আপনি দিনে কত চামচ চিনি খান? কখনও কি হিসাব করে দেখেছেন? কেউই ভেবে দেখি না যে সারাদিনে আমরা কত চামচ চিনি খাই। অতিরিক্ত চিনি খাওয়ার ফলে হতে পারে বিভিন্ন রোগ।
যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বলছে, একজন ব্যক্তি দিনে যতটুকু ক্যালরি গ্রহণ করবে তার সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ পরিমাণ চিনি খাওয়া উচিত, এর বেশি নয়।
আবার বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা তা কমিয়ে ১০ থেকে পাঁচ শতাংশে নামিয়ে এনেছে।
একজন প্রাপ্তবয়স্ক, যার বডি ম্যাস ইনডেক্সের মাত্রা স্বাভাবিক, তার জন্য বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা বরাদ্দ দিয়েছে দিনে মাত্র ছয় চা-চামচ চিনি, অর্থাৎ প্রায় ২৫ গ্রাম। আর এই সবগুলো বিধি-নিষেধ ‘অ্যাডেড সুগার’য়ের জন্য প্রযোজ্য।
লন্ডনের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকদের মতে, প্রচুর পরিমাণে ‘ফ্রি সুগার’ যুক্ত খাবার খেলে হৃদ্রোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে। এই ধরনের শর্করা পাতে যত বেশি রাখবেন, ততই হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়বে।
যখন কোনও খাবারে চিনি দেওয়া হয়, তখন তাকে ‘ফ্রি সুগার’ বলে। প্রক্রিয়াজাত খাবার, প্যাকেটজাত ফলের রস, সিরাপ, মধুতেও ‘ফ্রি সুগার’ থাকে। তাই সাবধান। গবেষণাটি বিএমসি মেডিসিন জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষকরা ব্রিটেনের ১,১০,৪৯৭ জনের রিপোর্ট সংগ্রহ করেন প্রায় ৯ বছর ধরে। গবেষণায় অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের বয়স ৩৭ থেকে ৭৩ বছরের মধ্যে। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, যাঁরা প্রতিদিন প্রায় ৯৫ গ্রাম ‘ফ্রি সুগার’ খান, তাঁদের কার্ডিয়োভাসকুলার রোগের ঝুঁকি রয়েছে।
চিনি বেশি পরিমাণে শরীরে গেলে হাই অ্যাবডমিনাল ফ্যাট তৈরি হয়। ক্ষতিকারক কোলেস্টরল উৎপাদনের পরিমাণ বাড়ে। যেগুলি রক্ত চলাচলে সমস্যা তৈরি করে। ব্লাড জালিকায় রক্ত জমে। শরীরে রক্ত জমাটের আশঙ্কা তৈরি করে। প্রভাব পড়ে হৃদ্যন্ত্রের কার্যকলাপে। ডায়েটে অতিরিক্ত চিনি থাকলে রক্তচাপ বৃদ্ধি পায়। হাইপারটেনশনের প্রভাব পড়ে হৃৎপিণ্ডের স্বাভাবিক কার্যকলাপে। আগের তুলনায় দ্রুত রক্ত পাম্প করা শুরু করে হৃদ্যন্ত্র। ব্লাড ভেসেলের ক্ষতি হয়। বাড়ে স্ট্রোকের আশঙ্কা।