চিকিৎসকদের দায়িত্ব পালনে উদাসীনতার বিষয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। দেশের সব চিকিৎসকের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘যেখানেই যাই, সেখানেই হাসপাতালে ডাক্তার থাকে না, শুনতে পাই। এগুলো তো ভালো কথা নয়।’
মঙ্গলবার (৫ মার্চ) রাজধানীর শাহবাগে অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় নিউরোলজি কনফারেন্সে চিকিৎসকদের ওপর এই ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। কনফারেন্সটি সোসাইটি অব নিউরো সার্জন্স অব বাংলাদেশের (এসএনবি) বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কনভেনশন হলে অনুষ্ঠিত হয়।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘চিকিৎসকদের নানা রকম সমস্যা ও প্রতিকূলতা যে আছে, তা আমি জানি। কিন্তু মানুষকে চিকিৎসা তো দিতে হবে। জাতীয় সংসদে গেলে সংসদ সদস্যরা আমাকে বলেন, তার এলাকায় চিকিৎসক থাকে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘উপজেলা হাসপাতালে যদি ডাক্তার থাকতে না চায়, তাহলে গ্রামের মানুষ কোথা থেকে ভালো চিকিৎসা পাবে? আমি বারবার বলেছি, চিকিৎসা খাতে সুনাম ফিরিয়ে আনতে হলে আমাদেরকে প্রত্যন্ত অঞ্চলে চিকিৎসাসেবা পৌঁছে দিতে হবে।’
অনুষ্ঠানে সামন্ত লাল বলেন, ‘প্রত্যন্ত অঞ্চলে চিকিৎসকদের কিছু অসুবিধা আছে, আমি জানি। এসব অসুবিধা আমি নোট করছি। প্রত্যন্ত অঞ্চলে যারা চিকিৎসাসেবা দিতে যাবে, তাদের জন্য কী কী ইনসেনটিভ রাখা যায়, সেগুলো নিয়ে আমি কাজ শুরু করেছি। আমি চিকিৎসকদের সুবিধা যেমন দেবো, চিকিৎসকদেরকেও রোগীদেরকে সেবা বুঝিয়ে দিতে হবে। চিকিৎসকেরা গ্রামে গিয়ে মানুষকে শুধু সেবা দিক, আমি তাদের সুযোগ-সুবিধাগুলো বাড়িয়ে দেবো।’
নিউরো চিকিৎসায় বাংলাদেশ এখন বিশ্বের যেকোনো দেশের তুলনায় কোনো অংশেই কম নয় উল্লেখ করে সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘গত ১০ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিউরো হাসপাতালকে ৩০০ শয্যা থেকে বাড়িয়ে ৫০০ শয্যায় নিয়ে এসেছেন। নিউরো হাসপাতালের সক্ষমতা এখন বিশ্বের যেকোনো উন্নত দেশের সঙ্গে তুলনার যোগ্য করে তুলেছেন। দিন দিন নিউরো রোগীদের বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ে পাওয়া যাচ্ছে। ওই সব রোগীদের যাতে কষ্ট করে ঢাকায় চিকিৎসা নিতে আসতে না হয়, সে জন্য আমরা বিভাগীয় পর্যায়ে নিউরো চিকিৎসা পৌঁছে দিতে উদ্যোগী হতে কাজ শুরু করছি।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা বলেন, চিকিৎসকদের উন্নত সেবা দিতে হলে ভালো মানের চিকিৎসাবিজ্ঞানের বই পড়তে হবে। চিকিৎসাসেবার মান বৃদ্ধিতে চিকিৎসকদের আরও কাজ করতে হবে, নতুন নতুন চিকিৎসা গবেষণায় মন দিতে হবে।