জুন ২৯, ২০২৫, ০৫:২৪ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে অবশ্যই ক্ষমতা থেকে বিদায় নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট। টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।
তবে নির্বাচনে আবারও অংশ নিয়ে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কোনো ইচ্ছা তার আছে কি না, সে বিষয়ে সরাসরি কিছু বলেননি বেনেট।
ইসরায়েলের চ্যানেল টুয়েলভকে ওই সাক্ষাৎকার দিয়েছেন বেনেট। গতকাল শনিবার এ সাক্ষাৎকার প্রচার করা হয়। বেনেট বলেন, ‘নেতানিয়াহু ২০ বছর ধরে ক্ষমতায় আছেন...এটা খুব বেশি হয়ে গেছে, এটা ভালো কিছু নয়।’
বেনেটের মতে, ইসরায়েলি সমাজে যে বিভক্তি দেখা দিয়েছে, তার বড় দায় নেতানিয়াহুর ওপরই পড়ে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও ডানপন্থী এই নেতা বলেন, ‘নেতানিয়াহুকে বিদায় নিতে হবে।’
নেতানিয়াহুর একদিকে যেমন শক্ত সমর্থকগোষ্ঠী আছে, তেমন অনেক কঠোর সমালোচকও আছেন। এই সমালোচকেরা ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ পরিচালনায় নেতানিয়াহুর ভূমিকার বিরুদ্ধেও আওয়াজ তুলেছেন।
২০২১ সালে বেনেট নেতানিয়াহুবিরোধী বিভিন্ন দলের সঙ্গে জোট গড়ে ক্ষমতায় আসেন। এর মধ্য দিয়ে তখন নেতানিয়াহুর টানা ১২ বছরের শাসনের অবসান হয়।
তবে বেনেট বর্তমান বিরোধী নেতা ইয়ার লাপিদের সঙ্গে যে জোট সরকার গড়েছিলেন, তা প্রায় এক বছরেই ভেঙে পড়ে। এরপর আগাম নির্বাচন হয়, আর কট্টর ডানপন্থী ও ইহুদি দলগুলোর সমর্থনে নেতানিয়াহু আবারও প্রধানমন্ত্রী হন।
রাজনীতি থেকে কিছুটা বিরতি নেওয়া বেনেটের ফিরে আসার গুঞ্জন এখন জোরালো হয়ে উঠেছে। জনমত জরিপ বলছে, তিনি চাইলে আবারও নেতানিয়াহুকে পরাজিত করার মতো সমর্থন পেতে পারেন।
তবে ২০২৬ সালের শেষভাগের আগে কোনো নির্বাচন হওয়ার পরিকল্পনা নেই। যদিও ইসরায়েলে আগাম নির্বাচন হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়।
সাক্ষাৎকারে বেনেট দাবি করেছেন, ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনার ওপর যে হামলা হয়েছে, সে পরিকল্পনার ভিত্তিটা তিনিই তৈরি করে দিয়েছেন।
বেনেট আরও বলেন, ইরানের বিরুদ্ধে এই হামলার সিদ্ধান্তটি খুবই ভালো হয়েছে এবং তা দরকার ছিল। বেনেটের দাবি, তার নেতৃত্বাধীন স্বল্পস্থায়ী সরকার আগে থেকেই প্রস্তুতি না নিয়ে রাখলে এ হামলা সম্ভব হতো না।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস হামলা চালায়। এর জবাবে সেদিন থেকেই গাজায় তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল।
সাক্ষাৎকারে গাজা প্রসঙ্গেও কথা বলেন বেনেট। তার মতে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এ ক্ষেত্রে অসাধারণ নৈপুণ্য দেখিয়েছে। তবে দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থাপনার অবস্থা বিপর্যয়কর।
নেতানিয়াহু সরকারের ‘সিদ্ধান্তহীনতার’ সমালোচনা করেন বেনেট। তিনি মনে করেন, গাজায় হামাসের কাছে যারা এখনো জিম্মি আছেন, তাদের মুক্ত করতে অবিলম্বে ‘সমন্বিত’ চুক্তি করা প্রয়োজন।
নেতানিয়াহুকে ইঙ্গিত করে বেনেট বলেন, ‘হামাসকে নির্মূল করার দায়িত্ব ভবিষ্যতের কোনো সরকারের ওপর ছেড়ে দিন।’
তবে বেনেট নিজে নির্বাচনে অংশ নেবেন কি না, এ–সম্পর্কিত কয়েকটি প্রশ্ন এড়িয়ে গেছেন।