জাকসু নির্বাচন

ভোটগ্রহণ চলছে, সকালে ভোটার কম

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৫, ১২:১০ পিএম

ভোটগ্রহণ চলছে, সকালে ভোটার কম

ছবি: সংগৃহীত

৩৩ বছর পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর সকাল নয়টার কিছু পরেই ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে, চলবে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত।

সকাল আটটা থেকেই রিটার্নিং কর্মকর্তা ও নির্বাচনসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা কেন্দ্রগুলোয় প্রস্তুতি নেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে পুলিশ ও আনসার সদস্যদের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। পরে তারা বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ফটক ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থান নেন।

আজ সকালেই ভোট দিয়েছেন কাজী নজরুল ইসলাম হলের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের (৫১তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী এস এম হামিদ হাসান। তিনি বলেন, ‘ভোট শুরুর প্রথম দিকেই এসে লাইনে দাঁড়িয়েছি। প্রায় ২০ মিনিট লাইনে দাঁড়ানোর পর ভোট দিতে পেরেছি।’

সকাল সাড়ে নয়টার দিকে আ ফ ম কামাল উদ্দিন হলে গিয়ে দেখা যায়, হলের কমনরুমে ভোট গ্রহণ চলছে। চার থেকে পাঁচজন সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছেন। তবে কেন্দ্রটিতে প্রার্থীদের কোনো পোলিং এজেন্ট দেখা যায়নি। ভোটারদের হাতের আঙুলে অমোচনীয় কালির দাগ দিয়ে দিচ্ছেন দায়িত্বরত কর্মকর্তারা।

সকাল ১০টায় হলে দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা শিবলী নোমান প্রথম আলোকে বলেন, সকাল নয়টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। সবাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিচ্ছেন। ইতিমধ্যে ১৯ জন ভোট দিয়েছেন। আপাতত উপস্থিতি কম হলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উপস্থিতি বাড়বে। ভোরে আমাদের জানানো হয় প্রার্থীদের পোলিং এজেন্ট থাকবে। কিন্তু তাঁরা কীভাবে থাকবেন, সে বিষয়ে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। নির্বাচনের এই প্রক্রিয়া নির্বাচনকে অগোছালো করে তুলেছে।

সকাল সোয়া নয়টার দিকে ঢাকা থেকে ক্যাম্পাসে এসেছেন শিক্ষার্থী শহীদ উজ জামান। তিনি বলেন, ‘বহুদিন পর জাকসুতে ভোট হচ্ছে। জাকসু শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের অন্যতম প্ল্যাটফর্ম। যারা ক্যাম্পাসের বাইরে থাকেন, তাদের সবারই উচিত ক্যাম্পাসে এসে ভোট দেওয়া।’

এদিকে নির্ধারিত সময়ের আধা ঘণ্টা পার হলেও ফজিলতুন্নেছা হলের ভোটকেন্দ্রে ভোট গ্রহণ শুরু হয়নি বলে জানা গেছে। হলের চারজন ছাত্রী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এ বিষয়ে জানতে ফজিলতুন্নেছা হলের ভোটকেন্দ্রের রিটার্নিং কর্মকর্তা আবু সাইফকে মুঠোফোনে কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

ক্যাম্পাসের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে ক্যাম্পাসে পুলিশ, আনসার, আর্মড পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দুই হাজারের বেশি সদস্য সাদাপোশাকে দায়িত্ব পালন করছেন।

জাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্য অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার প্রথম আলোকে বলেন, সুশৃঙ্খলভাবেই ভোটাররা তাদের ভোট দিচ্ছেন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিত স্বাভাবিক রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দুই হাজারের বেশি সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন।

জাকসুতে মোট ভোটার ১১ হাজার ৭৪৩ জন। এর মধ্যে ছাত্রী ৫ হাজার ৭২৮ এবং ছাত্র ৬ হাজার ১৫ জন। কেন্দ্রীয় সংসদে মোট ২৫টি পদে লড়ছেন ১৭৭ জন প্রার্থী। একই সঙ্গে ২১টি হল সংসদের নির্বাচনও অনুষ্ঠিত হবে। সহসভাপতি (ভিপি) পদে প্রার্থী ৯ জন। সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ৮ জন।

জাকসুতে মোট সাতটি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। এর মধ্যে চারটি পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ও তিনটি আংশিক প্যানেল রয়েছে। পূর্ণাঙ্গ প্যানেলগুলো হলো ছাত্রদলসমর্থিত প্যানেল, ছাত্রশিবিরসমর্থিত সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট, প্রগতিশীল শিক্ষার্থীদের সম্প্রীতির ঐক্য ও গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদসমর্থিত শিক্ষার্থী ঐক্য ফোরাম। আংশিক প্যানেল দিয়েছে স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলন, স্বতন্ত্র অঙ্গীকার পরিষদ এবং ছাত্র ইউনিয়ন ও ছাত্র ফ্রন্টের সংশপ্তক পর্ষদ। এ ছাড়া অনেকেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে লড়ছেন।

Link copied!