লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ইসরায়েলের ড্রোন হামলায় হামাসের উপপ্রধান সালেহ আল–আরোরি নিহত হয়েছেন। এ হামলায় হামাসের সামরিক শাখা কাসেম ব্রিগেডের দুজন কমান্ডারও নিহত হয়েছেন।
হামাস জানিয়েছে, বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলীয় উপশহর দাহিয়ে তাদের কার্যালয়ে বিস্ফোরণে সাতজন নিহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে উপপ্রধান সালেহ আল-আরোরিসহ ওই তিনজন রয়েছেন।
হামলার নিন্দা জানিয়েছে ইরান। লেবানন ইসরায়েলের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে অভিযোগ করার ঘোষণা দিয়েছে।
এই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছেন হামাসের নেতা ইসমাইল হানিয়ে। এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের হামলাকে কাপুরুষোচিত আখ্যায়িত করে তিনি বলেছেন, ইসরায়েল লেবাননের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করেছে ও চলমান সংঘাতকে আরও বাড়িয়ে তুলছে।
হামলার পর লেবাননের শিয়াপন্থী গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ এক বিবৃতিতে বলেছে, বৈরুত শহরের কেন্দ্রস্থলে সালেহ আল-আরোরি ও তাঁর সঙ্গীদের হত্যার অপরাধকে লেবানন এবং এর জনগণ নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব ও প্রতিরোধের বিরুদ্ধে একটি বিপজ্জনক আগ্রাসন বলে মনে করে। এই অপরাধের জন্য ‘প্রতিক্রিয়া ও সাজার’ মুখোমুখি হতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে গোষ্ঠীটি।
ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শাতায়েহ হামাস উপপ্রধান সালেহ আল-আরোরি হত্যার নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি এই হত্যাকাণ্ডকে ‘পরিচিত অপরাধীদের দ্বারা সংঘটিত অপরাধ’ বলে অভিহিত করেছেন।
ইসরায়েলের সেনাবাহিনী এই হামলার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। বাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হ্যাগারি বলেছেন, যেকোনো পরিস্থিতির জন্য তাঁর দেশের বাহিনীগুলো প্রস্তুত রয়েছে।
কে এই সালেহ আল-আরোরি
সালেহ আল-আরোরি হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর উপপ্রধান। তিনি এই গোষ্ঠীর সামরিক কর্মকাণ্ডেও গভীরভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর উপপ্রধান সালেহ আল-আরোরির বয়স ৫৭ বছর। তিনি হামাসের সামিরক শাখা কাসেম ব্রিগেডের প্রতিষ্ঠাতা কমান্ডার ছিলেন। ১৯৮৭ সালে তিনি হামাসে যোগ দিয়ে ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন। পশ্চিম তীরে গোষ্ঠীটির সামরিক উপস্থিতি প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করেন তিনি।
২০১১ সালে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর একজন কর্পোরালকে ছেড়ে দেওয়ার বিনিময়ে এক হাজার ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেওয়া হয়। ওই চুক্তির সঙ্গে জড়িত ছিলেন আল-আরোরি। ইরান ও লেবাননের হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর সঙ্গে তাঁর নিবিড় যোগাযোগ ছিল।