ডিসেম্বর ২৯, ২০২১, ০৩:৪৭ এএম
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এবং এর সাবেক ও বর্তমান ৭ কর্মকর্তার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় প্রয়োজনে মার্কিন ল ফার্মকে সম্পৃক্ত করার চিন্তা করছে বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার এক আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক শেষে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ‘লিহে আইন’নিয়ে ডাকা এ বৈঠকে পররাষ্ট্রসচিবের সভাপতিত্বে আইন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধানেরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের দূতাবাসের মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ করছি, যাতে এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়।
নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু শর্ত রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের কোনও আইনি প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করা যায় কিনা, সেটি আমরা দেখছি।’
র্যাবের বিষয়ে যে বিভিন্ন প্রশ্ন রয়েছে, সেগুলোর জবাব যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ বা প্রতিষ্ঠানের কাছে দেওয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান।
উল্লেখ্য, গত ১০ ডিসেম্বর র্যাব এবং এই সংস্থার সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র।
এছাড়া বাংলাদেশের সামরিক খাতে যুক্তরাষ্ট্রের অনুদান পেতে দেশটির আইন মেনে নিতে হবে বাংলাদেশকে। মার্কিন সামরিক সহায়তা পেতে এ বিষয়ে বাংলাদেশও নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছে জানিয়ে পররাষ্ট্র সচিব জানান, এ বিষয়ে কিছু শর্ত জুড়ে দিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য তথ্যের উৎস জানতে চাইবে ঢাকা।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র যখন কোনো অভিযোগ করে, তখন তারা বলে তাদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য তথ্য রয়েছে। সেই তথ্যের উৎস এখন থেকে জানতে চাইবে ঢাকা, যাতে উৎস কতটুকু বিশ্বাসযোগ্য, তা নিরূপণ করা যায়।
যুক্তরাষ্ট্রে লিহে আইন নামে ১৯৬১ সালের একটি আইন রয়েছে। এ আইন অনুযায়ী, কোনো দেশকে সামরিক খাতে সহযোগিতা করলে তার পূর্ণাঙ্গ তথ্য সেই দেশকে দিতে হবে। ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে এ আইন যুক্তরাষ্ট্রে কার্যকর হবে।
লিহে আইন-এ যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে যুক্ত করতে চায় জানিয়ে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করা হচ্ছে। এর আগে একটি বৈঠক হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা খাতে যে সহযোগিতাগুলো রয়েছে, ভবিষ্যতে কীভাবে এ সহযোগিতা ব্যবহৃত হবে, বাংলাদেশ কোথায় এ অর্থ ব্যবহার করবে—এগুলোই এর মূল বিষয়। এ অর্থ ব্যবহারের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের যদি কোনো সমস্যা থাকে, তাহলে আগেই জানিয়ে দেবে। এগুলোই এ আইনে রয়েছে।
আইনটি যাচাই করে দেখা হচ্ছে জানিয়ে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, এর সঙ্গে যুক্ত থাকলে বাংলাদেশের কী লাভ, সেই সঙ্গে বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মৌলিক যে নীতিগুলো রয়েছে, সেগুলোর সঙ্গে এটি সাংঘর্ষিক কি-না, তা পর্যালোচনা করে দেখা হচ্ছে।