় দিন শেষ করেছে সফরকারীরা। উইলিয়ামসনের সেঞ্চুরির পরও ৪৪ রানে পিছিয়ে আছে কিউইরা।
সিলেট টেস্ট স্পিনবান্ধব উইকেটে হতে যাচ্ছে এমন আভাস মিলছিল দুই দলে স্পিনারদের ছড়াছড়ি দেখেই। দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে এখন পর্যন্ত উইকেটের পতন হয়েছে ১৮টি। যার মধ্যে ১৪ উইকেটই তুলে নিয়েছেন স্পিনাররা। বাংলাদেশের বিপক্ষে ত্রাস ছড়ানো নিউজিল্যান্ডের পার্ট-টাইমার গ্লেন ফিলিপসের চার উইকেটের পর দ্বিতীয় দিনে আজ সমান চার উইকেট তুলে নিয়ে বদলা নিলেন টাইগার স্পিনার তাইজুল ইসলাম। তার বোলিং নৈপুণ্যে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে লিডের আশা স্বাগতিকদের।
কিউইদের প্রথম উইকেটটা পান তাইজুল ইসলাম। ১৩তম ওভারে বোলিংয়ে এসে প্রথমে একটি এলবিডব্লিউয়ের জোরালো আবেদন করেন তিনি। ওই ওভারেই তাকে সুইপ করতে গেলে ব্যাটের আগায় লেগে ক্যাচ যায় ফাইন লেগে দাঁড়ানো নাঈম হাসানের হাতে। ৪৪ বলে ২১ রান করেন তিনি।
এরপর দ্বিতীয় উইকেটটিও বাংলাদেশের জন্য আসে দ্রুতই। শরিফুলকে সরালেও আরেক প্রান্তে চালিয়ে যাওয়া মিরাজ এবার উইকেট নেন। ফরোয়ার্ড ডিফেন্স করতে গিয়ে সিলি পয়েন্টে শাহাদাৎ হোসেন দীপুর দুর্দান্ত ক্যাচ হয়ে ৪০ বলে ১২ রান করে সাজঘরে ফেরেন ডেভন কনওয়ে।
এরপর জুটি বাধেন কেইন উইলিয়ামসন ও হেনরি নিকোলস। এই দুইজনের জুটিতেই লাঞ্চে বিরতিতে যায় দুইদল। সেখান থেকে ফেরার পরও স্পিনাররা উইকেট নিতে পারছিলেন না। এর মধ্যে ত্রাতা হন একমাত্র পেসার শরিফুল ইসলাম।
৪২ বলে ১৯ রান করা নিকোলস উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহানের হাতে ক্যাচ দেন। এরপর উইলিয়ামসনের সঙ্গী হন ড্যারল মিচেল। দুজন মিলে গড়েন ৬৬ রানের জুটি। সেটি ভাঙেন তাইজুল ইসলাম।
এগিয়ে এসে তাকে মিচেল খেলতে যান, তখন বল একটু শর্ট লেন্থে করেন তাইজুল; বল টার্ন করে বেরিয়ে যায়। বল পেয়ে স্টাম্প ভাঙতে ভুল করেননি সোহান। মিচেল অবশ্য ফিরতে পারতেন আগেই, কিন্তু তখন রিভিউ নেয়নি বাংলাদেশ।
দ্বিতীয় সেশনটা পুরোপুরি বাংলাদেশের হতে পারতো, কিন্তু হয়নি তাইজুলের জন্য। নাঈম হাসানের বলে মিড অফে দাঁড়িয়ে উইলিয়ামসনের সহজ ক্যাচ ছাড়েন তিনি। এর জন্য লম্বা সময় ধরেই ভুগতে হয়েছে বাংলাদেশকে।
কেন উইলিয়ামসনের টেস্ট ক্যারিয়ারের ২৯ তম সেঞ্চুরি। ছবি: সংগৃহীত
জীবন পাওয়ার পর টেস্ট ক্যারিয়ারের ২৯তম সেঞ্চুরিটা পেয়ে যান উইলিয়ামসন। মিচেলের পরে তিনি থাকতেই অবশ্য তার দুই সঙ্গীকে ফেরাতে পেরেছে বাংলাদেশ। টম ব্লান্ডেল একইরকম ক্যাচ দেন যেমনভাবে আউট হয়েছিলেন নুরুল হাসান সোহান, উইকেট নেন নাঈম হাসান। লেগ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল ব্যাট ছুয়ে যায় সোহানের কাছে।
এরপর উইলিয়ামসন আরও একটি জুটি গড়েন টম ব্লান্ডেলের সঙ্গে। তাদের এই জুটি ভাঙেন নাঈম হাসান। দিনে বেশ কয়েকবার বোলিং বদলে সফল হন টেস্ট অধিনায়কত্বের অভিষেক হওয়া নাজমুল হোসেন শান্ত। মমিনুলের কিছুটা টার্ন করা বলে স্লিপে দাঁড়ানো শান্তর হাতে ক্যাচ দেন ফিলিপস। ৬২ বলে ৪২ রান করেন তিনি। এর মধ্যে উইলিয়ামসন তুলে নেন সেঞ্চুরি। ডন ব্র্যাডম্যান, শচীন টেন্ডুলকার ও বিরাট কোহলির পর সবচেয়ে কম ইনিংসে ২৯তম টেস্ট সেঞ্চুরি পান কিউই এই ব্যাটার।
দিনটা বাংলাদেশ নিজেদের করে নেয় উইলিয়ামসনকে ফিরিয়েই। ১১ চারের ইনিংসে ২০৫ বলে ১০৪ রান করেন তিনি।
বাংলাদেশের হয়ে ৪ উইকেট শিকার করেন তাইজুল। এছাড়া ১টি করে উইকেট শিকার করেন মুমিনুল হক, মেহেদী হাসান মিরাজ, নাঈম হাসান এবং শরিফুল ইসলাম।