পিএসসির সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে চাকরি নিয়েছিলেন। এ ছাড়া ২০১৪ সালে নন-ক্যাডারের প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল তাকে। পিএসসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নন-ক্যাডারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ‘উপ-সহকারী প্রকৌশলী’ পদের লিখিত পরীক্ষায় ১ পরীক্ষার্থীর কাছে অবৈধভাবে সরবরাহ করা প্রশ্নের উত্তরসহ চারটি লিখিত উত্তরপত্র উদ্ধার করা হয়।
ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে করা মামলার তদন্তে সৈয়দ আবেদ আলীর সম্পৃক্ত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়। এ-পরিপ্রেক্ষিতে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
সূত্র প্রথম আলোকে জানায়, সৈয়দ আবেদ আলীর গ্রামের বাড়ি মাদারীপুরের ডাসার হলেও পিএসসিতে সচিবালয়ের গাড়িচালক পদে চাকরি নেওয়ার সময় স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে সিরাজগঞ্জ উল্লেখ করেছিলেন। এ ব্যাপারে পিএসসির প্রতিবেদনে বলা হয়, চাকরি থেকে বরখাস্তের চিঠি সৈয়দ আবেদ আলীর উল্লেখিত স্থায়ী ঠিকানা সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের শ্রীফলতলা গ্রামে পাঠানো হয়।
আরও পড়ুন: ৫০ কোটি মূল্যের সম্পদের মালিক আবেদ, বাড়িতে ঢুকতে দিলেন না সাংবাদিককে
অভিযোগনামা ও অভিযোগ বিবরণী তার স্থায়ী ঠিকানায় পাঠানো হয়। ডাক স্থায়ী ঠিকানায় চিঠি নিতে কাউকে না পেয়ে অভিযোগনামা ও অভিযোগ বিবরণীটি পিএসসিতে ফেরত পাঠায়। একইভাবে সাময়িক বরখাস্তের আদেশটিও ফেরত আসে।
পরে তার স্থায়ী ঠিকানার সত্যতা যাচাই করে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক পিএসসিকে জানান, তার স্থায়ী ঠিকানাটি সঠিক নয় ও সৈয়দ আবেদ আলী ভুয়া স্থায়ী ঠিকানায় চাকরি নিয়েছেন। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে অপর একটি বিভাগীয় মামলা চলছে।
স্থানীয় সূত্র অনুযায়ী আবেদ আলী নিজ গ্রামে প্রায় ৬ কোটি টাকা খরচ করে বিলাসবহুল ‘ডুপ্লেক্স’ বাড়ি নির্মাণ করেছেন। বাড়ির পাশে করেছেন মসজিদ। মাদারীপুরে গরুর খামার ও বিপণিবিতান নির্মাণ করছেন, যার একাংশ সরকারি জমিতে বলে অভিযোগ রয়েছে।
আবেদ আলীর গ্রামের সূত্র প্রথম আলোকে জানায়, মাত্র ৮ বছর বয়সে জীবিকার তাগিদে ঢাকায় যান তিনি। সেখানে কুলির কাজ করতেন। এরপর গাড়ি চালানো শিখে পিএসসিতে চাকরি নেন।
আবেদ আলীর নিজ উপজেলা ডাসারের চেয়ারম্যান হওয়ার মনোবাঞ্ছা রয়েছে। নির্বাচনের তফসিল না হতেই এখানে প্রার্থী হতে দীর্ঘ দিন প্রচার চালিয়ে আসছেন তিনি। এ ছাড়া প্রভাবশালী ও বিত্তবানদের সঙ্গেও বিভিন্ন সময় তাকে দেখা গেছে বলেও জানান স্থানীয়রা।