ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৫, ০৩:৪৩ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
‘স্বাগতিক পাকিস্তান, কিন্তু ঘরের মাঠের সুবিধাটা পাচ্ছে ভারত’—সম্প্রতি আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভারতের বিশেষ সুবিধা পাওয়া নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্টের সূত্র ধরে কথাটা বলেছিলেন সাবেক ইংল্যান্ড অধিনায়ক নাসের হুসেইন। স্বাগতিক হয়েও গ্রুপ পর্বের ম্যাচ খেলতে পাকিস্তানকে যেখানে আরব আমিরাতে ভ্রমণ করতে হয়েছে, সেখানে দুবাইয়ে থেকেই নিজেদের সব ম্যাচ খেলছে ভারত।
একই মাঠ ও কন্ডিশনে খেলতে পারা এবং ভ্রমণের ধকল এড়িয়ে ভারত যে আলাদা সুবিধা পাচ্ছে, সেদিকটায় ইঙ্গিত করেই কথাটা বলেছিলেন নাসের। এবার একই সুর শোনা গেল দক্ষিণ আফ্রিকার টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান রেসি ফন ডার ডুসেনের মুখেও। তিনি বলেছেন, ভারত যে বিশেষ সুবিধা পাচ্ছে, সেটি বুঝতে ‘রকেটবিজ্ঞানী’ হওয়ার প্রয়োজন নেই। অর্থাৎ ভারতের সুবিধা পাওয়ার বিষয়টি এমনিতে স্পষ্ট, সে জন্য বিশেষ কোনো গবেষণার প্রয়োজন নেই।
দক্ষিণ আফ্রিকা যেমন এখনো জানে না সেমিফাইনাল বা ফাইনালে খেলার সুযোগ পেলে তারা কোথায় খেলবে—দুবাইয়ে, নাকি পাকিস্তানে! অন্যদিকে ভারত আগে থেকেই জানে, কোন মাঠে এবং কী ধরনের কন্ডিশনে তারা সেমিফাইনাল ও ফাইনাল ম্যাচ খেলবে। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে এ সুবিধা একমাত্র ভারত ছাড়া আর কেউই পাচ্ছে না।
চ্যাম্পিয়নস ট্রফির স্বাগতিক দেশ পাকিস্তানে গিয়ে খেলতে অস্বীকৃতি জানায় ভারত। পরে হাইব্রিড পদ্ধতিতে এই টুর্নামেন্ট আয়োজন করা হয় এবং ভারতের ম্যাচগুলো দুবাইয়ে খেলানোর সিদ্ধান্ত হয়। যে কারণ স্বাগতিক হয়েও পাকিস্তানকে ভারতের বিপক্ষে খেলার জন্য দুবাইয়ে যেতে হয়েছে।
ভারতের এমন সুবিধা পাওয়া নিয়ে করাচিতে আগামীকাল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ সামনে রেখে ডুসেন বলেছেন, ‘এটা নিশ্চিতভাবেই সুবিধা। আমি দেখেছি পাকিস্তান এ নিয়ে মন্তব্য করছে। এটা অবশ্যই একটা সুবিধা। আপনি যদি একটা জায়গায় থাকেন, একই হোটেলে অবস্থান করেন, একই সুবিধা নিয়ে অনুশীলন করেন, একই স্টেডিয়ামে এবং একই উইকেটে খেলেন, সেটা তো অবশ্যই সুবিধা। আমার মনে হয় না এটা বোঝার জন্য রকেটবিজ্ঞানী হওয়ার প্রয়োজন আছে।’
তবে এ সুবিধার যে একটা চাপ আছে, সেটাও অবশ্য মনে করিয়ে দিয়েছেন ডুসেন, ‘এখন এটা তাদের দায়িত্ব যে সুবিধাটাকে ব্যবহার করা। এক অর্থে, এটা তাদের ওপর আরও চাপ তৈরি করে; কারণ, যারাই সেমিফাইনাল কিংবা সম্ভাব্য ফাইনাল খেলবে, তাদের সেখানে যেতে হবে এবং এই কন্ডিশন তাদের জন্য পুরোপুরি অপরিচিত। কিন্তু ভারত এটাতে অভ্যস্ত। তাদের ওপর সবকিছু ঠিকঠাক করার চাপ থাকবে; কারণ, তাদের সবকিছুই জানা আছে।’
এর আগে ভারতের সুবিধা পাওয়া নিয়ে কথা বলেছেন পাকিস্তান কোচ আকিব জাভেদও। তিনি বলেছিলেন, ‘যদি আপনি একই উইকেট এবং মাঠে খেলেন, অবশ্যই সুবিধা পাবেন। তবে আমরা এ জন্য হারিনি যে তারা একই হোটেলে থাকার এবং একই উইকেটে খেলার সুবিধা পাচ্ছে। এটা শুধু উইকেটের কিংবা একই মাঠে অনেকগুলো ম্যাচ খেলার ব্যাপার নয়।’
একইভাবে ভারতের সুবিধা দেখেছেন চোটের কারণে বাইরে থাকা অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক প্যাট কামিন্সও। ইয়াহু স্পোর্টস অস্ট্রেলিয়াকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কামিন্স বলেছেন, ‘এটা ভালো ব্যাপার যে টুর্নামেন্টটা হচ্ছে। তবে অবশ্যই এটা ভারতকে একই মাঠে খেলার অনেক বড় সুবিধা দিচ্ছে।’
তবে ভারতের সুবিধা পাওয়ার বিষয়টিকে দূরে সরিয়ে রেখেই আপাতত সেমিফাইনাল নিশ্চিত করায় মনোযোগ দিতে হবে দক্ষিণ আফ্রিকাকে। আজ অস্ট্রেলিয়া-আফগানিস্তান ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া জিতলে নিশ্চিত হবে প্রোটিয়াদের সেমিফাইনাল। নয়তো আগামীকাল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জিততে হবে।