জানুয়ারি ৭, ২০২২, ০৩:৪৫ পিএম
হাজার বছরের লোকগল্প-উপকথা নিয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে সুবিখ্যাত সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ পাহাড়। কথিত আছে স্বয়ং রাম-সীতা এসেছিলেন মহামুনি ভার্গবের চন্দ্রনাথের আশ্রমে। সাধু-সন্নাসীসহ হিন্দু সম্প্রদায়ের ভক্ত অনুরাগীদের অন্যতম তীর্থ স্থান এটি।
অপরূপ নৈসর্গিক সৌন্দর্যে প্রকৃতি যেন আপন ছন্দে সাদর অভ্যর্থনা জানাচ্ছে ঘুরতে আসা পর্যটক ও তীর্থযাত্রীদের। শীতের ঝিরি ঝিরি হিমেল বাতাসে ফুসফুস যখন বিশুদ্ধ বাতাস নিতে ব্যস্ত ,ঘুরতে ঘুরতে আসা পর্যটকদের হৈ হুল্লুরের মাঝেই চোখে পরলো প্লাস্টিকের স্তূপে ভরে যাওয়া পাহাড়ের যতো খাদ।
উপরে অপূর্ব নৈসর্গিক দৃশ্য। নীচে প্লাস্টিকের দূষণ। মহা উল্লাসে মানুষ আসছে পাহাড় দূষণে। কেউ ফেলছে সঙ্গে করে নিয়ে আসা প্লাস্টিকের বোতলে পানি কিংবা বেভারেজের বোতল আবার কেউ ফেলছে প্লাস্টিকের মোড়কে বিরিয়ানির প্যাকেট, পলিথিন।
এ নিয়ে নেই কারো বিশেষ মাথাব্যথা কিংবা প্রশাসনের কোনও উদ্যোগ। নেই সচেতনতা মূলক প্ল্যাকার্ডও।
ফলে হুমকির মুখে সেখানকার জীববৈচিত্র্যও। হামেশাই দেখা যায়, টুরিস্ট পর্যটকদের ফেলে যাওয়া ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্লাস্টিক খাচ্ছে বানর। প্লাস্টিক মানুষ হোক বা প্রাণী, সবার ক্ষেত্রেই ক্ষতিকর।
শহরের প্লাস্টিক প্যাকেটজাত খাবার, প্লাস্টিকের বোতল ও তৈজসপত্র সেই এলাকায় ঢুকেছে সমতলের পর্যটকদের হাত ধরে। এই প্লাস্টিক, পলিথিন ও অজৈব আবর্জনার পরিমাণ আরও বাড়বে যদি প্রশাসনের কোনো উদ্যোগ না থাকে।
বাংলাদেশের পর্যটন শিল্প জনপ্রিয়করণে সরকারের প্রকল্পগুলো শুনতে যতোটা আকর্ষণীয় বাস্তবে ততোটা নয়। এই প্রকল্পগুলোর কোনোটিতেই পরিবেশ বিজ্ঞানীদের মতামত প্রয়োগের কোনও জায়গা রাখা হয়নি।
নীতিমালা এবং এর প্রয়োগের অভাবে বাংলাদেশের শহরাঞ্চলের দূষণের প্রত্যক্ষদর্শী পাহড়ি অধিবাসীরাও। মানবিক দিক তো বটেই, বিজ্ঞানসম্মত চিন্তা থেকেও পাহাড়ে দূষণ ঠেকাতে নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে তড়িৎ কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়া সময়ের দাবী। যাতে, বাংলাদেশের পাহাড়ি অঞ্চলগুলোর সৌন্দর্য স্মৃতি না হয়ে যায়।