সেপ্টেম্বর ১, ২০২১, ০৮:২৬ পিএম
দলীয় পরিস্থিতির উন্নতির জন্য দ্রুত রাজনৈতিক কোন্দল দূর করতে মরিয়া বিএনপি। এদিকে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য রাষ্ট্রপতিকে সুস্পষ্ট প্রস্তাবনা দেয়ারও পরিকল্পনা নেয়া হয়। এরই প্রেক্ষিতে দলে ইতোমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে বলে জানায় বিএনপির নেতারা। দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কোন্দল দূর করতে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে বলে জানায় তারা।
স্বচ্ছ নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির কাছে যাবে বিএনপি
বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে ব্যর্থ বলে আসছে বিএনপি। দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানুষ কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারেনি বলে বিএনপির এই অবস্থা হয়েছে বলে জানায় নেতারা। তাই কয়েক মাস পর নতুন যে কমিশন গঠন হবে, সে ব্যাপারে সুস্পষ্ট প্রস্তাবনা তুলে ধরে রাষ্ট্রপতিকে চিঠি দেবে বিএনপি। কেননা এবারও সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন নিয়োগ দেয়া হবে।এতে ইসি গঠন প্রক্রিয়া এবং কেমন ব্যক্তিদের দিয়ে তা গঠন করা উচিত- সে বিষয়ে দলের অবস্থান তুলে ধরা হবে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। নতুন কমিশনের বিষয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা শুরু হওয়ার পর সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নতুন নির্বাচন কমিশন ইস্যুটি অনানুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে দলের কয়েকজন নীতিনির্ধারক নির্বাচন বিশেজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলেন।
শুধু রাষ্ট্রপতিই নয় নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন ইস্যুতে ২০-দলীয় জোট, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টসহ জোটের বাইরের বিরোধী রাজনৈতিক দলের কাছেও চিঠি দেবে বিএনপি। এই একটি ইস্যুতে সবাইকে এক টেবিলে এনে কমন প্রস্তাব দিতে চায় দলটি। বর্তমান নির্বাচন কমিশন গঠনের আগে ২০ দলীয় জোটের নিবন্ধিত দলগুলোকে কমন নির্বাচন কমিশনের জন্য কমন নাম দিতে বলা হয়েছিল।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা আগেও বলেছি- বর্তমান নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণ ব্যর্থ। যদি আগের পদ্ধতি অনুসরণ করে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়, আমাদের কাছে তা গ্রহণযোগ্য হবে না। আমরা চিন্তা করছি, সময়মতো রাষ্ট্রপতিকে আমাদের প্রস্তাব দেব।
সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ দেন। তবে রাষ্ট্রপতিকে সংবিধানের ৪৮(৩) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পরামর্শ করে নিয়োগ দিতে হয়।
দৃশ্যমান কোন্দল চায় না বিএনপি
দলগুছাতে ঢাকা থেকেই কোন্দল ও অন্যান্য সমস্যা নির্মূল করতে চায় বিএনপি। ওয়ান-ইলেভেনের পর কয়েক দফা ঢাকা মহানগরের কমিটি করা হলেও তাদের কেউ সফল হতে পারেননি। এর মূলে রয়েছে অনভিজ্ঞ নেতৃত্ব নির্বাচন, কোন্দল ও সমন্বয়ের অভাব। এবারও সেসব সমস্যা বিদ্যমান রেখেই কমিটি করা হয়েছে। মহানগরের রাজনীতি ফ্যাক্টর হিসেবে ধরা হয় এমন কয়েকজন প্রভাবশালী নেতাকে কমিটিতে রাখা হয়নি। মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম ছাড়া যারা কমিটিতে আছেন তাদের অনেকের মহানগর বিএনপির রাজনীতিতে অনভিজ্ঞ। এ কারণে কোন্দল নিরসন করে সংগঠন গোছাতে তাদের নানা বাধার সম্মুখীন হতে হবে। তবে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কঠোর নির্দেশনায় দৃশ্যমান কোনো ক্ষোভ প্রকাশ্যে আসেনি।
আন্দোলনের ফর্মূলা জানা নেই
দলগুছান ও নির্বাচন কমিশন গঠনে জোর প্রদান করার পরপরই আন্দোলন করার জন্য প্রস্তুতি নিবে বিএনপি। গণতন্ত্র পুণরুদ্ধারই এই আন্দোলনের লক্ষ থাকলেও ঠিক কোন উপায়ে আন্দোলন করবে এর সঠিক ধারণা দিতে পারেনি কেউ।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল আলমগীর দ্য রিপোর্টকে জানান, বাংলাদেশে এখন গণতন্ত্র নেই। বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম রাজনৈতিক দল হিসেবে গণতন্ত্র পুণরুদ্ধারই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।
আন্দোলনের কোন নতুন কর্মকৌশল আছে কিনা প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান, রাজনৈতিক আন্দোলনের মাধ্যমেই আমরা আমাদের লক্ষ্যে পৌছাবো।