তুরস্কের দাবি মেনে নিতে চলেছে সুইডেন। সন্ত্রাসবিরোধী আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধন আনছে সরকার।ন্যাটোর সেক্রেটারি জেনারেল স্টলটেনবার্গ জানিয়েছেন, ন্যাটোর সদস্য হওয়ার জন্য সুইডেন তুরস্কের চিন্তা দূর করতে তৈরি। সুইডেন বহু বছর ধরে নিরপেক্ষতার নীতি নিয়ে চলেছিল। তাই তারা ন্যাটোর সদস্য হয়নি। কিন্তু রাশিয়া যেভাবে ইউক্রেনে হামলা করেছে, তারপর সুইডেন ও ফিনল্যান্ড তাদের মতবদল করে ন্যাটোর সদস্য হতে চেয়েছে। বাধা এসেছে তুরস্কের কাছ থেকে।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান জানিয়ে দিয়েছেন, তুরস্ক ও ন্যাটো কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে)-কে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন বলে মনে করে। কিন্তু সুইডেন তা মনে করে না। সুইডেন তুরস্কের উপর অস্ত্র বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে রেখেছে। তাই সুইডেন ও ফিনল্যান্ড তাদের নীতি বদল না করলে তুরস্ক তাদের সদস্য হওয়ার আবেদনের ক্ষেত্রে ভেটো দেবে বলে জানিয়ে দিয়েছে।
ন্যাটোর নিয়মানুযায়ী, ৩০ জন সদস্যের সবাই একমত হলে অন্য কোনো দেশ সদস্য হতে পারবে। সুইডেন কী করছে? সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী অ্যান্ডারসন জানিয়েছেন, তার দেশ তুরস্কের আশঙ্কাকে খুবই গুরুত্ব দিচ্ছে। বিশেষ করে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রসঙ্গে। সুইডেন চায়, বিরোধের অবসান ঘটুক। তিনি জানিয়েছেন, সুইডেন ইতিমধ্যেই সন্ত্রাসবাদ-বিরোধী আইনে পরিবর্তন আনার কাজ শুরু করে দিয়েছে। তাই ভবিষ্যতে ন্যাটোর নিয়ম মেনেই অস্ত্র বিক্রি করা হবে।
এটা সুইডেনের নতুন সহযোগীদের জানিয়েও দেয়া হবে। স্টলটেনবার্গ জানিয়েছেন, তুরস্ক যে দুইটি আপত্তি করেছিল, তা মেটানোর চেষ্টা করছে সুইডেন ও ফিনল্যান্ড। বিষয়টি মিটে গেলে দ্রুত তাদের ন্যাটোর সদস্য করে নেয়া হবে।
এদিকে তুরস্কের চ্যালেঞ্জ স্টলটেনবার্গ এটা জানাননি, আগামী ২৮ জুন ন্যাটোর শীর্ষ সম্মেলনের আগেই বিষয়টি মিটে যাবে, না কি, আগামী ১১ সেপ্টেম্বর সুইডেনের পার্লামেন্টের নির্বাচনের পরে বিষয়টি মিটবে। তিনি জানিয়েছেন, ন্যাটোর সহযোগীরা সুইডেনকে সুরক্ষার প্রতিশ্রুতি দেবে। এটা সাধারণত পূর্ণ সদস্যদের দেয়া হয়। সুইডেন এতদিন ন্যাটোকে সাহায্য করলেও তা বাইরে থেকে করেছে।
ন্যাটোর ক্ষেত্রে বলা আছে, কোনো একটি সদস্য দেশ আক্রান্ত হলে, তা ন্যাটোর সদস্য সব দেশের উপর আক্রমণ বলে ধরে নিতে হবে। সুইডেন ন্যাটোর সদস্য হওয়ার আবেদন জানানোর পর এই সুরক্ষা পাবে। সুইডেন ও ফিনল্যান্ডকে এখন তুরস্কের চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করতে হবে। তারা সেই কাজ শুরু করেও দিয়েছে। স্টলটেনবার্গ বলেছেন, মাদ্রিদের শীর্ষ সম্মেলনের সময়সীমা সুইডেন ও ফিনল্যান্ডকে দেয়া হয়নি। ফলে সেই সময়সীমা মেনে তাদের কাজ করতে হবে এমন কোনো মানে নেই।