রুদ্ধশ্বাস ফাইনালে ফ্রান্সকে টাইব্রেকারে হারিয়ে জিতল আর্জেন্টিনা

ক্রীড়া ডেস্ক

ডিসেম্বর ১৯, ২০২২, ০৬:০১ এএম

রুদ্ধশ্বাস ফাইনালে ফ্রান্সকে টাইব্রেকারে হারিয়ে জিতল আর্জেন্টিনা

৩৬ বছরের বিশ্বকাপ ট্রফি খরা ঘুচিয়ে কাতার বিশ্বকাপ ২০২২ আসরে চ্যাম্পিয়ন হলো আর্জেন্টিনা। শ্বাসরুদ্ধকর এক ম্যাচ শেষে শিরোপা নিজেদের করে নিলো মেসির দল। কাতার বিশ্বকাপ ২০২২ যাত্রার প্রথম ম্যাচেই সৌদি আরবের কাছে হারের অঘটন। সেই থেকে শুরু হয়ে শিরোপা হাতে নিয়েই যাত্রার সমাপ্তি করলো আকাশি সাদারা।

বিশ্বজয়ের প্রত্যাশার চাপ নিয়ে ফাইনালে মাঠে নেমেছিল মেসির দল। সবারই স্বপ্ন ছিল মেসির অসাধারণ ক্যারিয়ারের দুর্দান্ত সমাপ্তি হোক ৩৬ বছরের শিরোপা খরা ঘোচানোর মধ্য দিয়ে।

জোড়া গোল করে নিজের কাজটা তিনি করেছেনও। কিন্তু রঙ জমা ম্যাচে কামব্যাকের গল্প লিখেছেন একজন ফ্রান্সম্যান কিলিয়ান এমবাপ্পে। তার হ্যাটট্রিকে ১২০ মিনিটের ম্যাচ ৩-৩ গোলের সমতায় শেষ হয়। টাইব্রেকারের লড়াইয়ে ফ্রান্সকে ৪-২ গোলে জিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে মেসির আর্জেন্টিনা।

কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামে ১২০ মিনিটের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই ৩-৩ গোলে সমতায় খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। ৪-২ গোলে জয় আসে আলবিসেলেস্তেদের।

আর্জেন্টিনার হয়ে টাইব্রেকারে গোল করেন লিওনেল মেসি, পাওলো দিবালা, লেয়ান্দ্রো পারেদেজ, গনজালো মনতিয়েল। 

অন্যদিকে ফ্রান্সের হয়ে কিলিয়ান এমবাপ্পে ও রন্দাল কোলো মুয়ানি সফল শট নিলেও কিংসলে কোমানের শট ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন এমিলিয়ানো মার্তিনেজ। আর ফ্রান্সের হয়ে করা তৃতীয় শটটিতে বাইরে মারে অহেলিয়া চুয়ামেনি। 

গনজালো মনতিয়েলের শট জালে জড়াতেই আর্জেন্টিনার উল্লাসে মেতে ওঠে স্টেডিয়াম। 

ম্যাচের অধিকাংশ সময় নিয়ন্ত্রণ করে আর্জেন্টিনা। ২৩ মিনিটে পেনাল্টি থেকে দলকে প্রথম লিড এনে দেন লিওনেল মেসি। ফ্রান্স তাদের বক্সে ডি মারিয়াকে ফাউল করায় পেনাল্টি পায় আলবিসেলেস্তেরা। এরপর ৩৬ মিনিটে দুর্দান্ত এক কাউন্টার অ্যাটাকে গোল করে রাশিয়া বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন্স ফ্রান্সকে একপ্রকার ম্যাচ থেকে ছিটকে দেন ডি মারিয়া।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেও ধাক্কা খাওয়া ফ্রান্স সুবিধা করতে পারেনি। ম্যাচের ৮০ মিনিটে কাঙ্খিত ব্রেক থ্রু পায় লেস ব্লুজরা। কোলো মুয়ানিকে ফাউল করেন আকাশি-সাদার ডিফেন্ডার নিকোলাস ওতামেন্ডি। পেনাল্টি থেকে বল জালে পাঠিয়ে দেন ফ্রান্সম্যান কিলিয়ান এমবাপ্পে। এক মিনিটের মধ্যেই দ্বিতীয় গোল করেন ২৩ বছরের তরুণ এমবাপ্পে। মার্কাস থুরামের পাস ধরে জোরের ওপর শটে জালে পাঠিয়ে দেন তিনি।

নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলা ওই ২-২ গোলের সমতায় শেষ হয়। অতিরিক্ত সময়ে গড়ায় ম্যাচ। সেখানেও আর্জেন্টিনার বাজিমাত। বদলি নেমে লাওতারো মার্টিনেজ একের পর গোল মিস করছিলেন। এর মধ্যে ত্রাতা হয়ে আসেন লিও মেসি। তিনি ১০৮ মিনিটে বক্সের মুখ থেকে নিজের নার্ভ ধরে রেখে দারুণ এক গোল করে দলকে ৩-২ গোলে এগিয়ে নেন।

আর্জেন্টিনা তখন শিরোপা ছোঁয়া দূরত্বে। লুসাইল স্টেডিয়ামের ভরা গ্যালারি গর্জে উঠেছে। মেসি তাদের আরও উল্লাসের ইঙ্গিত করেন। কিন্তু ফ্রান্স আবারও কামব্যাক করে। শেষ বাঁশির পাঁচ মিনিট আগে আবার গোল করেন এমবাপ্পে। তার শট বক্সে থাকা আর্জেন্টাইন খেলোয়াড়ের হাতে লাগায় পেনাল্টি পায় ফ্রান্স। গোল করতে ভুল করেননি তিনি। ১৯৬৬ বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের জিওফ হার্স্টের পরে ফাইনালে হ্যাটট্রিক করে রেকর্ড গড়েন। ম্যাচ ৩-৩ গোলের সমতায় শেষ করেন।

Link copied!