চীনে খামার থেকে ৭৫টি কুমির পালালো

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২৩, ১০:১৬ পিএম

চীনে খামার থেকে ৭৫টি কুমির পালালো

সংগৃহীত ছবি

চীনের দক্ষিণাঞ্চলে বন্যার পানিতে একটি বাণিজ্যিক খামার থেকে ৭৫টির বেশি কুমির পালিয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত মোট আটটি কুমিরকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তবে আকারে বড় এমন অনেকগুলোকেই এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তাই খামারের আশেপাশে থাকা গ্রামবাসীদের নিরাপত্তা বিবেচনায়  ওই অঞ্চলের বাসিন্দাদের বাইরে বের না হয়ে ঘরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

গুয়াংডং প্রদেশের মাওমিংয়ের একটি বাণিজ্যিক খামার থেকে কুমিরগুলো ভেসে গেছে। প্রাণীগুলো উদ্ধারে অভিযান শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ।

বন্যায় স্থানীয় একটি হ্রদ প্লাবিত হয়। এতে কুমিরগুলো পালিয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

শানডং–ভিত্তিক গণমাধ্যম হাই বাও নিউজ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, পেং কুন গ্রামের কাছে পানিতে অন্তত ৬৯টি প্রাপ্তবয়স্ক কুমির ও ৬টি বাচ্চা কুমির দেখা গেছে। স্থানীয় লোকজন বিষয়টি  স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

চীনা কর্তৃপক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পালিয়ে যাওয়া কুমিরের বেশ কয়েকটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। তবে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ‍‍`নিরাপত্তার কারণে‍‍` উদ্ধারকৃত বেশ কয়েকটি কুমিরকে গুলি করে বা বিদ্যুৎস্পৃষ্ট করে হত্যা করেছে।

টাইফুন হাইকুই এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে দক্ষিণ এশিয়ায় তাণ্ডব চালাচ্ছে। যার ফলে চীন, হংকং, তাইওয়ান, জাপান ইত্যাদি দেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, গভীর পানিতে কিছু কুমির অবস্থান করছে। কুমিরগুলোকে খুঁজে বের করার জন্য অত্যাধুনিক সোনার যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হচ্ছে।

রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদপত্র ডাজং ডেইলিতে জেলার জরুরি ব্যুরোর এক কর্মকর্তা বলেন, "বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে পালিয়ে যাওয়া কুমিরের পরিমাণ একটু বেশি।"

ওয়াশিংটন পোস্টের রিপোর্টে বলা হয়, পালিয়ে যাওয়া কুমিরগুলো সিয়ামিজ প্রজাতির। যুক্তরাজ্যের চিড়িয়াখানা ক্রোকোডাইলস অব দ্য ওয়ার্ল্ডের তথ্যমতে, প্রাপ্তবয়স্ক হলে এই কুমিরগুলো দৈর্ঘ্যে ৩ মিটার কিংবা ১০ ফিট পর্যন্ত হয়। আর এই কুমিরগুলো মিঠা পানিতে বসবাস করে।

এখন পর্যন্ত যেসব কুমিরগুলো উদ্ধার করা হয়েছে সেগুলোর গড় ওজন প্রায় ৭৫ কেজি। ফায়ারফাইটারদের তথ্যমতে, এগুলোর দৈর্ঘ্য ২ মিটারের চেয়েও বেশি।

গুয়াংডং প্রদেশের মাওমিং অঞ্চলে কুমির প্রজননের বেশ কয়েকটি ফার্ম রয়েছে। মূলত এর মাংস ও চামড়ার চাহিদার থাকায় এগুলো চাষ করা হয়।

তারা কুমির উদ্ধারে উন্নত প্রযুক্তির সরঞ্জাম ব্যবহার করছে। তবে চারদিকে বন্যার পানি থাকায় এ অভিযান বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ বাসিন্দাদের আপাতত বাইরে না বের হওয়ার অনুরোধ করেছে।

জরুরি উদ্ধারকারী বাহিনীর এক সদস্য বলেন, পরিস্থিতি অনুযায়ী কুমিরগুলোকে ধরার পরিবর্তে মেরে ফেলাও হতে পারে।

চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, কয়েকটি কুমির একটি রাস্তায় সংকেত-খুঁটির কাছে লুকিয়ে আছে। রাস্তাটি পানিতে নিমজ্জিত।

আরেকটি ভিডিওতে দেখা গেছে, বেশ কয়েকটি কুমিরকে ধরে সমতলে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। ওই সব কুমিরের মুখ ও অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বেঁধে রাখা হয়েছে।

গত সপ্তাহে চীনের দক্ষিণাঞ্চলে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় হাইকুই। এতে দক্ষিণ চীন ও হংকং প্লাবিত হওয়ায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

 

 

Link copied!