ডিসেম্বর ১৭, ২০২২, ১০:৫৯ পিএম
এ সময়ের ফুটবলারদের ট্যাটু একটি কমন বিষয়। নানা বাহারি ট্যাটু নজর কাড়ে দর্শকদের। এই ট্যাটুতে কেউ পান প্রশংসা, আবার কেউবা আপত্তি। ব্রাজিল স্টার রিশার্লিসন পেলেন দ্বিতীয়টিই। রিশার্লিসন যে ট্যাটু করেছেন সেটি পছন্দ হয়নি খোদ টিমমেট নেইমার জুনিয়রেরই! এ কারণে তাঁকে প্রায় ২৭ লক্ষ টাকা দিয়েছেন নেইমার সেই ট্যাটু মুছে ফেলতে। রিশার্লিসন আইডল মানেন রোনাল্ডো এবং নেইমারকেও। যে কারণেই ওই ট্যাটু তিনি আঁকিয়েছিলেন পিঠে।
রিশার্লিসনের পিঠে আঁকা সেই ট্যাটুতে নিজের মুখ ছাড়াও ব্রাজিলের দুই সুপারস্টার রোনাল্ডো নাজারিও এবং নেইমারেরও মুখ রয়েছে। সেই সাথে রয়েছে ব্রাজিলের পতাকা। সেই ট্যাটুটাই নেইমারের পছন্দ নয়। বিশেষ করে নিজের মুখ রিশার্লিসনের পিঠে পছন্দ হচ্ছে না নেইমরারের। সেই কারণে তিনি ট্যাটু থেকে নিজের মুখ মুছতে বলেছেন রিচার্লিসনকে। আর তাই ট্যাটু মোছার জন্য নেইমার প্রায় ২৭ লক্ষ টাকাও দিয়েছেন।
আসলে নেইমার জুনিয়রকে অনুপ্রেরণা বা আইডল মনে করেন রিশার্লিসন। যে কারণে ভালবাসার প্রকাশ ঘটাতে নেইমারের ট্যাটু তিনি করিয়েছেন। এ ছাড়া সার্বিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচের পর তাঁর আদর্শ রোনাল্ডো নাজারিওর সাথে দেখা করার সুযোগ পেয়েছেন রোনাল্ডো। তাঁকে সেই দেখায় পিজিয়ন ডান্সও শিখিয়ে দিয়েছেন রিশার্লিসন।
এক জনপ্রিয় ট্যাটু শিল্পীর হাতে রিশার্লিসনের সুঠাম শরীরে যেন জীবন্ত হয়ে উঠেছে ট্যাটুগুলি। তবে কাতার বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে হেরে ব্রাজিল ছিটকে যাওয়ার পরেই সতীর্থের ট্যাটুর উপর সব রাগ গিয়ে পড়েছে নেইমারের। যে কারণে তিনি রিশার্লিসনকে ট্যাটু থেকে নিজের মুখ মুছে ফেলতে বলেছেন। নেইমারের নিজের ওপর অভিমান ও কষ্ট এখন পাহাড়সমান।
প্রসঙ্গত, ২৫ বছর বয়সী রিশার্লিসন কাতার বিশ্বকাপে তিনটি গোল করেছেন। রিশার্লিসনের প্রতিভা এবং বিস্ময় গোলে মুগ্ধ হয়েছে ফুটবল বিশ্ব। দল ছিটকে গেলেও ২৫ বছরের রিশার্লিসনের কাছে অভিষেক বিশ্বকাপ স্মরণীয় হয়ে থাকবে চোখ ধাঁধানো গোল তিনটির জন্য। সেই সাথে সার্বিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচে বাইসাইকেল কিকে করা সেই অ্যাক্রোবেটিক গোলটি আলাদা করে জায়গা বানিয়ে নিয়েছে ফুটবল প্রেমীদের মনে। ওই ম্যাচে দুটি গোল হয়েছিল। দুটিই রিশার্লিসনের করা।
রিশার্লিসনের ছোটবেলা কেটেছে একবারে দারিদ্র্যের সাথে। বাবা ছিলেন রাজমিস্ত্রি। মা আইসক্রিম বিক্রি করে সংসারের খরচ চালাতেন। কখনও কখনও আইসক্রিম নিয়ে বেরিয়ে পড়তে হত বাড়ির বড় ছেলে রিশার্লিসনকেও। রিশার্লিসনরা পাঁচ ভাই-বোন। বড় হিসেবে তাঁর উপরে বাড়তি দায়িত্ব ছিল বরাবরই। তাঁর মাঝেও ফুটবল খেলার স্বপ্নটা ভেসে যেতে দেননি রিশার্লিসন। যে কারণে কাতার বিশ্বকাপ সাক্ষী থেকেছে ব্রাজিলের তরুণ তুর্কির জাদুকরী খেলার। আগামি বিশ্বকাপেও যে তিনি আলো ছড়াবেন সেটি আগভাগেই জানান দিয়ে গেলেন যেন।