নভেম্বর ২৯, ২০২৩, ০১:২৭ পিএম
যুদ্ধবিরতির মধ্যেও অধিকৃত পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে ফিলিস্তিনিদের গ্রেফতার অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল।
হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী, ফিলিস্তিনের গাজায় গত শুক্রবার চার দিনের যুদ্ধবিরতি শুরু হয়, যা শেষ হওয়ার কথা ছিল গত সোমবার। এই মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই যুদ্ধবিরতি আরও দুই দিন বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হয়।
চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতির প্রথম ৪ দিনে ১৫০ ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেয় ইসরায়েল। তাঁদের মধ্যে ১১৭ জন শিশু ও ৩৩ জন নারী।
একই সময়ে হামাস ৬৯ জিম্মিকে মুক্তি দেয়। তাঁদের মধ্যে ৫১ জন ইসরায়েলি ও ১৮ জন অন্যান্য দেশের নাগরিক।
ইসরায়েলের হাতে বন্দী ফিলিস্তিনিদের প্রতিনিধিত্ব করে বেসরকারি সংগঠন প্যালেস্টাইন প্রিজনার্স সোসাইটি। সংগঠনটির তথ্যমতে, যুদ্ধবিরতির প্রথম ৪ দিনে পূর্ব জেরুজালেম ও পশ্চিম তীর থেকে অন্তত ১৩৩ ফিলিস্তিনিকে গ্রেফতার করেছে ইসরায়েল।
সোসাইটির মুখপাত্র আমানি সারাহনেহ আল-জাজিরাকে বলেন, যত দিন ইসরায়েলি দখলদারি থাকবে, তত দিন ফিলিস্তিনিদের গ্রেফতার বন্ধ হবে না। মানুষকে এই বিষয় অবশ্যই বুঝতে হবে। কারণ, এটি ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে দখলদারদের একটি কেন্দ্রীয় নীতি। এটি ফিলিস্তিনিদের যেকোনো ধরনের প্রতিরোধ আটকানোর একটি কৌশল।
আমানি সারাহনেহ আরও বলেন, ফিলিস্তিনিদের গ্রেফতার ইসরায়েল শুধু গত ৭ অক্টোবরের পর থেকেই করছে না। ফিলিস্তিনিদের গ্রেপ্তারের বিষয়টি ইসরায়েলের একটি দৈনন্দিন কাজ। যুদ্ধবিরতির প্রথম চার দিনে আরও বেশিসংখ্যক ফিলিস্তিনিকে গ্রেফতার করা হবে বলে তাঁরা ধারণা করেছিলেন।
৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস।
ইসরায়েলের ভাষ্যমতে, হামাসের এই হামলায় প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হন। এ ছাড়া দুই শতাধিক ব্যক্তিকে ইসরায়েল থেকে ধরে গাজায় নিয়ে জিম্মি করে হামাস।
জবাবে ৭ অক্টোবর থেকেই গাজাকে অবরুদ্ধ করে নির্বিচার বোমা হামলা শুরু করে ইসরায়েল। পাশাপাশি তারা গাজায় স্থল অভিযান চালিয়ে আসছিল।
গাজার হামাস সরকারের তথ্যানুযায়ী, অবরুদ্ধ উপত্যকায় ইসরায়েলের হামলায় প্রায় ১৫ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাঁদের বেশির ভাগই বেসামরিক লোকজন। নিহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে অন্তত ছয় হাজার শিশু রয়েছে।
গাজায় ইসরায়েলের টানা ৫১ দিনের হামলার পর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। এই যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতা করে কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্র।
যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুযায়ী, গাজায় হামলা চালাবে না ইসরায়েল। এ ছাড়া হামাস ও ইসরায়েল নিজেদের মধ্যে জিম্মি বন্দী বিনিময় করবে।