কাতার ব্যয় করলো ২৩ হাজার কোটি ডলার; পাবে ১৭০০!

ক্রীড়া ডেস্ক

ডিসেম্বর ২০, ২০২২, ০৭:১০ এএম

কাতার ব্যয় করলো ২৩ হাজার কোটি ডলার; পাবে ১৭০০!

২৯ দিনে ৩২ দলের মধ্যে চললো ৬৪ ম্যাচ। আর্জেন্টিনার হলো জয়। লিওনেল মেসির হাতে উঠলো পরম আকাঙ্ক্ষার শিরোপা। সারা বিশ্ব এক জমকালো বিশ্বকাপ আয়োজন উপভোগ করলো। সর্বকালের সেরা এই বিশ্বকাপ আয়োজন করে বেশ বিতর্ক ও প্রশংসা পেয়েছে কাতার। আয়োজন শেষে প্রশ্ন এলো কাতারের আয় হলো কত? 

কাতার বিশ্বকাপ ২০২২-এর সিইও নাসের আল খাতের আশা প্রকাশ করেন, এ বিশ্বকাপ থেকে কাতারের আয় দাঁড়াবে ১৭০০ কোটি ডলার।

তবে অন্য খাতে বেশি লাভবান হয়েছে কাতার। দেশটির পর্যটন, হসপিটালিটি, খুচরা, পরিবহনসহ আরও অনেক খাত লাভবান হয়েছে। বিশ্বকাপ উপলক্ষে পর্যটকের যে ঢল নেমেছে মরুর দেশটিতে তাতে আর্থিকভাবে দেশটি ব্যাপকভাবে লাভবান হবে বলাই যায়।

গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাইট ফ্রাংক বলছে, ফুটবল বিশ্বকাপ ২০২২ উপলক্ষে কাতারে ১৫ লাখ দর্শনার্থীর সমাগম হয়। পরের বছর দেশটিতে অনুষ্ঠিত হবে ‘এশিয়ান কাপ-২০২৩’। তাই পর্যটকে আগমন আরও বাড়বেই। ২০৩০ সাল পর্যন্ত দেশটির হোটেল ও হসপিটালিটি খাতে প্রবৃদ্ধি ১২ শতাংশ করে হবে। এ খাতের মূল্য দাঁড়াবে ৫৫ বিলিয়ন ডলার। যা কাতারের জিডিপিতে ১২ শতাংশ অবদান রাখবে। 

নাইট ফ্রাংকের হিসাব মতে, ২০২৩ সালে কাতারে পর্যটক বেড়ে হবে ৫৪ লাখ এবং ২০৩০ সাল নাগাদ পর্যটক বেড়ে হবে ৭০ লাখ। এর পেছনে কাতারের ব্যয়ও কম নয়। ২০২২ সালের বিশ্বকাপ আয়োজনকে সামনে রেখে ১১ বছরে অবকাঠামো উন্নয়নে কাতার ব্যয় করেছে ২২৯ বিলিয়ন ডলার।

কাতারে বিশ্বকাপ আয়োজনে ব্যাপকভাবে লাভবান হয়েছে ফিফা। কাতার বিশ্বকাপ ঘিরে কেবল বাণিজ্যিক চুক্তি থেকেই ৭৫০ কোটি ডলার আয় হয়েছে ফিফার। ২০১৮ সালে রাশিয়া বিশ্বকাপের আয়ের তুলনায় এটি অন্তত ১০০ কোটি ডলার বেশি।

ফিফার আয় আসে মূলত পাঁচটি ক্যাটাগরি থেকে―টিভি সম্প্রচার স্বত্ব, বিপণন অধিকার, সেবা অধিকার ও টিকিট বিক্রি, নিবন্ধন অধিকার ও অন্যান্য লাভ। আয়ের সবচেয়ে বড় অংশটিই আসে সম্প্রচার স্বত্ব থেকে। ফিফার মোট আয়ে এর অবদান প্রায় ৫৬ শতাংশ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৯ শতাংশ দেয় বিপণন খাত। আর বাকি ১৫ শতাংশ আসে অন্য খাতগুলো থেকে।

ফিফার ওয়েবসাইটের তথ্য অনুসারে, ২০২২ ফুটবল বিশ্বকাপের সময় টেলিভিশন সম্প্রচার স্বত্ব থেকে তাদের আয়ের লক্ষ্য ছিল ২৬৪ কোটি ডলার। বিপণন অধিকার বিক্রি থেকে আয় ধরা হয়েছিল ১৩৫ কোটি ডলার। সেবা ও টিকিট বিক্রি থেকে ৫০ কোটি এবং নিবন্ধন অধিকার বিক্রি থেকে সম্ভাব্য আয় ধরা হয়েছিল ১৪ কোটি ডলার।

কেলার স্পোর্টসের সমীক্ষা বলছে, এ বছর বিশ্বকাপের ম্যাচগুলোতে টিকিটের দামও ছিল সর্বকালের সর্বোচ্চ। অর্থাৎ এত দামি টিকিট কেটে আগে কখনো বিশ্বকাপের খেলা দেখতে হয়নি ফুটবলপ্রেমীদের।

জার্মান সংস্থাটির হিসাবে, ২০১৮ বিশ্বকাপের তুলনায় ২০২২ বিশ্বকাপে টিকিটের দাম প্রায় ৪০ শতাংশ বেশি। কাতার বিশ্বকাপে ফাইনাল ম্যাচে প্রতিটি টিকিটের গড় দাম ছিল ৬৮৪ পাউন্ড, বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ৮৭ হাজার টাকার বেশি। ফলে গোটা টুর্নামেন্টে প্রতিটি আসনের জন্য গড়ে ২৮৬ পাউন্ড দামে ৩০ লাখের বেশি টিকিট বিক্রি হয়েছে ধরলে এই খাত থেকে ফিফার আয় হয়েছে প্রায় ১০০ কোটি ডলার। অর্থাৎ এ খাতে পূর্বধারণার চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ আয় হয়েছে সংস্থাটির। 

Link copied!