রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে ঊর্ধ্বগামী নিউজিল্যান্ড

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

নভেম্বর ১১, ২০২১, ০৬:১৪ এএম

রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে ঊর্ধ্বগামী নিউজিল্যান্ড

রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে দর্শকের মন মাতিয়ে হারলো ইংল্যান্ড, জিতলো কিউইরা। ঊর্ধ্বগামী যাত্রায় অব্যাহত রইলো কিউইদের। শিরোপা থেকে আর মাত্র এক পা দূরে। ফাইনালটা জিততে পারলেই চির অধরা শিরোপা যাবে ঘরে।

২০১৯ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালে ইংল্যান্ডের কাছে হেরেই শিরোপার খরা দীর্ঘায়িত হয়েছে নিউজিল্যান্ডের। আজকের ম্যাচ যেন নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেটারদের প্রতিশোধ নেওয়ার মঞ্চ। ওয়ানডে বিশ্বকাপ হারের জবাবটা ভালোভাবেই দিয়েছে কিউইরা। ফাইনালের আগেই এবার বিশ্বমঞ্চ থেকে ইংল্যান্ডকে বিদায় করে দিল তারা। ইংলিশদের স্বপ্ন ভেঙে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠল নিউজিল্যান্ড। রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে পাঁচ উইকেটের জয় নিয়ে ফাইনালে পা রাখল কেন উইলিয়ামসনের দল।

এই প্রথম কোন টি-২০ বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠল নিউজিল্যান্ড।

বুধবার (১০ নভেম্বর) চলতি টি-২০ বিশ্বকাপের প্রথম সেমিফাইনালে টসে হেরে আগে ব্যাট করে ইংলিশরা। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৬৬ রান সংগ্রহ করে তারা। সর্বোচ্চ ৫১ রান করেন মঈন আলী।

জবাবে ১ ওভার হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে নোঙর করে নিউজিল্যান্ড। ১৯ ওভারে ৫ উইকেট হাতে রেখেই ১৬৭ রান করে কিউইরা। কিউই ওপেনার মিচেল দলের হয়ে ৪৭ বলে সর্বোচ্চ ৭৩ রান করে অপরাজিত থাকেন।

ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় নিউজিল্যান্ড। প্রথম ওভারেই বাউন্ডারি হাঁকিয়ে রানের খাতা খোলা মার্টিন গাপটিল ক্রিস ওকসের স্লোয়ার ডেলিভারিতে ক্যাচ দেন। ক্যাচ ধরে তাকে সাজঘরের পথ দেখান মঈন আলী।

ওয়ানডাউনে নামা অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনও দলের ভার নিতে ব্যর্থ। খেলার তৃতীয় ওভারেই তাকেও ফিরতে হয়। এবারও শিকারী ওকস। উইলিয়ামসন ১১ বলে পাঁচ রান করে সাজঘরে ফিরলে দ্রুত দুই টপ অর্ডারকে হারিয়ে চাপে পড়ে যায় নিউজিল্যান্ড।

তৃতীয় উইকেটে মিচেলের সঙ্গে হাল ধরেন ডেভন কনওয়ে। দুজনে মিলে লম্বা সময় টিকে ছিলেন। কিন্তু রান নিতে ধুঁকতে হয়েছে দুজনকেও। তবুও ৬৭ বলে ৮২ রানের জুটি উপহার দেন মিচেল-কনওয়ে। ১৪তম ওভারে ওই জুটি ভাঙেন লিয়াম লিভিনস্টোন। ৪৬ রানে ফিরে যান কনওয়ে। ৩৮ বলে ৫ বাউন্ডারি ও এক ছক্কায় সাজানো ছিল তাঁর ইনিংস।

এরপর উইকেটে এসে টিকতে পারলেন না গ্লেন ফিলিপসও। দ্রুত উইকেট হারানোর সঙ্গে রানরেটও বাড়তে থাকে। এক পর্যায়ে মনে হয়েছিল ম্যাচ থেকে ছিটকে যাবে কিউইরা। কিন্তু উইকেটে এসে ম্যাচের দৃশ্যই পাল্টে দেন নিশাম। ১১ বলে ২৭ রান করে ম্যাচ কিউইদের পক্ষে এনে দেন। তার দেখানো পথ ধরে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন মিচেল।

আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে এর আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা সতর্কভাবেই করে ইংল্যান্ড। আজ ওপেনিংয়ের দায়িত্ব সামলান জস বাটলার ও জনি বেয়ারস্টো। পাওয়ার প্লেতে প্রথম তিন ওভারে দুজনে তোলেন ১৩ রান, পরের তিন ওভারে আসে ২৭ রান। মোট ছয় ওভারে আসে ৪০ রান।

কিন্তু দুই ওপেনার ভালো কিছুর আভাস দিয়েও টিকে থাকতে পারেননি। জুটিতে ভালো সাফল্য পায়নি ইংলিশরা। সাবধানী শুরুর পর দুজনেই ফিরেছেন সাজঘরে। সেট হয়ে টিকতে পারেননি একজনও।

ষষ্ঠ ওভারে বোলিংয়ে এসে নিউজিল্যান্ডকে প্রথম সাফল্য এনে দেন অ্যাডাম মিলনে। ডানহাতি পেসারের ফুলার লেন্থ বল মারতে গিয়ে মিড অফে ক্যাচ তুলে দেন বেয়ারস্টো। সেখানে থাকা উইলিয়ামসন দুর্দান্ত ক্যাচ নিয়ে বিদায় করেন ইংলিশ তারকাকে। ১৭ বলে ১৩ রান করে ফেরেন বেয়ারস্টো।

বেয়ারস্টোর পর বেশিক্ষণ টিকলেন না বাটলারও। ইশ শোধির বলে রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে এলবির ফাঁদে পড়েন তিনি। রিভিউ নিয়ে বাঁচতে চাইলেও শেষ রক্ষা হয়নি। ২৪ বলে ২৯ রান করে সাজঘরে ফেরেন বাটলার।

দুই ওপেনারকে হারানোর পর প্রতিরোধ গড়েন মঈন আলী ও ডেভিড মালান। এই জুটিতে স্কোরবোর্ডে ৬৩ রান তোলে ইংল্যান্ড। ১৬তম ওভারে এই জুটি ভাঙেন টিম সাউদি। চার বাউন্ডারি ও এক ছক্কায় ৩০ বলে ৪১ করে ফেরেন মালান। তারপর উইকেটে এসে ফিরে যান লিয়াম লিভিংস্টোনও।

তবে মালান-লিয়াম ফিরলেও টিকে ছিলেন মঈন। দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে দলকে টেনে নেন তিনি। শেষ ওভারে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ৩৬ বলে তুলে নেন ব্যক্তিগত হাফসেঞ্চুরি। তাঁর ব্যাটে চড়েই শেষ পর্যন্ত ১৬৬ রানের পুঁজি পায় ইংলিশ। ইনিংস শেষে ৫১ রানে অপরাজিত ছিলেন মঈন। ৩৭ বলে তাঁর ইনিংসে ছিল তিন বাউন্ডারি ও দুই ছক্কা।

নিউজিল্যান্ডের হয়ে বল হাতে ২৪ রান দিয়ে এক উইকেট নেন সাউদি। ৩২ রান খরচায় সমান একটি নেন ইশ শোধি। ৩১ রান দিয়ে অ্যাডাম মিলনেও নেন একটি।

Link copied!