ফ্রান্স বনাম আর্জেন্টিনা। বাংলাদেশ সময় রাত ৯টার দিকে দোহারের লুসাইল স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হচ্ছে বর্তমান ও সাবেক চ্যাম্পিয়নরা। গোটা দুনিয়ার কোটি কোটি চোখ থাকবে কাতারের ওই মাঠে। চোখ থাকবে ফুটবল দুনিয়ায় ‘সবচেয়ে সুন্দরী রেফারি’ কারোলিনা বোজার স্টেফান্সকারও।
ক্যারোলিনাকে ‘বিশ্বের সেক্সিয়েস্ট রেফারি’ হিসেবেও অভিহিত করা হয়ে থাকে। কাতার বিশ্বকাপের এই ফাইনাল ম্যাচে ফরাসি বা আর্জেন্টিনিয়ের থেকে তাঁর উচ্ছ্বাস এতটুকু কম নয়। সেই উচ্ছ্বাসের অন্য একটি কারণও রয়েছে। ‘এ হেন কারোলিনা কেন এত উচ্ছ্বসিত?
কারোলিনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যেমে লিখলেন, ‘‘গর্বিত! রবিবার আমরা সকলে সিমোন এবং তাঁর দলের জন্য প্রার্থনা করব। অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করব।”
বিশ্বের সেক্সিয়েস্ট রেফারি উচ্ছ্বসিত কেন?
কারোলিনার উচ্ছ্বাসের, গর্বের কারণ হল তাঁর দেশ পোল্যান্ড। দেশটির অন্যতম সেরা রেফারি সাইমন মার্সিনিয়াকের জন্য। কারণ তাঁর হাতেই আপাতত ঝুলছে আর্জেন্তিনা এবং ফ্রান্সের ভাগ্য তথা লিওনেল মেসি এবং এমবাপের ভাগ্য।
বলা ভাল, মেসি, এমবাপেদের খেলাবেন সাইমন। তিনি বিশ্বকাপ ফাইনালে আর্জেন্টিনা বনাম ফ্রান্স ম্যাচের রেফারি।
গ্রুপ লিগে ফ্রান্স এবং ডেনমার্ক ম্যাচে রেফারি ছিলেন মার্সিনিয়াক। আবার প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে আর্জেন্টিনা বনাম অস্ট্রেলিয়ার ম্যাচও খেলিয়েছিলেন তিনিই।
এখন পর্যন্ত ২০০টিরও বেশি ফুটবল ম্যাচ খেলিয়েছেন পোলিশ রেফারি মার্সিনিয়াক। ম্যাচের সুবিচারক হিসাবে পোল্যান্ডের রেফারিদের মধ্যে তাঁর জায়গা উপরের দিকেই। এ হেন সহকর্মীকে নিয়েই উচ্ছ্বসিত কারোলিনা।
বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দরী রেফারি কে এই ক্যারোলিনা?
মাত্র ২৪ বছর বয়সী কারোলিনার জন্ম ক্রাকোতে। পোল্যান্ডের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন। পোল্যান্ডের দ্বিতীয় এবং তৃতীয় শ্রেণির ফুটবল ম্যাচে রেফারি হয়েছিলেন কারোলিনা।
সুন্দরী কারোলিনা এই পেশা বেছেছিলেন নিজের কারণে। তাঁর দাদা (বাবার বাবা) ছিলেন পেশাদার রেফারি। নিজের নাতনিকেও ফুটবল ভালবাসতে শিখিয়েছিলেন।
ছোট কারোলিনাকে নিয়ে ফুটবল ম্যাচ দেখতে বসতেন প্রবীণ। বুঝিয়ে দিতেন ম্যাচের নিয়মকানুন। তিনিই ছিলেন কারোলিনার অনুপ্রেরণা।
কারোলিনার তখন ১৭ বছর বয়স। রেফারি হওয়ার প্রশিক্ষণ নেওয়া শুরু করেন। পেশাদার একটি কোর্সেও ভর্তি হন। ভেঙে দেন অনেক পুরনো ধারণা। ফুটবল যে শুধুই পুরুষদের জন্য নয়, তা বুঝিয়ে দেন।
কারোলিনার স্বপ্ন ছিল, রেফারির লাইসেন্স পাবেন। প্রথম শ্রেণির ফুটবল ম্যাচে রেফারি হবেন। সেই স্বপ্ন ধীরে হলেও পূরণ করছেন কারোলিনা।
মাঠে খেলাতে নেমে প্রথমেই সংবাদমাধ্যমের নজরে পড়েন কারোলিনা। ‘সান পত্রিকা’ তাঁকে ‘সেক্সিয়েস্ট রেফারি’ ঘোষণা করে। ইনস্টাগ্রামে কারোলিনার ভক্তসংখ্যা এক লক্ষ ৫৯ হাজার।
তবে মাঠের ভিতরে কারোলিনা অন্য মানুষ। চরম পেশাদার। প্রত্যেক ম্যাচের আগে মহড়া দেন তিনি। বার বার বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, কাজের ক্ষেত্রে কোনও দল দেখেন না। কোনও দেশের রং দেখেন না।
ক্যারোলিনার ব্যক্তিগত জীবন
কারোলিনার স্বামী ড্যানিয়েল স্টেফানস্কিও পেশায় একজন রেফারি। বয়সে ২০ বছরের বড় ড্যানিয়েলকে প্রথম বার দেখেই প্রেমে পড়ে গিয়েছিলেন কারোলিনা।
ক্লাব স্তরের একটি ম্যাচে ড্যানিয়েলের সহকারী হয়েছিলেন কারোলিনা। সেই ম্যাচ থেকেই প্রেম। ২০২০ সালে বাগ্দান সেরেছিলেন তাঁরা। ওই বছর অক্টোবরে গ্রিসের সান্তোরিনিতে বিয়ে করেছিলেন কারোলিনা আর ড্যানিয়েল।
