হুমায়ূন আহমেদ স্মরণে

হুমায়ূনের অজানা কিছু

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

জুলাই ১৯, ২০২৩, ০৩:০৪ পিএম

হুমায়ূনের অজানা কিছু

হুমায়ূন আহমেদের সব কথাই পাঠকের জানা, তবে কিছু কিছু অজানাও আছে।

হুমায়ুন আহমেদ ভূতে বিশ্বাস করতেন।

কুহক’ শব্দটি হুমায়ূন আহমেদের খুব প্রিয় ছিল। 

তিনি বলতেন, আমাদের জীবনটা সত্য নয়। এটা একটা মিস্ট্রি বা কুহক। বলতেন, আমরা শুধু আমাদের চোখের সামনের জগৎ নিয়ে ভাবি, অদেখা আরও কত জগৎ রয়েছে, সে সম্পর্কে ভাবনা নেই। আমাদের দেখা জগতে যেমন প্রাণী আছে, অদেখা জগতেও অদৃশ্য প্রাণী আছে।এই জগতে যেমন শরীরসর্বস্ব প্রাণী আছে, তেমনি অশরীরী প্রাণীও আছে। শরীরওয়ালা প্রাণীরা দিনের বেলায় কাজ করে, অশরীরী প্রাণীরা রাতের বলায় কাজ করে।

হুমায়ূন আহমেদ সবসময় ফুল হাতা শার্ট পরে ঘুমুতে যেতেন। ঘুমানোর পোশাক হিসেবে হুমায়ূনের পছন্দ ছিল নতুন শার্ট। নতুন শার্ট না থাকলে লন্ড্রি থেকে ইস্ত্রী করা পাটভাঙা শার্ট পরে ঘুমানো ছিল তার অভ্যাস।

হুমায়ূন আহমেদ সারাজীবনে মোট দুইটা গালি ব্যবহার করতেন। প্রথমটা হলো ফাজিল, দ্বিতীয়টি হলো ফাজিলের ফাজিল। মুদ্রাদোষ হিসেবে সর্বাধিক ব্যবহৃত বাক্যটি ছিল, “লজিক কী বলে?”

শীত গ্রীষ্ম সারাবছর তিনি গরম পানিতে গোসল করতেন।

হুমায়ূন আহমেদ একা একা কাঁদতেন। আবেগপ্রবণ কোনো লেখা লিখতে গেলে তাঁর চোখ ভিজে উঠত। কোনো মানুষের করুণ পরিণতি স্যারের চোখে জল আনত। নির্জন রাতে তাঁকে একা উদাস বসে থাকতে দেখেছি, চোখ থেকে জল গড়িয়ে পড়ছে।

হুমায়ূন আহমেদ জোরে জোরে কবিতা আবৃত্তি করতে ভালোবাসতেন। আবৃত্তির ক্ষেত্রে তার প্রিয় কবিতা ছিল জীবনানন্দ দাশের ‘ক্যাম্পে’ এবং রবার্ট ফ্রস্টের ‘স্টপিং বাই উডস অন আ স্নোয়ি ইভনিং’।  

হুমায়ুন আহমেদ, নুহাশ ও নিষাদ একই পাঞ্জাবি পরে ঈদের নামাজ পড়তে যেত।

হুমায়ূন আহমেদ মনে করতেন ‘নন্দিত নরকে’ তার এক্সপেরিমেন্টাল কাজ। তার লেখা পিওর উপন্যাস ‘জোছনা ও জননীর গল্প’।

মেট্রিক ও ইন্টারে বোর্ড স্ট্যান্ড করা ছাত্র হিসেবে তার কোন গর্ব বা অহংকার ছিল না। তিনি কখনো নামের পাশে ‘ডক্টর’ লিখতেন না।তবে ব্যক্তিগত জীবনে হুমায়ূন আহমেদ নিজের সততা ও নিজের লেখার ক্ষমতা নিয়ে প্রচণ্ড অহংকারী ছিলেন।

হুমায়ূন আহমেদের প্রকাশকরা হিসাব করে বের করেছেন, ‘হুমায়ূন আহমেদের প্রকাশিত এক একটা শব্দের বিক্রয়মূল্য পাঁচ হাজার পাঁচশ টাকা’।

কম্পোজ হওয়ার পর প্রতিটা পাণ্ডুলিপি তিনি নিজ হাতে কুচি কুচি করে ছিঁড়ে ফেলতেন।

লেট নাইনটিজের দিকে মুক্তি ক্লিনিকে হুমায়ূন আহমেদকে প্রচুর যেতে হয়েছে। ছিয়ানব্বই থেকে নিরানব্বইতে, প্রায়ই রোগিদের কাউন্সিলিং করতে তার যেতে হতো। লোকজন হিমু হয়ে গেছে, এমন লোকেদেরও ওই হাসপাতালে এনে ভর্তি করানো হতো।

তার বাসায় কোন লকার ছিল না। কোন তালা-চাবি ছিল না। উনি বাসা কোনদিন লক করে ঘুমাননি।

হুমায়ূন আহমেদ কারও প্রতি ক্ষোভ বা বিদ্বেষ প্রকাশ করতেন না। কেউ তাঁর বিরুদ্ধে কুৎসা করলে বা তাঁকে হেয় করে পরশ্রীকাতরতা প্রকাশ করলে তিনি তাকে মধুর শাস্তি দিতেন।

Link copied!