জুলাই ২, ২০২৩, ০৬:৫৭ পিএম
মার্কিন দাতব্য সংস্থা এ্যাকশন এইড বলেছে বাংলাদেশ জলবায়ু বিপর্যয়, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, কোভিড-১৯, ঋণের চাপ এবং মুদ্রার অবমূল্যায়ন থেকে শুরু করে একাধিক সংকটে রয়েছে।
এ্যাকশন এইড পরিচালিত এক সমীক্ষায় বলা হয় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বাংলাদেশে সারের দাম ১০৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়াও চিনির দাম ৬০ শতাংশ, পেট্রোলের দাম ৪৭ শতাংশ ও স্যানিটারি প্যাডের মূল্য ২৩ শতাংশ বেড়েছে।
সমীক্ষায় বলা হয় বাংলাদেশে জীবনযাত্রার ব্যয় অনেকগুলো প্যারামিটারে বেড়ে যাওয়ায় প্রান্তিক জনগোষ্ঠী সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলস্বরূপ, দেশের জনগণ একাধিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। বিশেষ করে নারী ও শিশুদের ক্ষেত্রে শিক্ষা, পুষ্টি ও স্বাস্থ্যসেবার মতো জরুরি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আপোষ করতে হচ্ছে।
সমীক্ষা পাওয়া তথ্যে বলা হয়, বাংলাদেশসহ ১৪টি দেশের প্রতি ১০ জন মেয়ে ও ছেলে শিক্ষার্থীর মধ্যে ঝরে পড়ার হার আশংকাজনক পর্যায়ে বেড়েছে। পরিস্থিতির কারণে সৃষ্ট চাপে বাল্যবিবাহের হারও বেড়ে গেছে।
সমীক্ষায় উল্লেখ করা হয় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর আগের মাসে বিরাজিত দ্রব্যমূল্যের সাথে তুলনা করে দামের বর্তমান পরিস্থিতি ও এর প্রভাব তুলে আনা হয়েছে।
সমীক্ষা চলাকালীন বাংলাদেশের সুনামগঞ্জ জেলার একজন এ্যাকশন এইডকে বলেন, “বেঁচে থাকার জন্য খাদ্য নিরাপত্তার চেয়ে শিক্ষা অনেক কম গুরুত্বপূর্ণ। ছেলে শিশুকে পাথর কোয়ারীতে বা জাদুকাটা নদীতে দিনপ্রতি ৩০০ টাকা মজুরিতে বালু সংগ্রহের কাজ করতে হয়। এ কারণে তারা স্কুলে যেতে পারে না।”
সংস্থাটির কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির বলেন, জ্বালানির দামে অস্থিরতা সব ক্ষেত্রেই সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলেছে। বিশেষ করে খাদ্যের উপর যা নারী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করে।
তিনি বলেন, দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে চাল এবং ডিমের মতো খাদ্যসামগ্রীর জন্য এখন দ্বিগুণ মূল্য দিতে হয়। যার ফলে খাদ্যগ্রহণ হ্রাস ও পুষ্টির ভারসাম্যহীনতা তৈরি হয়েছে।
এশিয়া, আফ্রিকা ও ক্যারিবিয়ান জুড়ে ১৪টি দেশের ১ হাজার ১০ জন মানুষের মধ্যে পরিচালিত এ সমীক্ষায় ৬৩ শতাংশই ছিলেন নারী অংশগ্রহণকারী। পহেলা মার্চ থেকে ২৩ এপ্রিল সময়ে এ সমীক্ষা পরিচালনা করা হয় বলে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ ছাড়া অন্য দেশগুলো হলো- আফগানিস্তান, কঙ্গো, ইথিওপিয়া, হাইতি, কেনিয়া, মালাউই, নেপাল, মিয়ানমার, নাইজেরিয়া, সিয়েরা লিওন, সোমালিল্যান্ড, জাম্বিয়া ও জিম্বাবুয়ে।
সমীক্ষায় বলা হয় উচ্চমূল্য পরিস্থিতির কারণে এসব দেশে খাদ্য ও জ্বালানি সংকট দেখা দিয়েছে।