করোনাভাইরাস সংক্রমণের ৩ মাস পর ৭৮ শতাংশ, ৬ মাস পর ৭০ শতাংশ, ৯ মাস পর ৬৮ শতাংশ এবং ১২ মাস পর ৪৫ শতাংশের দেহে উপসর্গ বিদ্যমান থাকছে।তবে যারা উচ্চরক্তচাপ ও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, তাদের করোনা পরবর্তী উপসর্গের আশঙ্কা ২ থেকে ৩ গুণ পর্যন্ত বেশি।
সম্প্রতি এক গবেষণার প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) এই গবেষণা পরিচালনা করে। বৃহস্পতিবার প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে এ গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অনেক কোভিড-১৯ রোগী সংক্রমণ পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন উপসর্গে ভুগে থাকেন, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক কোভিড-১৯ পরবর্তী উপসর্গ (পোস্ট কোভিড কন্ডিশন) নামে অভিহিত করেছে। আইইডিসিআর পরিচালিত একটি গবেষণায় দেখা যায় যে উচ্চরক্তচাপে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে নিয়মিত ওষুধ সেবনকারীদের কোভিড-১৯ পরবর্তী উপসর্গে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা অনিয়মিত ওষুধ সেবনকারীদের তুলনায় প্রায় ৯ ভাগ পর্যন্ত কমে যায়।
একইভাবে, ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে নিয়মিত ওষুধ সেবনকারী কোভিড-১৯ পরবর্তী উপসর্গে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কায় যারা নিয়মিত ওষুধ সেবন করেন না, তাদের তুলনায় প্রায় সাত ভাগ পর্যন্ত কমে যায়।
উপসর্গযুক্ত কোভিড-১৯ রোগীদের উপসর্গ দেখা দেওয়ার ৩ মাস, ৬ মাস, ৯ মাস ও ১২ মাস অতিক্রান্ত হওয়ার পর যথাক্রমে ৭৮ শতাংশ, ৭০ শতাংশ, ৬৮ শতাংশ ও ৪৫ শতাংশের দেহে কোভিড-১৯ পরবর্তী উপসর্গ দেখা গেছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। আর এতে প্রতীয়মান হয় যে উচ্চরক্তচাপ ও ডায়াবেটিস রোগীদের কোভিড-৯৯ পরবর্তী উপসর্গে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমাতে রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন মোতাবেক নিয়মিত ওষুধ সেবন করা জরুরি।
আইইডিসিআর এর প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, চলমান গবেষণার মাধ্যমে ভবিষ্যতে কোভিড-১৯ পরবর্তী উপসর্গের ব্যাপারে আরও হালনাগাদ তথ্য পাওয়া যাবে। কোভিড-১৯ মহামারি প্রতিরোধে আইইডিসিআর সবাইকে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশাপাশি পূর্ণ ডোজ কোভিড-১৯ টিকা নেওয়ার আহ্বান জানায়।
বাংলাদেশে কোভিড-১৯ বিশ্ব মহামারির শুরু থেকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় আইইডিসিআর বিভিন্ন রোগতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ, মহামারি তদন্ত ও গবেষণা পরিচালনা করে আসছে।
যুক্তরাষ্ট্রের রোগনিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংস্থার (সিডিসি) সহযোগিতায় আইইডিসিআর কর্তৃক পরিচালিত ফিল্ড ইপিডেমিওলজি ট্রেনিং প্রোগ্রাম, বাংলাদেশের (এফইটিপি,বি) প্রশিক্ষণার্থীরা কোভিডে এ আক্রান্ত রোগীদের প্রাথমিক উপসর্গ পরবর্তী জটিলতাগুলো নিয়ে গবেষণা পরিচালনা করছেন।