ক্রিসমাসে ঘোরাঘুরিতে দ্রুত ছড়াতে পারে ওমিক্রন

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

ডিসেম্বর ২০, ২০২১, ০২:৫৯ পিএম

ক্রিসমাসে ঘোরাঘুরিতে দ্রুত ছড়াতে পারে ওমিক্রন

দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম শনাক্ত হওয়া করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন বর্তমানে বিশ্বের অর্ধ শতাধিক দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। শুধু তাই নয় এই নতুন ধরন শনাক্তের পর যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানিসহ ইউরোপ ও আমেরিকার দেশগুলোতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্তের সংখ্যা প্রায় প্রতিদিনই বেড়ে চলেছে। যুক্তরাজ্যে প্রতিদিনই সংক্রমণের রেকর্ড হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের সপ্তাহজুড়ে দৈনিক সংক্রমণ দেড় লাখ ছাড়িয়ে যাচ্ছে।

ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, করোনাভাইরাসের এই ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ পরিস্থিতিতে  ঘরের দরজায় কড়া নাড়া  ক্রিসমাস উৎসবে ঘোরাঘুরিতে ‘ওমিক্রন’ ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ অতি দ্রুত ছড়াতে পারে। করোনাভাইরাসের দুই ডোজসহ বুস্টার ডোজ গ্রহণকারীরাও সংক্রমিত হতে পারেন- এমনটি আশঙ্কা্ করছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের  সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. অ্যান্থনি ফাউসি।

হোয়াইট হাউজের করোনা টাস্কফোর্সের অন্যতম এই সদস্য জোর দিয়ে বলেন, “ওমিক্রন দ্রুত ছড়ায় এই বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। এটি এখন বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে। আসছে ক্রিসমাসে ভ্রমণ বাড়ার ফলে ওমিক্রন ধরনও দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে।”

স্থানীয় সময় রবিবার (১৯ ডিসেম্বর) এনবিসি আয়োজিত ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ফাউসি এসব কথা বলেন।

ওই অনুষ্ঠানে অ্যান্থনি ফাউসি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রেও ওমিক্রনের দ্রুত বিস্তার ঘটছে, যা বিভিন্ন রাজ্যের স্বাস্থ্যসেবার ওপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের হাসপাতালগুলোতে করোনা মোকাবিলার পর্যাপ্ত প্রস্তুতিও নেই। ফলে সংক্রমণ বাড়লে তাদের খুব চাপের মধ্যে পড়তে হবে।”

স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, বিশেষ করে মাস্ক পরা এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার ওপর গুরুত্বারোপ করে এই মার্কিন বিশেষজ্ঞ আরও বলেন,“ করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকার পুরো ডোজ ও বুস্টার ডোজ নেওয়া এবং টিকার কোনো ডোজই না নেওয়াদের মধ্যে বড় ধরনের পার্থক্য রয়েছে। যারা টিকা এখনও নেননি,  তারা তীব্র  ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারেন।  তবে যারা বুস্টার ডোজ নিয়েছেন, অনেকটা সুরক্ষিত থাকলেও তাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।”

যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেন্টশনের (সিডিসি) তথ্যমতে, বর্তমানে ৭৩ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক পূর্ণ ডোজ টিকাগ্রহণ করেছেন। এর মধ্যে বুস্টার ডোজ নিয়েছেন ৩০ শতাংশ  লোক।

সিডিসির সর্বশেষ তথ্যমতে, যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে ৩ ভাগের দেহে ওমিক্রন পাওয়া গেছে। ওমিক্রন শনাক্তদের বেশিরভাগই নিউইয়র্কের বলেও জানায় সিডিসি।

মহামারি শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত ৫ কোটি ১৭ লাখের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৮ লাখ ২৭ হাজারের বেশি মানুষ।

করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ও প্রাণহানির পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডওমিটারের সবশেষ তথ্য অনুযায়ি, মৃত্যু ও শনাক্তের দিক দিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে সোমবার (২০ ডিসেম্বর) গত ২৪ ঘন্টায় ১০৯ জন মারা গেছেন। একই সময়ে করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ৬৬ হাজার ৭৫১ জন। দেশটিতে এ পর্যন্ত মোট ৮ লাখ ২৭ হাজার ৩২৩ জন মারা গেছেন।

Link copied!